মৌসুমী সর্দি-কাশি নাকি কোভিডে আক্রান্ত বুঝবেন যেভাবে

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্কঃ

বর্ষায় এই রোদ আবার এই বৃষ্টি হওয়ার কারণে জ্বর, সর্দি-কাশিতে অনেকেই ভুগছেন। অন্যদিকে আবারও বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। তবে এখন সাধারণ সর্দি-কাশি নাকি করোনা সংক্রমণ হয়েছে তা অনেকেই টেরই পাচ্ছেন না।

কারণ মৌসুমী ফ্লুর সঙ্গে কোভিডের বেশ কিছু লক্ষণে মিল আছে। তাই সবারই সাধারণ ফ্লু ও কোভিডের লক্ষণের মধ্যে পার্থক্য জেনে রাখা প্রয়োজন।

কোভিড ও সিজনাল ফ্লু আলাদা করে বলা কঠিন কেন?

গলা ব্যাথা, নাক দিয়ে পানি পড়া, শরীরে ব্যথা ই্যত্যাদি এখন আর শুধু ফ্লুর উপসর্গ নয়। ওমিক্রন সংক্রমণের সঙ্গে কোভিডের লক্ষণগুলো নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত হয়েছে।

ডেল্টা তরঙ্গের সময়, উচ্চ জ্বর, ক্রমাগত কাশি, গন্ধ ও স্বাদের অনুভূতি নষ্ট হওয়ার মতো উপসর্গগুলো সবচেয়ে সাধারণ কোভিড উপসর্গগুলোর মধ্যে ছিল।

তবে করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের লক্ষণগুলো ডেল্টার তুলনায় অনেক হালকা। এটি সাধারণ সর্দি বা ফ্লুর মতো। আর এ কারণেই অনেকেই সাধারণ ফ্লু ভেবে ভুল করছেন।

এই দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য কোথায়?

সার্স কোভ-২ ও ইনফ্লুয়েঞ্জা উভয়ই শ্বাসযন্ত্রের ভাইরাস, যা সংক্রামক। এটি ফুসফুস ও শ্বাস প্রশ্বাসকে প্রভাবিত করে। কোভিড বা ফ্লুতে সংক্রামিত রোগীরা জ্বর, কাশি, শরীরে ব্যথা, গলা ব্যথা, সর্দি, পেশি ব্যথা, মাথাব্যথা ও গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা থেকে শুরু করে বিভিন্ন লক্ষণ বোধ করতে পারে।

মায়ো ক্লিনিক অনুসারে, কোভিড ১৯ ফ্লু থেকে বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। যেমন রক্ত জমাট বাঁধা ও শিশুদের মধ্যে মাল্টিসিস্টেম ইনফ্ল্যামেটরি সিন্ড্রোম।

অসুস্থতার সময়কালের পার্থক্য লক্ষ্য করুন

ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) অনুসারে, কোভিড-১৯ এর ক্ষেত্রে, একজন ব্যক্তি করোনা সংক্রমণের ২-১৪ দিনের মধ্যে যে কোনো উপসর্গ অনুভব করতে পারেন। আর লক্ষণ শুরু হওয়ার ২-৩ দিন আগে ভাইরাস ছড়াতে শুরু করে আক্রান্ত ব্যক্তি।

অন্যদিকে ফ্লু সংক্রমণ ঘটলে আক্রান্ত ব্যক্তি ১-৪ দিনের মধ্যে যে কোনো উপসর্গ অনুভব করতে পারেন। ফ্লুতে আক্রান্ত বেশিরভাগ রোগীই লক্ষণগুলো প্রকাশের ১ দিন আগ থেকেই সংক্রমণ ছড়ায়। 8 দিন পরেও ভাইরাস ছড়াতে পারে আক্রান্ত ব্যক্তির মাধ্যমে।

কোভিড-১৯ এর ক্ষেত্রে মারাত্মক ঝুঁকি অনেক বেশি

সংক্রমণের হার ও তীব্রতার দিক দিয়ে ফ্লুর তুলনায় কোভিড ১৯ এ মারাত্মক ঝুঁকি হয়। মায়ো ক্লিনিকের তথ্যমতে, ইনফ্লুয়েঞ্জার তুলনায় কোভিডে ফুসফুস বেশি আঘাতপ্রাপ্ত হয়, ফলে রোগীদের মধ্যে গুরুতর অসুস্থতা ও মৃত্যুর হারও ফ্লুর তুলনায় বেশি।

সিডিসির তথ্য অনুসারে, ফ্লুর তুলনায় কোভিড ১৯ কিছু মানুষের মধ্যে আরও গুরুতর অসুস্থতার কারণ হতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রেই করোনার উপসর্গ প্রকাশ পেতে আরও বেশি সময় নিতে পারে, আবার অনেকেই দীর্ঘদিন ধরেও গুরুতর উপসর্গে ভুগতে পারে।

কোভিড ও ফ্লুর মধ্যে পার্থক্য করার সঠিক উপায় হলো কোভিড টেস্ট। দ্রুত ফলাফলের জন্য অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করতে পারেন অথবা আরটি পিসিআর পরীক্ষাও করতে পারবেন। যদিও এই টেস্টের রেজাল্ট পেতে একটু দেরি হয়, তবে এই টেস্টের মাধ্যমেই নির্ভরযোগ্য ফলাফল পেতে পারেন।

এখন জ্বর, সর্দি-কাশির লক্ষণ দেখলেই দুরত্ব বজায় রাখুন। প্রয়োজনে আইসোলেশনে থাকুন। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের কাছ থেকে দূরে থাকুন। এর পাশাপাশি কোভিড প্রতিরোধে নিয়মিত মাস্ক পরুন। সামাজিক দুরত্ব ও ব্যক্তিগত সুরক্ষা বজায় রাখুন।

 

সুত্রঃ জাগো নিউজ