নিজস্ব প্রতিবেদক:
করোনা ভাইরাসের বিস্তাররোধে রাজশাহীতে চলমান লকডাউনের ওপর আরও কড়াকড়ি আরোপ করেছে জেলা প্রশাসন। আগামীকাল সোমবার (০৭ জুন) বিকেল ৫টা থেকে রাজশাহীতে দোকানপাট বন্ধ থাকবে। সন্ধ্যা সাতটার পরিবর্তে এবার বিকেল ৫টা থেকেই অতি জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত বাড়ির বাইরে যাওয়া যাবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এর পাশাপাশি রাজশাহীতে সকাল ৬টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত দোকানপাট খোলা থাকবে বলে জানানো হয়।
আজ রোববার বিকাল ৩ টা থেকে ৫টা পর্যন্ত রাজশাহী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে করোনা সংক্রান্ত জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব সিদ্ধান্তের বিষয় জানান করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ ও মোকাবিলা কমিটির (সিটি কর্পোরেশন পর্যায়) সভাপতি ও সিটি মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিলের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন, রাাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন,বিভাগীয় কমিশনার হুমায়ুন কবীর, ডিআইজি আব্দুল বাতেন, পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক, পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন, সিভিল সার্জন ডা. কাইয়ুম তালুকদার, রাজমাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌসসহ প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের শীর্ষ কর্তাব্যক্তি সহ ১৪ দলের রাজনৈতিক নেতারা।
সভায় পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার, মৃত্যু হার, রাজশাহী মেডিকেল কলেজের চিকিৎসা সক্ষমতা নিয়ে আলোচনা হয়। পরে মন্ত্রী পরিষদ ঘোষিত চলমান লকডাউন ও স্থানীয় প্রশাসনের জুড়ে দেয়া বিধিনিষেধ শতভাগ কার্যকরী করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এদিকে, সীমান্তবর্তী জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জের পর এবার করোনায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বিভাগীয় শহর রাজশাহী। প্রতিদিনই বাড়ছে সংক্রমণ, করোনা শনাক্তের হার প্রায় ৫০ শতাংশের কাছে।
এমন উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে করোনা মোকাবিলায় নিম্ন আয়ের মানুষকে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে রাজশাহীতে ‘কঠোর লকডাউন’ দেওয়ার দাবিতে শনিবার (৫ জুন) বিকেলে রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিলের কাছে স্মারকলিপি দেন ১৪ দলীয় জোটের রাজশাহীর নেতারা।
এতে রাজশাহীতে ভয়াবহ করোনার উচ্চ সংক্রমণ ঠেকাতে জনগণের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করে জেলা প্রশাসককে ‘কঠোর লকডাউন’ ঘোষণা করতে আহ্বান জানানো হয়। এ নিয়ে বিকেলে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে সঙ্গে আলোচনায় বসেন ১৪ দলের নেতারা। তারা কেবল রাতের বেলায় রাজশাহীতে বিধিনিষেধ জারিকে অপর্যাপ্ত বলে উল্লেখ করেন এবং সম্পূর্ণ লকডাউনের জন্য জেলা প্রশাসককে অনুরোধ জানান।
জবাবে জেলা প্রশাসক বলেন, নগর পুলিশ ও সিটি মেয়র যদি রাজি থাকেন এবং কঠোর লকডাউন কার্যকরে ভূমিকা রাখেন তাহলে লকডাউন দিতে তার কোনো আপত্তি নেই।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক আরও বলেন, কঠোর লকডাউন দিলে ১৫ হাজার রিকশাচালক, ১ লাখ বস্তিবাসীর দায়িত্ব কে নেবে? ২০০০ কোটি টাকার আম ব্যবসার কী হবে? তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া কীভাবে সম্ভব? কঠোর লকডাউন দিতে হলে কাঁচাবাজারসহ সবই বন্ধ করতে হবে। এছাড়া সম্পূর্ণ লকডাউন সম্ভব নয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।
১৪ দলের নেতারা সম্মিলিত উদ্যোগের কথা বললে জেলা প্রশাসক সমন্বয় সভার প্রস্তাব দেন। সেই অনুযায়ী রোববার (৬ জুন) বেলা ৩টায় সিটি মেয়র, সংসদ সদস্য, ডিসি, পুলিশ কমিশনার, এসপি, সিভিল সার্জন ও ১৪ দলের নেতাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপরোক্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
স/অ