শনিবার , ২১ মার্চ ২০২০ | ১৪ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

মিঠে কড়া সংলাপ: মানুষ কত অসহায়!

Paris
মার্চ ২১, ২০২০ ৯:০৩ পূর্বাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্কঃ

আল্লাহর মার দুনিয়ার বার’ কথাটি ছোটবেলা থেকেই শুনে আসছি; কিন্তু আমরা কথাটির যথার্থ মূল্যায়ন করি বলে মনে হয় না। যেমন আমি চীন দেশ ভ্রমণ করে দেখেছি এবং বুঝেছি যে, সেদেশের অধিকাংশ লোকই এমন ধ্যান-ধারণা পোষণ করেন না।

কারণ দেশটির বেশিরভাগ মানুষই অ্যাগনস্টিক বা নাস্তিক। তারা তাদের জীবনে ধর্মকে প্রাধান্য না দিয়েই দিন-রাত শুধু কাজ করে চলেছেন এবং ব্যবসা-বাণিজ্য-পণ্য উৎপাদন ইত্যাদিতে পৃথিবীতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আর পৃথিবীর উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলো চীনে তৈরি পণ্যের ওপর মোটা দাগে নির্ভরশীল হয়ে পড়ায় চীনের উৎস কেন্দ্র থেকে করোনাভাইরাস পৃথিবীতে অতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে তা এখন সারা পৃথিবীকে গ্রাস করতে চলেছে।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর স্ত্রী এ রোগে আক্রান্ত হওয়ায় তারা স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই স্বেচ্ছা কোয়ারেন্টিনে (গৃহবন্দি) চলে গেছেন। কোনো কোনো দেশের সেনাপ্রধান, মন্ত্রী, নামিদামি শিল্পী এবং অন্যান্য শ্রেণি-পেশার অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিও এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। আর ইতোমধ্যেই কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যুসহ কয়েক লাখ লোক আক্রান্ত হওয়ায় এ মহামারী কতটা মারাত্মক আকার ধারণ করবে তা বলা কঠিন।

আমাদের পার্শ্ববর্তী ভারত, ইরান, পাকিস্তান, দক্ষিণ কোরিয়া ইত্যাদি দেশেও রোগটি ছড়িয়ে পড়ে বর্তমানে তা বাংলাদেশেও ঢুকে পড়েছে। আর বাংলাদেশে এ রোগটি ঢুকেছে সুদূর ইউরোপ থেকে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ, বিশেষ করে ইতালিতে এ রোগটি মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ায় সেখানকার বাংলাদেশিরা দলে দলে দেশে ফিরছেন।

আবার আমেরিকাতেও করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের মৃত্যুহার বেড়েই চলেছে। আর এ অবস্থায় ইউরোপ-আমেরিকার মতো উন্নত বিশ্বও রোগটির মোকাবেলা করতে যখন ব্যর্থ হচ্ছে, তখন আমাদের দেশে তা বড় আকারে ছড়িয়ে পড়লে অবস্থা কী দাঁড়াবে তা সহজেই অনুমেয়। এখনই বোঝা যাচ্ছে, ঘনবসতির এ দেশে রোগটি ছড়িয়ে পড়লে রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা-সেবাদান ইত্যাদিতে সরকারকে কতটা বেকায়দায় পড়তে হবে।

কারণ সারা দেশের কোথায় কতজন এ পর্যন্ত আক্রান্ত এবং সর্দি-কাশি-জ্বর-গলাব্যথাসহ করোনাভাইরাসের প্রাথমিক উপসর্গের সব ব্যক্তিকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার আওতায় আনা হয়েছে বা আনা সম্ভব, সে কথাটি দেশের স্বাস্থ্য বিভাগ জোর দিয়ে বলতে পারবে না। আর আমাদের স্বাস্থ্য খাতে বাজেটে যে ব্যয়-বরাদ্দ থাকে এবং সেই ব্যয়-বরাদ্দ থেকেও ওষুধপত্র, যন্ত্রপাতি কেনাকাটার নামে যে পরিমাণ অর্থ লোপাট হয়ে যায়, তার বাদবাকি অংশ দিয়ে অতি সাধারণ স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করাও সম্ভব নয়।

সে অবস্থায় করোনাভাইরাসের মতো সংকট মোকাবেলার জন্য প্রয়োজনীয় তহবিলের প্রশ্নটিও এসে যায়। তাছাড়া ডাক্তার, নার্সসহ যেসব মেডিকেল কর্মী এক্ষেত্রে কাজ করছেন বা করবেন তাদের মনমানসিকতা, আন্তরিকতা ইত্যাদি বিষয়ও অত্যন্ত জরুরি। কারণ আমাদের দেশের নামিদামি হাসপাতাল-ক্লিনিকে, যেখানে মোটা অঙ্কের অর্থ ব্যয় করে চিকিৎসা করাতে হয়, সেখানেও মানসম্মত চিকিৎসা না পাওয়ার অভিযোগ আছে। তাই করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে সরকারি হাসপাতালের ডাক্তার-নার্সসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা কতটা আন্তরিকতা বা দায়িত্বসহকারে সেবাদান করবেন সে বিষয়ে সন্দেহ থেকেই যায়।

কারণ করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সেবাদানের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যকর্মীদের কিছুটা ঝুঁকির ব্যাপার আছে। আর সে ঝুঁকিটুকু তারা নেবেন এমন মনমানসিকতা তৈরি বা মানসিক প্রস্তুতির জন্য মোটিভেশন প্রোগ্রামেরও দরকার আছে। মনে রাখা প্রয়োজন, চীন দেশে এ কাজ করতে গিয়ে বেশকিছু ডাক্তার-নার্সকে প্রাণ দিতে হয়েছে। সুতরাং সমস্যা ঘনীভূত হওয়ার আগেই সব দিক থেকে একটি সার্বিক প্রস্তুতিরও প্রয়োজন আছে। এ ক্ষেত্রে একদল স্বাস্থ্যকর্মীকে মনোবল অক্ষুণ্ন রেখে কাজ করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। কারণ আমাদের দেশের মেডিকেল কর্মীদের মনমানসিকতায় ঘাটতি আছে। বরং স্বাস্থ্যক্ষেত্রের একশ্রেণির ব্যক্তি পরিচালক, মহাপরিচালক ইত্যাদি পদ-পদবি বাগিয়ে ওষুধপত্র, যন্ত্রপাতি, মালামাল ইত্যাদি ক্রয়ে যেভাবে দুর্নীতির প্রতিযোগিতায় নামেন, সেসব সংবাদ দেখলে বা শুনলে চোখ কপালে ওঠে!

২.

ইউরোপ, আমেরিকাসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাস নামক রোগটি যেভাবে ছড়িয়ে পড়ছে এবং তা মোকাবেলায় ওইসব আর্থিকভাবে শক্তিশালী ও উন্নত দেশগুলো যেভাবে ব্যর্থ হচ্ছে, তাতে করে কতদিনে এ রোগটি নিয়ন্ত্রণে আসবে বা নির্মূল হবে তা বলা যাচ্ছে না। তবে এ বিষয়ে একমাত্র মহান সৃষ্টিকর্তাই আমাদের সবাইকে সাহায্য করতে পারেন। আর আমরাও যার যার অবস্থান থেকে চেষ্টা চালিয়ে যেতে পারি। সেই সঙ্গে চীনসহ উন্নত ও শক্তিশালী বলে পরিচিত রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের উদ্দেশে বলতে চাই, বর্তমান অবস্থায় ভেবে দেখুন আপনারা কতটা শক্তিশালী! প্রকৃতির কাছে, নিয়তির কাছে, সর্বোপরি মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে পৃথিবীর শক্তিশালী ও সম্পদশালী রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের কেউ যে শক্তিশালী নয়, সে কথাটিই কিন্তু প্রমাণ হয়ে যাচ্ছে।

অথচ পৃথিবীর শক্তিশালী দেশের মোড়ল সাহেবরা যখন-তখন, যেখানে-সেখানে তাদের শক্তি প্রদর্শনে কসুর করেন না। আজ ফিলিস্তিন, সিরিয়া, কাশ্মীরসহ পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে যেভাবে অনৈতিকভাবে, বেআইনিভাবে গায়ের জোর খাটানো হচ্ছে, অস্ত্রের জোরে মানবতাকে বিপন্ন করা হচ্ছে, আসুরিক শক্তি প্রয়োগ করে অশান্তি-হানাহানি সৃষ্টি করে দিনরাত জঘন্য অপরাধ করা হচ্ছে, সে কথাটিও বোধহয় বিশ্ব মোড়লদের ভেবে দেখা উচিত।

ভেবে দেখা উচিত, প্রকৃতি কেন প্রতিশোধ গ্রহণ করবে না। চীনসহ বিশ্ব মোড়লরা মিয়ানমারসহ পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে অস্ত্রের জোরে যা করেছে এবং করে চলেছে, বিভিন্ন দেশে তাদের ক্রীড়নক সরকারের কাছে অস্ত্র সরবরাহ করে নিজেরা অস্ত্র ব্যবসা করে চলেছে, আর সেসব অস্ত্র দ্বারা যেভাবে মানবতাকে পদদলিত করা হচ্ছে, সে অবস্থায় এসব আজাব, এসব গজব প্রকৃতির প্রতিশোধও তো হতে পারে! আপনারা রাসায়নিক অস্ত্রসহ বিভিন্ন মারণাস্ত্র তৈরি করে বাজারে বিক্রি করবেন, আর সেসব অস্ত্র তৈরি বা ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রকৃতি তার বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখাবে না তেমনটিও কিন্তু নয়!

পরিশেষে নিজ দেশের কিছু কথা বলেই আজকের লেখাটি শেষ করতে চাই। কারণ আমরা নিজেরা বিশ্বমোড়ল, পরাশক্তি বা অস্ত্র উৎপাদক বিক্রেতা না হলেও আমাদের নিজেদের দোষ-ত্রুটি-পাপও কম কিছু নয়। কারণ আমরা দেশের বাইরে অন্য দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে কোনো কিছু করতে না পারলেও নিরন্তর নিজেরা নিজেদের মধ্যে অন্যায়-অবিচার করে চলেছি। যেমন দরিদ্র জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবার টাকা নিজেরা লুটপাট করে চলেছি, যা আগেই উল্লেখ করা হয়েছে। তাছাড়া রাজনৈতিক ক্ষেত্রে দুর্বৃত্তায়নে আমরা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন! এ দেশে যুগ যুগ ধরে একে অপরের শত্রু হিসেবে রাজনৈতিক শক্তিকে ব্যবহার করা হয়েছে।

আমরা আমাদের জাতির পিতাকে পর্যন্ত হত্যা করেছি। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে আমরা এতটাই পাপ-পঙ্কিলে নিমজ্জিত যে, সেসব পাপেরও প্রাকৃতিক প্রতিশোধ আছে। আমরা একে অপরকে আদৌ সহ্য করতে পারি না। ক্ষমতার দ্বন্দ্বে একে অপরের বিরুদ্ধে যখন নেমে পড়ি, তখন নীতি-নৈতিকতা, ধর্ম কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করি না। এমনকি নিজ দলের মধ্যে থেকে নিজদলীয় ব্যক্তিকে হত্যার জন্য অস্ত্রে শান দেই। যেমনটি ঘটেছিল বঙ্গবন্ধুর ক্ষেত্রে।

অথচ বঙ্গবন্ধু ঘূণাক্ষরেও বুঝতে পারেননি যে তার কাছের ব্যক্তিই তার ঘোরতর শত্রু। যে খন্দকার মোশতাক বাড়ি থেকে রান্না করে এনে বঙ্গবন্ধুকে খাওয়াতেন সেই মোশতাকই বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন। সুতরাং আমাদেরও পাপ আছে এবং হয়েছে।

আবার বর্তমানে বঙ্গবন্ধু প্রতিষ্ঠিত দলীয় সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকা অবস্থাতেই পাপিয়াসহ অন্য পাপীদের অবস্থা-অবস্থানও দলের মধ্যে রয়েছে! ঘটনাচক্রে কারও পাপ পাদপ্রদীপের আলোয় ধরা পড়ছে, আবার সেসবের বেশিরভাগই লোকচক্ষুর অন্তরালেই থেকে যাচ্ছে। সারা দেশের ৬৪টি জেলায় এমন শত শত পাপিয়া, এনামুল, রুপন, জি কে শামীমের অবস্থান থাকলেও তারা ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাচ্ছেন।

শুধু বঙ্গবন্ধুকন্যা যে দু-একটি ঘটনা জেনেবুঝে নির্দেশ দিচ্ছেন তাতে অনেকের পাপ-পঙ্কিল জীবনের ঘটনাই প্রকাশিত হচ্ছে। অথচ দলীয় সুবিধাভোগী বিভিন্ন শ্রেণির নেতাদের একটি বড় অংশই এসব পাপ-পঙ্কিল জীবনের ভাগীদার। কেউ সরাসরি করছেন, আবার কেউ বা পরোক্ষভাবে তাদের কাজে সহায়তা করে অর্থবিত্ত, ভোগবিলাসের অংশীদার হচ্ছেন। পার্থক্য শুধু এতটুকুই। জাতীয় পত্রিকাগুলোর প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশিত লিড নিউজ ‘তিন চিকিৎসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লুটপাট, কেনাকাটায় সীমাহীন দুর্নীতি’, ‘মধ্যরাতে সাংবাদিককে বাড়ি থেকে তুলে নেয়া’ ইত্যাদি সংবাদ সেসব পাপাচারেরই নিদর্শন বহন করে।

ব্যাংক এবং শেয়ারবাজারের নিরীহ বিনিয়োগকারীদের অর্থ লুটপাটের ঘটনা থেকে শুরু করে চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজির মাধ্যমে অর্থ উপার্জন, নিয়োগ বাণিজ্য ইত্যাদিতে একশ্রেণির রাজনীতিক এবং সরকারি আমলার গাঁটবন্ধন (হবীঁং) এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, এসবের বিরুদ্ধে মুখ খুললে স্বার্থান্বেষী মহল রাতের অন্ধকারে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে মাঝরাতে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে বিচারের নামে শারীরিক নির্যাতন পর্যন্ত চালায়।

সুতরাং পাপিয়াদের দোষ কী? যে দেশে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য গাড়ি পোড়ানো থেকে শুরু করে মানুষ পর্যন্ত পোড়ানো হয়, একদল ক্ষমতায় গেলে অন্য দল টেনেহিঁচড়ে নামানোর ফর্মুলা গ্রহণ করে, জনগণের ভোটের অপেক্ষা বা তোয়াক্কা করা হয় না, সেদেশ যে দুর্নীতি তথা পাপাচারের দেশে পরিণত হবে সে কথাটিও বোধহয় সত্যি! সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল, বর্তমানে একটি প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল, যে দলটি বঙ্গবন্ধু প্রতিষ্ঠিত, সেই দল ক্ষমতায় থাকা অবস্থাতেও দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা যাচ্ছে না।

বর্তমানে বঙ্গবন্ধুকন্যার হাতে দলটি পরিচালিত হলেও এবং দলে প্রচুর ভালো, মেধাবী, ত্যাগী, সৎ, যোগ্য ও শিক্ষিত নেতা থাকলেও সেসব নেতাই যেন কোণঠাসা অবস্থায় আছেন। আর ধান্ধাবাজ নেতারা ভালো মানুষ বা ভালো নেতাদের বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগে রাজনীতি থেকে তাদের বের করে দিতে চাচ্ছেন। এ অবস্থায় মুজিববর্ষের এই দিনে কামনা রইল যে, ‘সদা-সর্বদা সুন্দর ও সত্যের জয় হোক। আর অসুন্দরের পূজারিরা বুঝতে শিখুন, এ ধরাধামে মানুষ কত অসহায়।’

ড. মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন : কবি, প্রাবন্ধিক, কলামিস্ট

সর্বশেষ - মতামত