মোঘল আমলের হায়দ্রাবাদি বিরিয়ানির স্বাদ ছড়াচ্ছে রাজশাহীর ‘মাস্টার শেফ রেস্টুরেন্ট’

নিজস্ব প্রতিবেদক:

হায়দ্রাবাদি বিরিয়ানি খেতে কে না ভালোবাসে। কিন্তু এ বিরিয়ানির প্রচলন কিভাবে হলো তা হয়তো আমরা অনেকেই জানি না। মোঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব হায়দ্রাবাদ আক্রমণ করে দেশটির শাসনভার নিজ হাতে তুলে নেন। এরপর নিজাম উল মুলককে হায়দ্রাবাদের দায়িত্ব দেন। নিজাম উল মুলক ছিলেন ভোজনরসিক। তিনি তার রাজত্বকালে যে বিরিয়ানির প্রচলন করেছিলেন, সেই বিরিয়ানিই হায়দ্রাবাদি বিরিয়ানি নামে পরিচিত।

আর মোঘল আমলের সেই হায়দ্রাবাদি বিরিয়ানি এখন রাজশাহীর বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে। তবে মোঘল আমলের সেই বিরিয়ানির স্বাদ ছড়াচ্ছে রাজশাহীর মাস্টারশেফ রেস্টুরেন্ট। যার স্বাদ ও মানে পরিবর্তনও এনেছে রেস্টুরেন্টেটি। তাই মাস্টারশেফ রেস্টুরেন্টের হায়দ্রাবাদি বিরিয়ানি এখন সাধারণ মানুষের পছন্দের তালিকায় প্রথমে।

মাস্টারশেফ রেস্টুরেন্টের হায়দ্রাবাদি বিরিয়ানি পছন্দ করে না এমন মানুষ রাজশাহীতে কমই আছে। আর সেটা কে সামনে রেখেই তাদের খাবারের তালিকা সাজিয়েছেন রেস্টুরেন্টটি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু হওয়ায় মাস্টারশেফ হায়দ্রাবাদি বিরিয়ানি দিয়েই কার্যক্রম শুরু করে রেস্টুরেন্টটি। যিনি শেফ তিনি নাকি খাবারটা ক্রেতার চাহিদার কথা ও স্বাদের বিষয়টি মাথায় রেখেই তৈরি করেন। আর মাস্টার শেফ চাইনিজ রেস্তোরাঁয় অত্যন্ত প্রসিব্ধ এই বিরিয়ানী যা সুনামের সাথে এখনও পরিবেশিত হচ্ছে। সাধারণত বাসমতি চাউল না ব্যবহার না করে রেস্তোরাঁয় উচ্চমান পোলাও চাল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তবে গ্রাহকের চাহিদানুযায়ী বিশেষ অর্ডারের ভিত্তিতে বাসমতি চাউল দিয়েও তৈরী করা হয়ে থাকে ঐতিহ্যবাহী হাইদ্রাবাদি বিরিয়ানি।

প্রতিদিন গড়ে ১‘শ খানেক মানুষ মাস্টারশেফ রেস্টুরেন্টে এ  বিরিয়ানি খেতে আসেন। বিশেষ দিবসে খাবারের ওপর ছাড় দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, ফ্যামেলী নিয়ে নয় বন্ধু বান্ধবী কাপল বা সব বয়সী লোকের আনাগোনা দেখা মিলে। খাবারটির মূল্য ৪৫০ টাকা।

বেশ জনপ্রিয় এই খাবারটি রাজশাহীর স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে। সঙ্গে সঙ্গে ভোজন রসিক মানুষের কাছে তুমুল হারে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করছে। সকাল ১১ থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত চলে এই বেচা কেনা ।

খাবার খেতে আসা সামিয়া বলেন, হায়দ্রাবাদি বিরিয়ানি টা খুবই ভালো লাগে। সময় পেলেই বন্ধুরা মিলে খেতে আসি। আবার বিশেষ দিবসগুলোতে কখনো কখনো ছাড় দেওয়া হয়।তখন বেশ মজা করে সবাই মিলে খেতে আসি। এদের ব্যাবহার ও অনেক ভালো। খাবারের জন্য বেশিক্ষণ বসে থাকতে হয়না। সাথে পরিবেশটাও মনোরম।

মাস্টারশেফ হায়দ্রাবাদি বিরিয়ানির হেড শেফ হাফিজ সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, হায়দ্রাবাদি বিরিয়ানিটা সবচেয়ে ভালো চাল দিয়ে রান্না করা হয়। বেশি রান্না হয় চিনিগুড়া চালের সঙ্গে খাশির মাংস আর ইন্ডিয়ান মসলা দিয়ে। এছাড়া অন্যান্য নানা ধরনের সুগন্ধি মসলা মিশানো হয়।

মাস্টার শেফ রেস্টুরেন্টে তরুণ উদ্যোক্তা শিহাব উদ্দিন রুম্মান বলেন, ২০০৮ সালে এই রেস্টুরেন্টটি চালু করি তারপর থেকে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ক্রেতাদের চাহিদায় ব্যবসাটি পেশায় পরিণত করেছি। খুব ভালো বিক্রি হয়, আমরা আশাবাদী। পরবর্তীতে আরো ভালো কিছু আইটেম নিয়ে আসবো ক্রেতাদের জন্য। ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী মেনু নতুন অঙ্গিকে সাজানো হবে বলেও তিনি সিল্কসিটি নিউজকে জানান।

স/অ