ভাড়া বেশি হওয়ায় রাজশাহীতে বাসে যাত্রী কমেছে

দেশের অন্যান্য স্থানের মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিভাগীয় শহর রাজশাহীতেও সোমবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে বাস চলাচল। রাজশাহী মহানগরীর শিরোইল বাস টার্মিনাল থেকে দুই মাস পর ছেড়ে গেছে দূরপাল্লার বাস।

এছাড়া মহানগরীর নওদাপাড়া কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে চলাচল করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, নাটোর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, পাবনা ও জয়পুরহাট রুটের আন্তঃজেলা বাস সার্ভিস। তবে বাড়তি ভাড়ার কারণে বাসে যাত্রী ছিল খুবই কম। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউই বাসে উঠতে চাইছেন না। ট্রেনেই যাতায়াত করছেন যাত্রীরা।

সোমবার সকালে রাজশাহী মহানগরীর ‘ঢাকা বাস বাসস্ট্যান্ড’ খ্যাত শিরোইল এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, বাস কাউন্টার ও যাত্রীবাহী বাসের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে। প্রতিটি টিকিট কাউন্টারের প্রবেশ মুখেই জীবাণুনাশক পাদানি, স্প্রে ও হ্যান্ড সেনিটাইজেশনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

এছাড়া বাস ছাড়ার আগে জীবাণুনাশক ছিটিয়ে সিট ও হাতল জীবাণুমুক্ত করতে দেখা গেছে। হ্যান্ড থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে যাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করে বাসের মধ্যে প্রবেশ করানো হচ্ছে। একটি সিট ফাঁকা রেখে আরেকটি সিটে যাত্রী বসানো হয়েছে। ফলে এক যাত্রী থেকে আরেক যাত্রীর শারীরিক ব্যবধান থাকছে দুই সিট। যা নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব অর্থাৎ তিন ফিট। এভাবে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে বাস ছাড়ছে বিভিন্ন গন্তব্যে।

তবে বাড়তি বাস ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের মধ্যে চরম আপত্তি দেখা দিয়েছে। বাসে অর্ধেক যাত্রী নেয়ার শর্তে ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়িয়েছে সরকার। এটি কার্যকরও হয়েছে। বিআরটি নির্দেশিত নতুন ভাড়া অনুযায়ী বাসের ভাড়া নন এসি ঢাকা-নাটোর ৭২০ টাকা, ঢাকা- রাজশাহী ৮৬০ টাকা, ঢাকা-চাঁপাইনবাবগঞ্জ ১ হাজার টাকা, ঢাকা- শিবগঞ্জ ১ হাজার ৮০ টাকা। এসি বাসের জন্য ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ঢাকা-নাটোর ১ হাজার ৬২০ টাকা, ঢাকা-রাজশাহী ১ হাজার ৮০০ টাকা, ঢাকা-চাঁপাইনবাবগঞ্জ ১ হাজার ৯৮০ টাকা। ফিরতি রুটেও একই ভাড়া প্রযোজ্য।

রাজশাহী মহানগরীর হড়গ্রাম এলাকার চাকরিজীবী রফিকুল ইসলাম বলেন, এক রকম বাধ্য হয়েই বাসে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিতে হচ্ছে। ছুটি শেষ হয়ে গেছে। ট্রেনের টিকিট পাওয়া যায়নি। তাই বাড়তি ভাড়া দিয়ে রওনা হচ্ছেন ঢাকার পথে।

তবে কেবল রফিকুল ইসলামই নন, রাজশাহী থেকে দুই মাস পর ঢাকার উদ্দেশে রওনা হওয়া অধিকাংশ যাত্রীরই একই অবস্থা। আর অভিন্ন অভিমত। গন্তব্যে পৌঁছাতে বাসে যেতে পারলেও বাড়তি ভাড়া নিয়ে যাত্রীরা অসন্তুষ্ট।

তবে আন্তঃজেলা রুটের বাস সার্ভিসে দেখা দিয়েছে গোলযোগ। মহানগরীর ভদ্রা ও রেলগেট বাসস্টপ এলাকায় গিয়ে বাস ভাড়া নিয়ে যাত্রী ও বাসের সুপারভাইজারের সঙ্গে তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ার দৃশ্য চোখে পড়ছে।

শিরোইলে বাসস্ট্যান্ডে হানিফ এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার মনজুর রহমান খোকন বলেন, পুরোপুরি স্বাস্থ্যবিধি মেনেই রাজশাহী থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে বাস ছাড়ছেন তারা। স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট নির্দেশনা কাউন্টারের সামনে প্রদর্শন করা হচ্ছে। এছাড়া সবরকম ব্যবস্থা রাখা হয়েছে কাউন্টার ও বাসের মধ্যে। নির্দেশনা অনুযায়ী অর্ধেক যাত্রী নিয়েই প্রতিটি বাস রাজশাহী থেকে ঢাকা যাচ্ছে।

এজন্য সরকার নির্ধারিত হারে ভাড়া নেয়া হচ্ছে। এখানে তাদের বিশেষ কিছু করার নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।