মোহনপুরে শিক্ষার্থীকে উত্যাক্তের ঘটনায় স্বাক্ষী হওয়ায় কর্মচারীকে পেটালো দুই শিক্ষক


নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহীর মোহনপুর ধুরইল ইসলামিয়া বালিকা দাখিল মাদ্রাসার এক শিক্ষার্থীকে বখাটের দারা শ্লীলতাহানীর ঘটনায় সাক্ষী হওয়ায় ওই মাদ্রাসার এক কর্মচারিকে দুই শিক্ষক মিলে পিটিয়েছে। শিক্ষকদের মারপিটে আহত ওই কর্মচারীর নাম আলাউদ্দিন মন্ডল (৫১)। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় মাদ্রাসার মধ্যে এঘটনা ঘটে।

মাদ্রাসা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত ১ ফেব্রুয়ারী (বুধবার) ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মাদ্রাসা যাওয়ার পথে এলাকার বখাটে সোয়াইবুর ওই শিক্ষার্থীকে পান বরজে টেনে নিয়ে ইভটিজিং করার সময় মাদ্রাসার কর্মচারী দেখে ফেলে।

এ ঘটনায় ৩ ফেব্রুয়ারী (শুক্রবার) ভুক্তভোগীর পিতা সাদু মৃধা মাদ্রাসা কর্মচারী আলাউদ্দিনকে স্বাক্ষী করে থানায় অভিযোগ দেন। এঘটনায় স্বাক্ষী হওয়ায় কর্মচারী আলাউদ্দিনের উপর চরম ক্ষিপ্ত হন অভিযুক্ত দুই শিক্ষক খোরশেদ ও মুসাদ আলী।

এদিকে, অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে তদন্ত করতে যায় মোহনপুর থানা পুলিশ। পুলিশ এলাকা থেকে চলে আসার পর রাতে বখাটে সোয়াইবুরের বড় চাচা মুসাদসহ চারজন মিলে ওই শিক্ষার্থীর চাচা রাশিকুল ইসলাম মৃধা ওরফে বাবুকে (৩২) মাথায় ইট মেরে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করেন। তার মাথায় ৫টি সেলাই পড়ে। তিনি বর্তমানে মোহনপুর সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনার পর থেকে পুলিশী টহলের কারণে অভিযুক্তরা গা ঢাকা দেয়।

এঘটনার রেশ না কাটতেই অভিযুক্ত দুই শিক্ষক আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার সময় মাদ্রাসা চলাকালীন সময়ে কর্মচারী আলাউদ্দিনকে সহকারী দুই শিক্ষক খোরশেদ ও মুসাদ বাশের লাঠি ও লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে। এসময় মাদ্রাসার সুপার মাওলানা নুরুজ্জামান মারধরে বাঁধা দিলে তাকেও লাঞ্ছিত ও ধাক্কা মেরে মাটিতে ফেলে দেয় ওই দুই শিক্ষক।

পরে আহত কর্মচারী আলাউদ্দিনকে মাদ্রাসার সুপারের কক্ষে আটকে রাখে। জ্ঞান ফিরে কর্মচারী আলাউদ্দিন ৯৯৯ এ কল দেন। পুলিশ আসার আগেই খবর পেয়ে মাদ্রাসা সভাপতি ওয়াজেদ আলী শাহ্ তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য মোহনপুর সরকারি হাসপাতালে পাঠান। তিনি এখন মোহনপুর সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এবিষয়ে ধুরইল ইসলামিয়া বালিকা দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা নুরুজ্জামান বলেন, আমি ওই দুই শিক্ষককে বারবার অনুরোধ করলেও তারা আমাকে শারিরীকভাবে লাঞ্ছিত করে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয় এবং লোহার রড দিয়ে কর্মচারী আলাউদ্দিনকে ব্যাপক মারধর করে আমার কক্ষে আটকিয়ে রাখে। এঘটনায় সভাপতির সিদ্ধান্তে অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এবিষয়ে মোহনপুর থানা কর্মকর্তা ওসি মোহা. সেলিম বাদশাহ্ বলেন, ইভটিজিং ও মারামারি সংক্রান্ত একটি অভিযোগ আগেই পেয়েছি। মাদ্রাসা কর্মচারী থানায় আসছিল। তাকে চিকিৎসা নিতে পরামর্শ দিয়েছি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।