রাজনৈতিক পরিচয় কোনো অপরাধীর আত্মরক্ষার ঢাল হতে পারে না

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, রাজনৈতিক পরিচয় কোনও অপরাধীর আত্মরক্ষার ঢাল হতে পারে না। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা প্রমাণ করেছেন।

আজ রবিবার গোপালগঞ্জ সড়ক জোন, বিআরটিএ ও বিআরটিসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। সংসদ ভবনের সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মতবিনিময় সভায় যুক্ত হন তিনি।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এই সরকার জনগণের মনের ভাষা বোঝে বলেই যেকোনও বিষয়ে দ্রুততম সময়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করে। যেকোনও অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা সরকারের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর এবং তা এরই মধ্যে প্রমাণিত হয়েছে।

বর্তমান সরকার প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচারে সোচ্চার থেকেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অপরাধীকে দলীয় পরিচয়ে বাঁচানোর চেষ্টা করেনি, অপরাধী যে দলেরই হোক বিচারের আওতায় আনা হয়েছে।

ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানসহ সাম্প্রতিক স্বাস্থ্যখাত ও অন্যান্য খাতে অনিয়মের বিরুদ্ধে চলমান অভিযান সরকার স্বতপ্রণোদিত হয়ে পরিচালনা করছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আজ যারা অনিয়ম নিয়ে কথা বলছেন তাদের সময়কালে বাংলাদেশ দুর্নীতিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ান হয়েছিল। দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার পাশাপাশি দলীয় গঠনতন্ত্র থেকে দুর্নীতি বিষয়ক ধারা বাতিল করে বিএনপি আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজ দল হিসেবে নিজেদের স্বীকৃতি দিয়েছে।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সরকার কোনো অপরাধীকে দলীয় পরিচয়ে বাঁচানোর চেষ্টা করেনি। বিশ্বজিৎ হত্যাকা-ে অভিযুক্তরা দলীয় পরিচয়েও ছাড় পায়নি। বুয়েট-এর আবরার, বরগুনার রিফাত শরীফ, ফেনীর নুরসরাতসহ অন্যান্য ঘটনায়ও অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে। বিএনপি তাদের সময়কালে এমন কোনো নজীর সৃষ্টি করতে পেরেছে কিনা তা জানতে চান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশের রাজনীতিতে উদারতার মুর্ত প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করে কাদের বলেন, ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার প্রধান টার্গেট ছিল শেখ হাসিনা। ১৫ আগস্ট পিতামাতাসহ পরিবারের সদস্যদের নির্মম হত্যাকা-ের ক্ষত বুকে চেপে তিনি গিয়েছিলেন খালেদা জিয়ার বাসায় সন্তান হারা মাকে সান্তনা দিতে। সেখানে তাঁর সাথে কি আচরণ করেছিল তারা, তা বিএনপি ভুলে গেলেও আওয়ামী লীগ ভুলেনি।

বিএনপি দলীয় গঠনতন্ত্র থেকে ৭ ধারা বাতিল করে দুর্নীতিবাজদের দলীয় নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক স্বীকৃতি দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।

এর আগে মতবিনিময় সভায় মন্ত্রী বলেন, মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ কর্মকর্তাদের পদোন্নতি ও পদায়নের ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠতার পাশাপাশি কর্মদক্ষতা মূল্যায়ণ করা হবে।

সরকারি অর্থ ব্যবহারে সর্বোচ্চ সতর্কতা পালনের পাশাপাশি অপচয় রোধ করার উপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, সড়ক নির্মাণে গুণগতমান অক্ষুণ্ন রাখতে হবে। কাজের মান ধরে রাখতে এবং সময়মত শেষ করতে কর্মকর্তাদের নিবিড় তদারকি বাড়ানোর উপর এসময় তিনি জোর দেন।

মন্ত্রী ঈদের পর ফেরত যাত্রায় সংগঠিত সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির ঘটনা তদন্তে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

এ সময় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী কাজী শাহরিয়ার হোসেন, সড়ক পরিবহন মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব চন্দন কুমার দে, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মনির হোসেন পাঠান, গোপালগঞ্জ সড়ক জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. জাকির হোসেনসহ বিভিন্ন সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী, বিআরটিসি ও বিআরটিএ’র কর্মকর্তাগণ সংযুক্ত ছিলেন।

 

সূত্র; কালের কণ্ঠ