মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া হাসপাতালে অভিযান নিষেধ

মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া দেশের কোনো সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালে অভিযান চালাতে পারবে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কোথাও কোনো হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করতে হলে অবশ্যই স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিতে হবে।

মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে এমন নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রীর আলোচনা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব উম্মে হাবিবা স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সেখানে বলা হয়েছে, করোনা মহামারী প্রাদুর্ভাবের পর থেকে দেশের সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন শাখার সদস্যরা নানা বিষয়ে অভিযান পরিচালনা করছে। একটি হাসপাতালে একাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান পরিচালনা করায় তাদের স্বাভাবিক চিকিৎসা কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এসব কারণে স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে এক ধরনের চাপা অসন্তোষ বিরাজ করছে। ইতোমধ্যে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের সার্বিক কার্যক্রম দেখার জন্য একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। যেখানে জননিরাপত্তা বিভাগের একজন যুগ্ম সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তা সদস্য হিসেবে রয়েছেন। ভবিষ্যতে স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনো অপারেশন পরিচালনা করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সঙ্গে পরামর্শ করে সেটি করতে হবে।

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, যে কোনো সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের অভিযান পরিচালনা করা থেকে বিরত থাকতে এবং জরুরি অভিযান পরিচালনার প্রয়োজন হলে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ এবং চিকিৎসা শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে অভিযান পরিচালনা করতে হবে।

মন্ত্রণালয়ের এ ধরনের নির্দেশনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এ ধরনের নির্দেশনার কারণে নিবন্ধনহীন হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলো আরও বেশি অপকর্ম করার সুযোগ পাবে। কোনো নির্দিষ্ট হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করতে অনুমতি নিতে গেলে সেটি জানাজানি হয়ে যাবে। ফলে ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সব ধরনের সতকর্তা অবলম্বনের সুযোগ পাবে। এতে রোগীদের প্রতারিত হওয়ার ঘটনা আরও বাড়বে। পাশাপাশি বাড়বে ভুয়া ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্যসেবা অধিদফতরের এক কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনাকালে দেখেছি বেশিরভাগ বেসরকারি হাসপাতাল নিয়ম-কানুন মানে না। সেখানে নিয়মানুযায়ী চিকিৎসক নার্স থাকে না। এমনকি চিকিৎসা সরঞ্জাম থাকে মেয়াদোত্তীর্ণ ও মানহীন। এভাবে অভিযান পরিচালনা বন্ধ করে দেয়া হলে এসব অসাধু চিকিৎসা ব্যবসায়ী ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ) ডা. ফরিদ হোসেন মিয়া যুগান্তরকে বলেন, কর্তৃপক্ষ যেহেতু এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, অবশ্যই তারা চিন্তাভাবনা করেই নিয়েছে, যাতে সবার জন্য ভালো হয়।