মণ্ডপে মণ্ডপে বেজে উঠেছে বিদায়ের সুর

আজ শুক্রবার বিজয়া দশমীতে বিদায় নেবেন মা দুর্গা। প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পাঁচ দিনের দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় সন্ধ্যার আগেই প্রতিমা বিসর্জনের নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ।

এর আগে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা গতকাল বৃহস্পতিবার উদযাপন করেন মহানবমী পূজা। দিনভর রাজধানীর পূজামণ্ডপগুলোয় ছিল ভক্ত-দর্শনার্থীদের ঢল। মণ্ডপে মণ্ডপে ভক্তরা দেন অঞ্জলি ও ভোগ। নবমী পূজা ও সন্ধ্যা আরতি শেষে বাজতে শুরু করে বিদায়ের সুর।

হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হয় গত সোমবার। টানা পাঁচ দিনের আনন্দ উৎসবের পর আজ বিজয়া দশমীর দিন দেবী বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হবে এই আয়োজন। গতকাল মহানবমীর সন্ধ্যায় আরতি শেষে দেবীর বন্দনায় প্রতিটি পূজামণ্ডপে বিষাদের সুর বাজতে শুরু করে। তার আগে সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটের আগেই কল্পারম্ভ ও বিহিতপূজার মাধ্যমে শুরু হয় নবমীর আনুষ্ঠানিকতা। পূজা শেষে ভক্তরা দেবীর চরণে পুষ্পাঞ্জলি নিবেদন করেন। দিনভর চলে চণ্ডীপাঠ আর ভক্তদের কীর্তন-বন্দনা।

হিন্দু শাস্ত্র মতে, নবমী তিথিতে রাবণবধের পর শ্রী রামচন্দ্র এই পূজা করেছিলেন। নীলকণ্ঠ ফুল যজ্ঞের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয় নবমী বিহিতপূজা। নবমী পূজার মাধ্যমে সম্পদ লাভ হয় মানবকুলে। তাই শাপলা, শালুক ও বলিদানের মাধ্যমে পূজা হয়েছে দশভুজা দেবীর। নীল অপরাজিতা ফুল নবমী পূজার বিশেষ অনুষঙ্গ। নবমী পূজায় যজ্ঞের মাধ্যমে দেবী দুর্গার কাছে আহুতি দেওয়া হয়। ১০৮টি বেলপাতা, আম কাঠ ও ঘি দিয়ে এই যজ্ঞ করা হয়।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জি বলেন, বিজয়া দশমীর দিন শোভাযাত্রা পরিহার করে সন্ধ্যার আগেই প্রতিমা বিসর্জনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন মণ্ডপে পূজা শেষে অনুষ্ঠিত হয় অঞ্জলি ও প্রসাদ বিতরণ। সব মণ্ডপে দেওয়া হয় কয়েক দফা পুষ্পাঞ্জলি। বিদায় বেলায়ও চলেছে ঢাক আর শঙ্খধ্বনি, টানা মন্ত্রপাঠ, উলুধ্বনি, অঞ্জলি, সঙ্গে ধুনচি নৃত্য। সন্ধ্যায় আরতির পাশাপাশি মণ্ডপে মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হয়েছে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এসব অনুষ্ঠান উপভোগ করতে বৃষ্টি উপেক্ষা করে মহানবমীতে মন্দির ও মণ্ডপে ছিল ভক্ত-দর্শনার্থীর উপচে পড়া ভিড়।

বিজয়া দশমীতে বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বিভিন্ন বেসরকারি টিভি চ্যানেল ও রেডিও বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে। জাতীয় দৈনিকগুলো প্রকাশ করবে বিশেষ নিবন্ধ।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ