রাজশাহীতে অপহৃত মেয়েকে উদ্ধার করতে মায়ের আকুতি, নিষ্ক্রিয় পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক :

রাজশাহীতে অপহরণের এক ছাত্রীকে উদ্ধারের ক্ষেত্রে পুলিশ নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাই অপহরণের নয় দিন পার হলেও ১৭ বছর বয়সী ওই ছাত্রী উদ্ধার হয়নি। এ অবস্থায় মেয়েকে উদ্ধারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আকুতি জানিয়ে ওই ছাত্রীর মা বলেছেন, আমার মেয়ে নয়দিন হলো অপহরণ হয়েছে। জানিনা সে কেমন আছে। আমি সাহায্য ভিক্ষা চাচ্ছি।

ওই ছাত্রী এ বছর এসএসসি পাস করেছে। সে তার পরিবারের সঙ্গে রাজশাহী মহানগরীর ছোটবনগ্রাম প্রফেসরপাড়ায় ভাড়া বাসা থাকে। গত ৩০ আগস্ট পাড়ার মোড়ের মুদি দোকানে গেলে তাকে একটি সিএনজি অটোরিকশায় করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানিয়েছেন তার মা। এ ঘটনায় তিনি চন্দ্রিমা থানায় একটি অপহরণের মামলা করেন। কিন্তু পুলিশ এ বিষয়ে নিষ্ক্রিয় ভূমিকায়।

অপহরণে অভিযুক্ত যুবকের নাম তুষার। নগরীর শালবাগান পাওয়ার হাউস এলাকায় তার বাড়ি। বাবার নাম এনায়েত হাওলাদার। ছাত্রীর মা জানিয়েছেন, আসামি তুষার একজন মাদকসেবী। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণেরও মামলা আছে। এবার সে তার মেয়েকে অপহরণ করেছে। তুষারের ব্যাপারে পুলিশকে জানানো হলেও তিনি কোন সহযোগিতা পাচ্ছেন না। এ অবস্থায় মেয়েকে পেতে তিনি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

তিনি বলেন, আসামির বাবা, মা, বোন এবং তার এক চাচাতো ভাইকে অপহরণ মামলায় আসামি করা হয়েছে। তারা কোথায় আছে পুলিশ সেই খবর পেলেও তাদের গ্রেপ্তার করার কোন চেষ্টা করা হচ্ছে না। তুষারের চাচা ফাইজুল ইসলাম ফাহি বিএনপি নেতা। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এই আসামি বর্তমানে হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে এলাকায় ঘোরাফেরা করছেন। তুষারের বিরুদ্ধে মামলা করায় তারা তাকে হত্যার পরিকল্পনা করছে।

তিনি আরও বলেন, আমার মেয়েকে অপহরণের অভিযোগ আমি র‌্যাব কার্যালয়েও দিয়ে এসেছি। কিন্তু তথ্য-প্রযুক্তির এ যুগেও আমার মেয়ে উদ্ধার হচ্ছে না। কেন পুলিশ খুঁজে পাচ্ছে না তা আমি জানি না। তুষার নানা কারণে প্রায়ই পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়। কিন্তু তার প্রভাবশালী চাচা তাকে বারবার তাকে প্রচুর অর্থের বিনিময়ে পুলিশের কাছে থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসে। এবার পুলিশ তাকে ধরছে না।

ভুক্তভোগী নারী দাবি করেন, তুষারের বাবা এনায়েত হাওলাদার কয়েকজন ব্যক্তিকে তার বাড়িতে পাঠিয়েছিলেন। তারা বলে গিয়েছেন, কোটি টাকা লাগলেও তারা খরচ করবেন। এই মামলায় তাদের কিছুই হবে না। আর মামলা না তুললে তাদের পরিবারের সবাইকে হত্যা করা হবে। এ অবস্থায় তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তিনি পুলিশ-প্রশাসনের সহযোগীতা কামনা করেন।

জানতে চাইলে নগরীর চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুম মুনীর অসহযোগীতার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি দাবি করেন, অপহৃত ওই ছাত্রীকে উদ্ধারের জন্য সব ধরনের চেষ্টা করা হচ্ছে। আসামিদের অবস্থান শনাক্ত হওয়ামাত্র তাদের গ্রেপ্তার করা হবে বলেও দাবি করেন তিনি।

স/আর