নিজস্ব প্রতিবেদক:
‘তোর বাবাকে টাকা দিতে বল। আমার টাকার প্রয়োজন। না হলে তোকে প্রতিদিন মার খেতে হবে। সম্পর্ক করে বিয়ে করেছি বলে কি তোর বাবা আমাকে টাকা দেবে না। আমার যখন যে টাকার প্রয়োজন হবে সে টাকা দিতে হবে।’
আজ মঙ্গলবার সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ রামেক হাসপাতালের এক নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহত রিফাহ তাসফিয়া সালমা (২১) এসব কথা বলেন।
‘ঘটনার দিন কখন দুপুর আড়ায়টা হবে। আমি আর ছয় মাসের মেয়ে শাসমিয়া ঘুমিয়ে ছিলাম। আমাকে এসে বলে টাকা দে। আমি টাকা কোথায় পাব। আমি বাড়ি থেকে কোথাও যায়নি। মেয়ে ঘুমি আছে। খাটের নিচে থেকে পাইপ (জিয়ায়) বের করে আমাকে মারতে শুরু করে।’
‘আমি মাটিকেত পড়ে গেলে আমার পায়ে পাইপ দিয়ে মারতে থাকে আমার চিৎকারে কান্না করতে শুরু করে মেয়ে শাসমিয়া। আমার স্বামী শামিউল হক সোহাগ মেরে দুই হাত আর এক পা ভেঙে দিয়েছে। আমি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে আমি তবুও আমাকে মারে।’
রিফাহ তাসফিয়া সালমার ছোট মামা ফজলে রাব্বি সিল্কিসিটি নিউজকে বলেন, ঔ এলাকার সাধারণ মানুষের মুখে শুনে এসে দেখি আমার ভাগ্নি (রিফাহ তাসফিয়া সালমা) মেঝেতে পোড়ে আছে। আমি ও আরো কয়েকজন মিলে সালমাকে তুলে নিয়ে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করি।
সেখানে চিকিৎসা চলছিল। এক নম্বর ওয়ার্ডে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রামেকের ওসিসিতে রেফার্ড করা হয়। বর্তমানে সালমা সেখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
তিনি আরো বলেন, আড়ায় বছর আগে তারা সম্পর্ক করে বিয়ে করে। কিছু দিন পরে দুই পরিবার মেনে নেয়। গত ৬মাস আগে একটা মেয়ে হয় সালমার। সালমার স্বামী সোহাগ নেশাগ্রস্থ বেশির ভাগ সময় নেশার সঙ্গে জড়িয়ে থাকে। বিয়ে পরে কয়েক মাস ভলোই ছিল।
ফজলে রাব্বি বলেন, আশে পাশের লোকজন বলে, তাদের মাঝে মাঝেই মারামারি (ঝগড়া) হয়। আমার ভাগ্নীকে তারা মারধর করে। সালমা লজ্জার খাতিরে বলে না। কারণ তারা সম্পর্ক করে বিয়ে করেছে তাই। সোহাগ কখনো দুই লাখ আবার কখনো তিন লাখ টাকা চাই। আর এই টাকার জন্য তারা আমার ভাগ্নীকে মারধোর করে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, মেয়ে মা হোসনে আরা পারভীন বাদি হয়ে নগরীর রাজপাড়া থানায় ৫জনকে আসামিকে একটি মামলা করেন। এই মামলায় মেয়ের স্বামীসহ দুই ভাই ও শ্বশুর শ্বাশুরীকে আসামি করা হয়।
মামলায় হোসনে আরা পারভীন উল্লেখ্য করেন, সোহাগকে এর আগে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। তার পরেও সে আবার টাকা চাই। গতকাল সে আমার মেয়েকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে (জিআই পাইপ) দিয়ে হাত-পা ভেঁঙে দেয় আর মাথায় আঘাত করে।
রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমান উল্লাহ বলেন, অভিযোগ এসেছি শুনেছি। আমি বাইরে আছি।
স/আ