যার হাত ধরে শিমুর রূপালী পর্দায় অভিষেক ঘটেছিল

দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে নিয়মিত অভিনয় করে যাচ্ছিলেন চিত্রনায়িকা রাইমা ইসলাম শিমুকে (৩৫)। ১৮টিরও বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি।

শুধু রূপালি পর্দায় নয়; ছোট পর্দায়ও শিমুর পদাচরণ ছিল। বহু নাটকে দেখা গেছে তাকে।  সম্প্রতি দর্শকপ্রিয় নাটক ‘ফ্যামিলি ক্রাইসিস’ – এ দেখা গেছে তাকে।

সোমবার দুপুরে কেরানীগঞ্জের হজরতপুর ব্রিজের কাছে আলিয়াপুর এলাকায় রাস্তার পাশে বস্তার ভেতর শিমুর লাশ পাওয়া যায়।

পারিবারিক ও দাম্পত্য কলহের জেরে চিত্রনায়িকা শিমুকে হত্যা করা হয় বলে পুলিশ চানিয়েছে। অভিনেত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন তার স্বামী খন্দকার শাখাওয়াত আলীম নোবেল।

মঙ্গলবার ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকার পুলিশ সুপার (এসপি) মারুফ হোসেন সরদার।

সংবাদ সম্মেলনে এসপি মারুফ হাসান বলেন,  স্ত্রী শিমু হত্যার দায় স্বীকার করেছেন খন্দকার তার স্বামী শাখাওয়াত আলীম নোবেল। অভিনেত্রী শিমুর লাশ গুম করতে তাকে বন্ধু ফরহাদ সহায়তা করেছেন। দাম্পত্য কলহের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ঢাকাই চলচ্চিত্রে জনপ্রিয় অভিনেতা মান্নার হাত ধরে রূপালী পর্দায় অভিষেক ঘটেছিল অভিনয়শিল্পী রাইমা ইসলাম শিমুর। দুই ডজনের বেশি সিনেমায় অভিনয় করা এই অভিনেত্রীর জীবনপ্রদীপ নিভে যায় নির্মম হত্যাকাণ্ডে।

এফডিসি সূত্রে জানা গেছে, বরগুনার আমতলী উপজেলার হলদিয়ার মেয়ে শিমু দুই যুগ আগে রূপালী পর্দার নায়িকা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ঢাকায় এসেছিলেন; কৈশোরে এফডিসির অলিগলি ঘুরতে ঘুরতে মান্নার কল্যাণে কাজী হায়াতের ‘বর্তমান’ সিনেমায় অভিনয়ের সুযোগ পেয়ে যান।

১৯৯৮ সালে মুক্তি পাওয়া সেই সিনেমায় মান্নার ছোটবোনের চরিত্রে অভিনয় করেন কিশোরী শিমু; পরে কাজী হায়াতের আরেকটি সিনেমায় কাজ করেন তিনি।

পরে দেলোয়ার জাহান ঝন্টু, চাষি নজরুল ইসলাম, শরিফ উদ্দিন খান দিপুসহ কয়েকজন পরিচালকের প্রায় দুই ডজন সিনেমায় পার্শ্বচরিত্রে দেখা যায় শিমুকে। মান্না ছাড়াও শাকিব খান, রিয়াজের মতো তারকা শিল্পীদের সঙ্গে তিনি কাজ করেন।

চলচ্চিত্রে নিয়মিত হয়েও শিল্পী সমিতির স্থায়ী সদস্যপদ হারিয়েছিলেন নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার অভিনেত্রী রাইমা ইসলাম শিমু।

সমিতির ভোটাধিকার হারানো ১৮৪ সদস্যের মধ্যে একজন তিনি। ভোটাধিকার ফিরে পাওয়ার আন্দোলনে শিমু ছিলেন সক্রিয়।

সোমবার শিমুর মরদেহ উদ্ধারের পর থেকে বিষয়টি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে কেন সদস্যপদ বাতিল হয়েছিল এই অভিনেত্রীর?

এ বিষয়ে জানতে সদ্য বিদায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান কথা বলতে রাজি হননি।

তবে ওই কমিটির সভাপতি জনপ্রিয় অভিনেতা মিশা সওদাগর কারণ ব্যাখ্যা করেছেন।

সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘শিমুর মৃত্যুতে আমি শোক প্রকাশ করছি। তিনি অনেক দিন ধরেই চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন। তবে শিল্পী সমিতির সংবিধানের বিধি মেনেই তার সদস্যপদে পরিবর্তন আনা হয়েছিল।  নিয়ম অনুযায়ী টানা দুই বছর কোনো শিল্পী চলচ্চিত্রে কাজ না করলে তার সদস্যপদ স্থগিত করা হয়, স্থায়ী সদস্য থেকে সহযোগী সদস্য করা হয়।  শিমুর সদস্যপদও কিন্তু স্থগিত করা হয়নি। তাকে সহযোগী করা হয়েছে।’

 

সূত্রঃ যুগান্তর