মামলার তদন্ত ভিন্নখাতে প্রভাবিত করার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন


নিজস্ব প্রতিবেদক:

স্বামীর বিরুদ্ধে করা নারী নির্যাতনের মামলা ভিন্নখাতে প্রভাবিত করার অভিযোগ করেছেন এক নারী। প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে পুলিশকে দিয়ে তদন্ত ভিন্নখাতে প্রভাবিত করছেন তার স্বামীর পরিবার।

শনিবার বেলা ১২টায় রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন নগরীর ছোটবনগ্রাম এলাকার বাসিন্দা মৌসুমী (২০) নামের এক নারী।

লিখিত বক্তব্যে ওই নারী বলেন, ২০১৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর একই এলাকার মাজদার রহমানের ছেলে মাসাদুল হাসানের সাথে পরিবারের সিদ্ধান্তে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকসহ নানা ভাবে নির্যাতন ও হয়রানি করে তার পরিবার। যৌতুক হিসেবে দুই লাখ টাকা ও মোটরসাইকেল দাবি করেন তার স্বামী মাসাদুল হাসান। পরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়াতে দিতে দেরি হওয়ায় বিভিন্ন অজুহাতে নির্যাতন চালাতেন তার স্বামী।

তিনি বলেন, বিভিন্ন সময় নির্যাতন চালাতো আর স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা আপস করে দিয়ে বাড়িতে পাঠাতো। এ বছরের জানুয়ারি মাসে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শারীরিক ভাবে মারধর করে স্বামী মাসুদুল হাসান। গর্ভবতী হওয়ায় এক পর্যায়ে পেটে লাথি মারলে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। এরপর তারা আমাকে নগরীর একটি ক্লিনিকে ভর্তি রাখে। সেখানে অপারেশনের নামে আমার গর্ভের সন্তান নষ্ট করে। এরপর লোকমুখে শোনা যায় তিনি আমাকে তালাক দিয়েছেন। এলাকার জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে বসলে তারা আপস করতে রাজি হয় না। পরে বাধ্য হয়ে আমি রাজশাহী নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে ৩১৩ ধারায় বাদি হয়ে মামলা করি। মামলাটির তদন্ত করতে দেয়া হয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিশনকে। এছাড়ার রাসিকের পাঁচজন কাউন্সিলরকে স্বাক্ষী করা হয়। তারা অজ্ঞাত কারণে স্বাক্ষীও দিতে যাননি আদালতে।

ভুক্তভোগী নারী বলেন, তার স্বামী মাসুদুল হাসান (২১) নগরীর কলাবাগান জামে মসজিদের ইমাম। এছাড়াও তিনি রাজশাহী কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি অভিযোগ করে বলেন, তার যে আসল বয়স তিনি সব সময় লুকিয়ে রাখেন। তার তিনটি জাতীয় পরিচয়পত্র আছে। তার বাবা রাজশাহী সিটি করপোরেশনের গাড়িচালক। জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে প্রশাসনের সাথে যোগসাজস করে আমার মামলা ভিন্নখাতে প্রভাবিত করছে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, পিবিআইয়ের একজন পরিদর্শক আমাকেসহ আমার বাবা-মাকে অফিসে ডাকেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘বাচ্চা’ তো আপনার পেটেই মারা গেছে তাহলে মামলা করতে গেছেন কেন?’ তিনি সে সময় সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে ছেড়ে দেন। এরপর থেকে বিভিন্ন ভাবে মামলা তুলে নেয়ার জন্য বলে ওই পরিদর্শক। মামলা না তুললে অন্য মামলায় ফাঁসানোরও হুমকি দেন তিনি।

তিনি দাবি করেন, আমার পেটের সন্তান হত্যা ও নারী নির্যাতনের মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই।

মামলার তদন্তের বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিশন রাজশাহীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ মুঠোফোনে কোন কথা বলতে রাজি হননি। তিনি বলেন, আপনারা আমার অফিসে আসেন আপনাদের বিস্তারিত জানানো হবে।

এস/আই