মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এবং বাংলাদেশর তৎপরতা?

সিল্কসিটি নিউজ ডেক্স:
বাংলাদেশের র‍্যাব ও বাহিনীর বর্তমান ও সাবেক কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার সময় সাপেক্ষ এবং জটিল হবে ধারণা করছেন মার্কিন পররাষ্ট্র নীতি বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে সামনে রেখে দেয়া এ বিধি-নিষেধ প্রত্যাহারে বাংলাদেশ সরকারের নানামুখী তৎপরতা চালাতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে অবস্থানরত মার্কিন নীতি বিশ্লেষক প্রশান্ত পরমেশ্বরণ বাংলাদেশের নিষেধাজ্ঞা এবং এটি প্রত্যাহারের ব্যাপারটি মার্কিন স্বার্থ এবং ভূরাজনৈতিক জটিল সমীকরণের অংশ হিসেবে দেখছেন।

তিনি বলেন, বিধি-নিষেধ আরোপ সহজে হলেও এটি প্রত্যাহার বেশ কঠিন – বিশেষকরে ট্রেজারি যখন সুনির্দিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে মনোনীত করে দেয়।

সুনির্দিষ্ট ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা আচরণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার অর্থ – এটি মোকাবেলার জন্য নির্দিষ্ট কিছু পদক্ষেপ লাগবে। এছাড়া আমার সন্দেহ, যেহেতু আরো কিছু দেশের সঙ্গে একসাথে এই নিষেধাজ্ঞা এসেছে, তাই এটি অন্যান্য দেশের সাথে একত্রে পর্যালোচনা করতে হবে। আমি মনে করি এটি হলো বড় চ্যালেঞ্জ, বলে মি. পরমেশ্বর।

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি পুঁজি করে বাংলাদেশে সরকার বিরোধীরা জনমত গড়ে তুলতে চাইছে। অন্যদিকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে তৎপর হয়েছে সরকার।

নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহ্যারের পদক্ষেপ এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ। প্রয়োজনে সেখানে লবিস্ট নিয়োগেরও পরামর্শ দেয়ার খবর বেরিয়েছে।

সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক প্রত্যাহার প্রক্রিয়া সম্পর্কে বলেন, নিশ্চয়ই আমেরিকা সরকারকে কনভিন্স করা হয়েছে। কাজেই যে তথ্যের ভিত্তিতে দিয়েছে সেই তথ্য যতটুকু আছে সেটা কতটুকু সত্য কতটুকু মিথ্যা বা সঠিক কি সঠিক না এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে একটা বক্তব্য যাবে।

এছাড়া আমেরিকাতে লবিস্ট নিয়োগের একটা কালচার আছে, সেই লবিস্ট নিয়োগ করে আমেরিকান সরকারকে বুঝাতে হবে। আর ব্যক্তিদের ওপরে যে নিষেধাজ্ঞা সেটি প্রত্যাহার চেয়ে আমেরিকা সরকারের কাছে আপীল করতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন এবং বিরোধীদলের রাজনীতির অনেক সমর্থক ও শুভাকাঙ্খী রয়েছে। উভয় দলের পক্ষে মার্কিন প্রশাসনকে প্রভাবিত করতে লবিস্ট নিয়োগের কথাও শোনা যায়। সরকার বিরোধীরা বক্তব্য দিচ্ছেন এরকম আরো নিষেধাজ্ঞা আসবে।

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আরোপ কিংবা প্রত্যাহার করতে লবিং কতটা কাজ করছে – সেটি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন যুক্তরাষ্ট্র অবস্থানরত বিশ্লেষক ড. সাঈদ ইফতেখার আহমেদ।

যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক নীতি নির্ধারণের বিষয়ে পর্যবেক্ষণ থেকে তিনি বলেন, যে আদর্শিক এবং কৌশলগত অবস্থান থেকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এসেছে সেখানে লবিস্ট নিয়োগ করে বাইডেন প্রশাসনকে প্রভাবিত করা কোনো পক্ষের জন্যই সহজ কাজ হবে না। তাঁর ভাষায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে আমার যে দীর্ঘ অবজারভেশন সেখানে মনে হয়েছে লবিস্টদের বক্তব্যের ওপর ভিত্তি করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার পররাষ্ট্র নীতির সিদ্ধান্ত নেয়নি।”

বরং লবিস্টদের দ্বারা যে জিনিসটা হয়েছে যে আপনার যে কনসার্নটা এখানকার রাজনীতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক অবস্থাটা সম্পর্কে একটা ব্রিফ তাদের কাছে যাচ্ছে। এর বাইরে খুব বড়দাগে কোনো পরিবর্তন বা পরিবর্ধন হয় বা হবে বলে আমার কাছে কখনোই মনে হয়নি। সূত্র: বিবিসি বাংলা