যে কারণে চিকিৎসকরা সাদা অ্যাপ্রন পরেন

ডাক্তারদের গায়ে সাদা অ্যাপ্রন পরা থাকে। বেশিরভাগ হাসপাতালের বিছানার চাদর, বালিশ কভার, জানালার পর্দাও সাদা কাপড়ের হয়ে থাকে। হাসপাতাল ও সংশ্লিষ্টদের এই ‘সাদা’ রঙ বেছে নেয়ার কারণ কী?

হাসপাতালে এত মানুষের ভিড়ে সাদা অ্যাপ্রনের চিকিৎসকদের আলাদা করে চিনতে সুবিধা হয়। সাদা কাপড়ে রক্ত লাগলে সেটি দ্রুত ওঠে। শুধু এসব কারণেই যে ডাক্তাররা সাদা অ্যাপ্রন পরে থাকেন তা কিন্তু নয়; এর পেছনে যুক্তি ও বিজ্ঞানচিন্তা রয়েছে।

তবে এই সাদা অ্যাপ্রনের চল চিকিৎসাবিজ্ঞানের শুরু থেকেই ছিল এমন ভাবার কারণ নেই। গত শতকের প্রথমার্ধ্বের টিভি নাটকগুলোতেও চিকিৎসকদের কালো স্যুটে দেখা যেত। কারণ কালো পোশাককে কেতাদুরস্ত মনে করা হয়। এ ছাড়া গাঢ় রঙের পোশাকে রক্তের ছোপ বোঝা যায় কম।

উনিশ শতকের শেষার্ধ্বে চিকিৎসক ও বিজ্ঞানীরা বুঝতে শুরু করলেন, জীবাণুর বংশবৃদ্ধি এবং সংক্রামক রোগ ছড়িয়ে পড়া বন্ধে হাসপাতাল পরিষ্কার রাখাটা জরুরি।

তবে শুধু হাসপাতাল পরিষ্কার রাখলেই হবে না, সেটি মানুষকে বোঝাতেও হবে। সে কারণেই চিকিৎসকদের পোশাক, হাসপাতালের বিছানার চাদর, পর্দাসহ যেখানে সম্ভব সেখানেই সাদা রঙের ব্যবহার দেখা যেতে শুরু করে।

কারণ সাদা রঙের সঙ্গে পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতার সম্পর্ক আছে বলে মনে করেছিলেন তারা।

হাসপাতালে সাদা রঙ বেশি ব্যবহারের কারণ সম্পর্কে মার্কিন চিকিৎসক ড. মার্ক এস হচবার্গ একটি সুনির্দিষ্ট মত দেন। ‘আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন জার্নাল অব এথিকস’ শীর্ষক বিজ্ঞান সাময়িকীতে তিনি লেখেন– সাদা রঙের আরেকটি কারণ আছে। আর তা হলো, সত্য ও স্বচ্ছতা।

চিকিৎসকরা রোগী দেখার সময় সাদা অ্যাপ্রন পরলেও অস্ত্রোপচারের সময় নীল বা সবুজ পোশাক পরেন। এর শুরুটা বিংশ শতকের শুরুর দিকে।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯১৪ সালে এক প্রভাবশালী চিকিৎসক দেখলেন, রক্তের গাঢ় লাল রঙ থেকে হুট করে সাদা রঙে তাকালে ক্ষণিকের জন্য চিকিৎসকদের চোখ ভেভাচেকা খেয়ে যেতে পারে। আবার ভ্রমও তৈরি হতে পারে। তখন থেকেই অপারেশন থিয়েটারে সবুজ এবং পরবর্তী সময়ে নীল রঙের কাপড়ের ব্যবহার শুরু হয়।

 

সূত্রঃ যুগান্তর