মাদ্রাসার নামকরণ নিয়ে সমালোচনার মুখে রাবি উপাচার্য 

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাবি:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত একটি হাফেজিয়া মাদ্রাসা উপাচার্যের নামে নামকরণ করায় সমালোচনার মুখে পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহান। শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম, স্বজনপ্রীতিসহ নানা অভিযোগের পর এবার মাদ্রাসার নামকরণ নিয়েও সমালোচনায় পড়লেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কবরস্থান জামে মসজিদের পুনর্নির্মাণ করা হয়। চলতি বছরের ৬ মে ওই মসজিদের উদ্বোধন করা হয়। সম্প্রতি ওই মসজিদের দ্বিতীয় তলায় একটি হিফজখানা চালু করা হয়। হিফজখানার নামকরণ করা হয় ‘সোবহানিয়া আলকুরআনুল কারীম হিফজখানা’। আগামী নভেম্বর থেকে এ হাফিজিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে।
মাদ্রাসার নামকরণ কমিটির সদস্যরা জানায়, উপাচার্যের নামের সঙ্গে মিল রেখেই মাদ্রাসার নামকরণ করা হয়েছে। উপাচার্য নিজেই এতে সম্মতি দিয়েছেন। এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকরা বলছেন, উপাচার্যের নামের সঙ্গে মিলিয়ে মাদ্রাসার নামকরণ নৈতিকভাবে অসমর্থনযোগ্য।
মাদ্রাসার নামকরণ কমিটির সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ আলী হোসেন বলেন, উপাচার্যের আমলে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয় বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম ও আমি পরামর্শ করে উপাচার্যের কাছে এই নামের প্রস্তাব করি। পরে উপাচার্যকে বিষয়টি জানাই। ‘সোবহান’ শব্দের অর্থ পবিত্র। আমরা দোয়া করবো, স্মরণ করবো যে তিনি মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেছেন। তাই তাঁর নাম ব্যবহারের বিষয়ে জানালে উপাচার্য এতে অনুমোদন দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো সম্পদে এভাবে নামকরণ  অসমর্থনযোগ্য জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, উপাচার্যের নামের সঙ্গে মিলিয়ে মাদ্রাসার নামকরণ এক ধরনের অন্যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদে কারো নাম দিতে গেলে বিভিন্ন কমিটি, একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটে অনুমোদনের দরকার হয়। এক্ষেত্রে অনুমোদন হয়েছে কি না সেটা আমি জানি না। তবে উপাচার্যের নামে মাদ্রাসার নামকরণ করার কোনো কারণ নেই।
এ বিষয়ে জানতে উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের শুরুতে উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহান এবং উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়ার বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম, স্বজনপ্রীতিসহ সুনির্দিষ্টি ১৭টি অভিযোগ তোলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের একটি পক্ষ। গত ১৯ সেপ্টেম্বর এসব অভিযোগের শুনানি করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। এরই মধ্যে মাদ্রাসার নামকরণ নিয়েও সমালোচনায় পড়লেন উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহান।
স/অ