বৃহস্পতিবার , ৩০ এপ্রিল ২০২০ | ১৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

মাদকসেবী বাবা-ছেলে মিলে ধর্ষণ, ৪ জনকে খুন

Paris
এপ্রিল ৩০, ২০২০ ৪:৩২ পূর্বাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

জুয়ার টাকা জোগাড়ের জন্য এক দল মাদকসেবী প্রথমে সিদ্ধান্ত নেয় ডাকাতির। গভীর রাতে তারা হানা দেয় এক প্রবাসীর বাড়ি। সেখানে গিয়ে প্রবাসীর স্ত্রীর কাছে কয়েক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তা না পেয়ে প্রথমে ওই নারী এবং এরপর তার দুই মেয়েকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর বুঝতে পারে ভিকটিমরা তাদের চিনে ফেলেছে। তাই বাকপ্রতিবন্ধী এক ছেলে শিশুসহ চারজনকেই গলা কেটে হত্যা করে দলটি।

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার আবদার এলাকায় ফ্ল্যাটে মা ও তার তিন সন্তানকে হত্যার ওই ঘটনায় আরো পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১ এর সদস্যরা। এর আগে সোমবার পিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার হয় পারভেজ (১৭) নামের এক কিশোর।

বুধবার রাতে তারা ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের লংগাইর ইউনিয়নের গোলাবাড়ী গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী রেদোয়ান হোসেন কাজলের স্ত্রী স্মৃতি ফাতেমা (৪৫), তার বড় মেয়ে সাবরিনা সুলতানা নূরা (১৬), ছোট মেয়ে হাওরিন হাওয়া (১২) ও বাকপ্রতিবন্ধী ছেলে ফাদিলকে (৮) কুপিয়ে হত্যা করে।

তারা জৈনাবাজার এলাকায় জমি কিনে বাড়ি বানিয়ে প্রায় দুই যুগ ধরে বসবাস করে আসছিলেন।

বুধবার বিকালে র‌্যাব সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-১ এর সদস্যরা শ্রীপুরের বিভিন্ন এলাকায় বুধবার সকাল পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে মা তিন সন্তান হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারতরা হলো মো. কাজিম উদ্দিন (৫০), মো. হানিফ (৩২), মো. বশির (২৬), মো. হেলাল (৩০) ও মো. এলাহি মিয়া (৩৫)। গ্রেপ্তারদের দেওয়া তথ্যমতে আসামীদের পরিধেয় বস্ত্র (রক্তমাখা), নগদ ৩০ হাজার টাকা, একটি হলুদ রংয়ের গেঞ্জি, ১টি জিন্স প্যান্ট, ৩টি লুঙ্গি এবং ১টি আংটি  উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।

র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা জানায়, তারা সবাই মাদকসেবী। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন এলাকায় চুরি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধে জড়িত। সবাই জুয়াড়ী এবং ভিকটিমের বাড়ি সংলগ্ন এলাকায় নিয়মিত জুয়া, মাদকসেবন ও আড্ডা দিত। এ ছাড়া ভিকটিমদের তারা নানাভাবে হয়রানি করত। গ্রেপ্তার কাজিমের ছেলে পারভেজ আনুমানিক দেড় মাস আগে সন্ধ্যার দিকে গোপনে ভিকটিমের বাড়ির খাটের নিচে লুকিয়ে থাকা অবস্থায় গৃহকর্তী তাকে ধরে ফেলেছিল।

তারা র‌্যাবকে জানায়, এ হত্যাকাণ্ডের কয়েক দিন আগে তারা জানতে পারে, কাজল মালয়েশিয়া থেকে হুন্ডির মাধ্যমে প্রায় ২০/২২ লাখ টাকা পাঠিয়েছে। ঘটনার ৫/৭ দিন আগে গ্রেপ্তার কাজিম ও হানিফ একত্রিত হয়ে কাজলের বাড়িতে ডাকাতির পরিকল্পনা করে। পরে অন্য আসামী বশির, হেলাল, এলাহিকে ডেকে নিয়ে পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে। এদের দলে কাজিম এর ছেলে পারভেজও ছিল। তারা পরিকল্পনা অনুযায়ী ২৩ এপ্রিল রাত সাড়ে ১২টায় বাড়ির পেছনের এলাকায় জড়ো হয়। প্রথমে পারভেজ ভেন্টিলেটর দিয়ে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে। এ ছাড়া হানিফ মাদারগাছ এবং পাইপ বেয়ে ছাদে উঠে সিঁড়ির ঢাকনা খুলে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে। পরে অন্যদের প্রবেশের জন্য বাড়ির পেছনের ছোট গেট খুলে দেওয়া হয়। কাজিম, হেলাল, বশির, এলাহি এবং আরো কয়েকজন পিছনের গেট দিয়ে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে।

গ্রেপ্তাররা আরো জানায়, কাজিম এবং হেলালসহ তিনজন প্রথমে ফাতেমার ঘরে ঢুকে এবং কাজিমের হাতে থাকা ধারাল অস্ত্র দিয়ে ফাতেমাকে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে বিদেশ থেকে  পাঠানো টাকাগুলো দিতে বলে। ফাতেমা এত টাকা নেই বলে জানায়। পরে ফাতেমা তার রুমের স্টিলের শোকেসের ওপর রাখা টেলিভিশনের নিচে চাপা দেওয়া ৩০ হাজার টাকা বের করে দেয়। পরবর্তীতে ফাতেমার স্বর্ণালংকারগুলো ছিনিয়ে নেয় এবং পালাক্রমে ধর্ষণ করে। অন্যান্য রুমেও লুটতরাজ চলতে থাকে। আসামী বশির, হানিফ ও এলাহিসহ আরো একজন ভিকটিম নূরাকে তাদের হাতে থাকা ধারাল অস্ত্র দিয়ে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে গলার চেইন ও স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয়। তাকেও পালাক্রমে ধর্ষণ করা হয়। এ ছাড়া আসামী বশিরসহ আরো একজন ফাতেমার ছোট মেয়ে হাওয়ারিনকে পর্যায়ক্রমে ধর্ষণ করে।

আসামী পারভেজও বর্ণিত হত্যা ও ধর্ষণে অংশগ্রহণ করে।

গ্রেপ্তাররা জানায়, ফাতেমা ও তার মেয়েরা গ্রেপ্তারদের কয়েকজনকে চিনে ফেলায় তাদের সবাইকে হত্যা করা হয়।

সোমবার গাজীপুর পিবিআই এক প্রেস ব্রিফিংএ জানায়, মা ও তিন সন্তানকে পিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তারকৃত পারভেজ (১৭) একাই খুন করেছে।

সর্বশেষ - জাতীয়