যৌন হয়রানি ইস্যুতে গুরুত্ব নেই বেশিরভাগ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:  

দেশে এখন ৩৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশনা মেনে এগুলোতে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি গঠনের কথা। কিন্তু এখন পর্যন্ত মাত্র ৩০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে তা রয়েছে। অবশ্য বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটি থাকলেও নিষ্ক্রিয়। কারণ এজন্য নেই অর্থ বরাদ্দ। অভিযোগ এলেও তদন্ত করতে অনীহা এবং তদন্ত করলেও প্রতিবেদন দাখিল করতে ও ব্যবস্থা নিতে গড়িমসি করা হয়। এমনকি কমিটির কার্যক্রমের গোপনীয়তাও রক্ষা হয় না অনেক সময়। কখনও কখনও অভিযোগকারীদের ডেকে শুনানির নামে কমিটির সদস্যরা বিভিন্নভাবে মানসিকভাবে নির্যাতন করে বলে অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী (বিএনডব্লিউএলএ) সমিতি সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

বিএনডব্লিউএলএ’র করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৯ সালের ১৪ মে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কয়েকটি দিকনির্দেশনাসহ রায় দেন হাইকোর্ট। ওই রায়ে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে অভিযোগকেন্দ্র ও তা পরিচালনার জন্য ন্যূনতম পাঁচ সদস্যের কমিটি করার নির্দেশ দেওয়া হয়।

হাইকোর্টের নির্দেশনায় জানানো হয়, একজন নারীকে কমিটির প্রধান করে বাকি চার সদস্যের মধ্যেও নারীদের প্রাধান্য রাখতে হবে। এরপর ইউজিসি হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে নীতিমালা প্রণয়ন ও কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয়। এরপর থেকে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যৌন হয়রানি প্রতিরোধে অভিযোগকেন্দ্র গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করে।

হাইকোর্টের এমন নির্দেশনার ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও দেশের শীর্ষ সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই এই কমিটি। যারা কমিটি গঠন করেছে তাদের মধ্যে তদন্তে অনীহা রয়েছে অভিযোগ থাকায় এগুলোর কার্যক্রমের পরিস্থিতি জানতে গত ১১ মার্চ দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠি দেয় ইউজিসি। এর মাধ্যমে গত বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর যৌন হয়রানির পরিস্থিতি জানতে চাওয়া হয়। কিন্তু সময় বেঁধে দেওয়া ১০ কর্মদিবসের মধ্যে সব বিশ্ববিদ্যালয় তথ্য পাঠায়নি।

গত ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত মাত্র তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় (হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় এবং চট্টগ্রাম প্রযুক্তি ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়) ইউজিসিতে তথ্য পাঠিয়েছে। পরে গত ৭ জুন পর্যন্ত আরও দুটি বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়) তাদের তথ্য পাঠায়।

অন্যদিকে বেঁধে দেওয়া সময়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি)তথ্য না পাঠালেও এগুলোর কমিটি সক্রিয় রয়েছে বলে জানায় ইউজিসি। অন্যদিকে আটটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও কমিটিই গঠন করা হয়নি। বাকি ২৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটি থাকলেও চলছে কোনোরকম।

২৮ বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটি চলছে কোনোরকম
ইউজিসিতে পাঠানো পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়সহ কমিটি রয়েছে এমন আরও ২৩টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কর্মকাণ্ড সন্তুষ্টজনক নয় বলে মনে করে ইউজিসি। হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ইউজিসিকে জানিয়েছে, তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অভিযোগ জমা পড়েছে একটি। এর তদন্ত এখনও শেষ হয়নি।

এছাড়া বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম প্রযুক্তি ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে— তাদের কাছে কোনও অভিযোগ আসেনি। এমনকি কোনও তদন্ত চলমান নেই। হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া বাকি কোনও বিশ্ববিদ্যালয় যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটির জন্য অর্থ বরাদ্দ দেয়নি। চুয়েট ছাড়া বাকি কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযোগ বাক্স নেই।

সব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই জানিয়েছে, যৌন হয়রানি প্রতিরোধ বিষয়ে শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের জন্য ওরিয়েন্টেশনের ব্যবস্থা করা হয়। অথচ  অনুসন্ধানে কারও কারও ক্ষেত্রে ভিন্নতা পাওয়া গেছে। এছাড়া যৌন হয়রানি প্রতিরোধ বিষয়ে কোনও বুকলেট এমনকি প্রকাশনাও নেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর। নেই নিজস্ব কোনও দফতরে ও কম্পিউটারের ব্যবস্থা। এসব কারণে অনেক ক্ষেত্রেই তদন্তের গোপনীয়তা রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ে।

সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুনের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটিতে পাঁচটি অভিযোগ জমা পড়েছে বলে ইউজিসিকে জানিয়েছে ঢাবি কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে সবটারই তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে ও প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

ঢাবিতে পাঁচটি অভিযোগে অভিযুক্তদের মধ্যে চারজনকে অপসারণ বা চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। বাকি একজনের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা কমিশনকে জানায়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে উচ্চ আদালতে দুটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের জন্য যৌন হয়রানি প্রতিরোধ বিষয়ে কোনও ওরিয়েন্টেশনের ব্যবস্থা করে না। এ বিষয়ে কোনও বুকলেট এমনকি প্রকাশনাও নেই বিশ্ববিদ্যালয়টির। কমিটির জন্য অর্থ বরাদ্দও দেওয়া হয় না।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটিতে ওই সময়ের মধ্যে কোনও অভিযোগ যায়নি বলে ইউজিসিকে জানিয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া কমিটির কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কোনও অর্থ বরাদ্দ নেই সেখানে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের জন্য ওরিয়েন্টেশনের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু এ বিষয়ে কোনও বুকলেট এমনকি প্রকাশনাও নেই বিশ্ববিদ্যালয়টির।

বাংলা ট্রিবিউনের অনুসন্ধানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটি সূত্রে জানা গেছে, সেখানে এই কমিটি গঠন করা হয় ২০১১ সালে। বর্তমান কমিটি গত দেড় বছরে মোট সাতটি অভিযোগ পেয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটির প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট একটির বিষয়েও চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেয়নি। বাকি দুটি অভিযোগের ক্ষেত্রে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে কথা বলেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটির প্রধান ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক সেলিনা পারভীন। তিনি  বলেন, ‘আমরা অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে কাজ করি। কমিটির গোপনীয়তা রক্ষা করা যেখানে খুবই জরুরি সেখানে আমাদের দফতর, আলাদা কম্পিউটার কিংবা বসার জায়গা নেই। শুধু তাই নয়, অভিযোগকারীদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্বও বিশ্ববিদ্যালয়ের। কিন্তু তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তাছাড়া কমিটি তদন্ত করে যথাসম্ভব দ্রুত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই সুপারিশের আলোকে ব্যবস্থা নিতে গড়িমসি করে। এ কারণে যৌন হয়রানির মতো একটি স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো অনেক ক্ষেত্রে গুরুত্বহীন থেকে যায় কারও কারও কাছে।’

এদিকে ইউজিসিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় গত ৭ জুন পর্যন্ত এ সংক্রান্ত কোনও তথ্য পাঠায়নি। তবে সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ২০১৪ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত ১৯টি যৌন হয়রানির অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে ১৭টি অভিযোগের তদন্ত হয়েছে ও দুটি অভিযোগ তদন্তনাধীন রয়েছে। এছাড়া ১৭টি অভিযোগের মধ্যে ১৪টির প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। কমিটি বাকি তিনটির তদন্ত শুরু করলেও বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে তাদের পক্ষে সেগুলো শেষ করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পরও একটির বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট। এছাড়া যৌন হয়রানি প্রতিরোধে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তেমন কোনও প্রচার-প্রচারণা করা হয় না। এ বিষয়ে কোনও বুকলেট এমনকি প্রকাশনাও নেই বিশ্ববিদ্যালয়টির। এছাড়া এই কমিটির কাজের জন্য কোনও অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয় না। অবশ্য যৌন হয়রানির অভিযোগ বাক্স রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে।

বর্তমানে ছুটিতে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়টির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক এবং যৌন নিপীড়ন তদন্ত কমিটির প্রধান হেলেনা ফেরদৌসীর মুখেও একই সুর। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘কমিটির জন্য অর্থ বরাদ্দ যেমন জরুরি, তেমনই জরুরি এর কার্যক্রমকে গোপন রাখা। হাইকোর্টেই নির্দেশেই তা স্পষ্টভাবে বলা রয়েছে। মূলত এটাকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখলে আলাদা দফতর ও সদস্যদের কাজের সুবিধার্থে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকা জরুরি।’

এদিকে যৌন হয়রানি তদন্তে কমিটি রয়েছে এমন আরও ২২টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভূমিকা ও কর্মকাণ্ডে একেবারেই সন্তুষ্ট নয় ইউজিসি।

যে আটটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটি নেই
ইউজিসি বলছে, হাইকোর্ট নির্দেশিত যৌন হয়রানি তদন্ত কমিটি নেই দেশের আটটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে। এগুলো হলো— বুয়েট, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্স ইউনিভার্সিটি এবং বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়।

যদিও বুয়েট আর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে খোঁজ নিলে এগুলোর কর্তৃপক্ষের দাবি, তাদের কমিটি রয়েছে। তবে তারা কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্যদের তথ্য জানাতে পারেননি। অন্যদিকে বাকি ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটি সম্পর্কে জানতে খোঁজ নিলেও সংশ্লিষ্ট কাউকে পাওয়া যায়নি।

জাহাঙ্গীরনগর ও শাবিপ্রবিতে কমিটি সক্রিয়
যদিও ইউজিসিকে গত ৭ জুন পর্যন্ত এ সংক্রান্ত কোনও তথ্য পাঠায়নি বুয়েট ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে, ২০১০ সালে কমিটি গঠনের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় দুটির কমিটি সক্রিয় রয়েছে। কমিটি গঠনের পর থেকে এগুলোতে জমা পড়েছে প্রায় ৩০টি অভিযোগ। বেশিরভাগ অভিযোগের তদন্ত যথাসময়ে শেষ হয়েছে ও পদক্ষেপ নিয়েছে সিন্ডিকেট কমিটি। রয়েছে অভিযোগ বাক্স। এছাড়া নিয়মিত সভা-সেমিনার, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, খেলাধুলা, নাটিকা উপস্থাপন, এমনকি ওরিয়েন্টেশনের মাধ্যমে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ সম্পর্কে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জানানো হয়।

এ প্রসঙ্গে কথা বলেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ও যৌন নিপীড়ন তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক রাশেদা আখতার। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কমিটি গঠনের পর থেকে এখন পর্যন্ত মোট ১৭টি অভিযোগ ছিল। এর মধ্যে সব অভিযোগের তদন্ত সম্পন্ন করে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। ১৬টি অভিযোগের বিষয়ে সিন্ডিকেটে সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে একটি অভিযোগের সিদ্ধান্ত সিন্ডিকেটের অপেক্ষায় রয়েছে।’

জাবি’র এই অধ্যাপকের ভাষ্য, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে এই কমিটির জন্য আলাদা করে কোনও অর্থ বরাদ্দ নেই। তবে কোনও অভিযোগ এলে কমিটি কার্যক্রম পরিচালনা করতে কিছু অর্থ চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় তা সরবরাহ করে। কমিটির সদস্যদের বসার জন্য আলাদা দফতর না থাকলেও রেকর্ডার, কম্পিউটারসহ কিছু প্রয়োজনীয় যন্ত্রাণুষঙ্গ কেনা হয়েছে। বসার জন্য আলাদা কক্ষ দেবেন বলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছেন।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইউএন ওমেন ও বিএনডব্লিউএলএ’র একটি প্রকল্প এই দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কাজ করছে।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইন না মানার প্রবণতার সমালোচনা করেছেন ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান। তিনি বলেন, ‘কিছু বিশ্ববিদ্যালয় তো হাইকোর্টের নির্দেশও মানে না। অনেকেই এখনও যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটিই গঠন করেনি। এছাড়া যারা কমিটি করেছে তাদের বেশিরভাগই নিষ্ক্রিয়। অনেকেই যৌন হয়রানির অভিযোগ নিয়ে কাজ তো করেই না, যারা করে তাদের মধ্যে বেশিরভাগই অনিয়ম করে।’

ইউজিসি চেয়ারম্যানের মন্তব্য, ‘কয়েক মাস আগে সব বিশ্ববিদ্যালয়কে তাদের যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চিঠি দিয়েছিল ইউজিসি। বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় তথ্য দিলেও অনেকেই বলেছে, এগুলো তাদের ব্যক্তিগত বিষয়। ইউজিসিকে এ বিষয়ে জানাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষগুলো অপারগতা স্বীকার করেছে। মূলত তাদের মধ্যে আইন না মানার প্রবণতা তৈরি হয়েছে।’

বাংলা ট্রিবিউন

 

বাংলা ট্রিবিউনকে