যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় বাংলাদেশে ইমার্জেন্সি মেডিসিনের ফেলোশিপ

বাংলাদেশের হাসপাতালসমূহে ‘ইমার্জেন্সি বিভাগে’ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ব্যবস্থা করার অভিপ্রায়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশ একটি বিশেষ কর্মসূচি চালু করছে। ২৯ জুন যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়াস্থ ‘ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভেনিয়া’ এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজের যৌথ উদ্যোগে বছর মেয়াদি আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা দিয়ে ফেলোশিপ সার্টিফিকেট প্রদানের এই কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানান এই উদ্যোগের প্রাণ পুরুষ বাংলাদেশী-আমেরিকান চিকিৎসক জিয়াউদ্দিন আহমেদ।

উল্লেখ্য, উত্তর আমেরিকায় খ্যাতনামা সমাজকর্মী ও শহীদ পরিবারের সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জিয়াউদ্দিন তাঁর কন্যা ডা. নাহরীন আহমেদকে সাথে নিয়ে দীর্ঘদিন থেকেই বাংলাদেশের হাসপাতালসমূহের জরুরী বিভাগে ‘মেডিসিন বিশেষজ্ঞ’ অন্তর্ভুক্তির চেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন। এ চেষ্টায় সামিল হন আরো ক’জন প্রবাসী। ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, ও বারডেম হাসপাতালও আন্তরিক অর্থে সাড়া দেয় এ উদ্যোগে। এরফলে ইতিমধ্যেই তিনদিনব্যাপী বার্ষিক ৮টি সেমিনার ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন উদ্যোক্তারা। এর মধ্যদিয়েই ‘বাংলাদেশ সোসাইটি অব ইমার্জেন্সি মেডিসিন’ প্রতিষ্ঠাতা করা হয়।

ডা. জিয়াউদ্দিন এ সংবাদদাতাকে ২৪ জুন জানান, ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভেনিয়ার নতুন উদ্যোগ “পেন গ্লোবাল ইমার্জেন্সি মেডিসিন প্রোগ্রাম” এর আওতায় অন্যান্য দেশের মত এই আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষন এবং সার্টিফিকেট প্রদান বাংলাদেশে ইমার্জেন্সি মেডিসিন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। শুধু তাই নয়, সরকারের ব্যবস্থাপনার হাসপাতালসমূহের জরুরী বিভাগের প্রতি রোগীদের আস্থার পরিধিও প্রসারিত হবে।

 

জানা গেছে, বছর মেয়াদি এই প্রশিক্ষণ প্রতি সপ্তাহে জুমের মাধ্যমে ৫ ঘণ্টা এবং বছরে পাঁচবার দুই সপ্তাহের জন্য আমেরিকা থেকে অধ্যাপকরা গিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দেবেন। বছর শেষে একটি পরীক্ষার মাধ্যমে কৃতকার্যদের আন্তর্জাতিক মানের সার্টিফিকেট প্রদান করবে। প্রথম বারে মাত্র ২০ জনকে প্রশিক্ষণের জন্য নির্বাচিত করা হবে যারা পরবর্তীতে ইমার্জেন্সি মেডিসিন বিভাগে  কাজ করবেন। সরকারি চিকিৎসক ছাড়াও কিছু বেসরকারি হাসপাতালের এবং মিলিটারি হাসপাতালের ডাক্তারদের ও সুযোগ দেয়া হবে। এই প্রক্রিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের ১০ জন অধ্যাপককে  প্রশিক্ষণ দিয়ে সহায়তা করার জন্য সংযুক্ত করা হবে যেন ভবিষ্যতে এই প্রোগ্রামটি আরো ব্যাপকভাবে সম্প্রসারণ করা যেতে পারে।

আরো জানা গেছে, এই প্রোগ্রামের ডিরেক্টর হিসাবে কাজ করছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডা. আব্দুল হানিফ টাবলু। প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটোর হিসাবে কাজ করবেন যুক্তরাজ্য থেকে ঢাকায় যাওয়া ইমার্জেন্সি মেডিসিনের উচ্চ শিক্ষা প্রাপ্ত ডা. মোহাম্মেদ সাদউদ্দিন আহমেদ সাদী। সহকারী প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর হিসেবে থাকবেন ঢাকা মেডিক্যালের সহকারী অধ্যাপক ডা. আশরাফ খান ও ডা. ফেরদৌস। প্রোগ্রামের  উপদেষ্টা হিসাবে রয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. টিটু মিয়া, মুগদা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. আহমেদুল কবীর ও বাংলাদেশ সোসাইটি অব ইমার্জেন্সি মেডিসিনের সভাপতি অধ্যাপক হুমায়ুন কবির চৌধুরী। আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা হিসেবে ডা. জিয়াউদ্দিনের সাথে সহকারি অধ্যাপক ডা. নাহরীন আহমেদও রয়েছেন।

 

সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন