ভাল নেই সাপাহার সীমান্তবর্তী পাতাড়ী ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের মানুষেরা

সাপাহার প্রতিনিধি: নওগাঁর সীমান্ত সংলগ্ন পুর্ণভবা নদী তীরে অবস্থিত পাতাড়ী ইউনিয়নের আদাতলা,হাঁড়িপাল,কাঁড়িয়াপাড়া, কাউয়াভাসা ও জালসুকা গ্রামের লোকজন সম্প্রতিক কালের বন্যা ও ঘূর্নীঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়ে চরম দুরাবস্থার মধ্যে জীবন যাপন করছে।

সরেজমিনে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে তার বাস্তব চিত্র স্থানীয়রা জানান সাম্প্রতিক কালের বন্যার ধকল সামলে না উঠতেই গত ৪ঠা আগষ্ট মঙ্গলবার বিকেলে হঠং ঘুর্নী ঝড় ওই এলাকায় আঘাত হানে।

ওই গ্রামের বাসিন্দা আইয়ুব আলী,শামীম,সুলতান,ইসাহাক,মনিরুল,নুর,আলিম ,সামাদ,মাহাবুর মোজাফ্ফর মিস্ত্রি,তসলিম,ফারুক সহ অনেকের ঘর বাড়ির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঘরের টিনের চালা উড়ে গেছে, গাছ পালা , বিদ্যুতের পোল উপড়ে গিয়ে রাস্তায় পড়ে আছে। বেশ কয়েকটি বাড়ির উপর গাছ পড়েছে।

এলাকার লোকজন আরও জানান প্রতি বছর বর্ষা কালে পুর্ণভবা নদীর কয়েকটি স্থানের বাঁধ ভেঙ্গে নদীর পানি ঢুকে ওই এলাকায় বন্যার সৃষ্টি হয়। ¯স্থানীয় লোকজন সাধ্য মত নদী তীরের ওই স্থানে মাটি দিয়ে উঁচু করে বাঁধ দিলেও তা প্রবল পানির তোড়ে টিকে থাকেনা।

প্রতি বছর বন্যার পানিতে ওই এলাকার মানুষের ঘর বাড়ি,পুকুর জমির ফসল,গাছ পালা ,রাস্তা ঘাট পানির নিচে তলিয়ে যায়। এ ধরনের বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও তা প্রতিরোধে তেমন কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়না।

ওই গ্রামের বাসিন্দা আইযুব আলী, ইসাহাক,আব্দুন নুর জানান গ্রামবাসী নিজ উদ্যোগে নদীর ওই ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধে মাটি ভরাট করে। চলতি মৌসমে নদীর পানি বৃদ্ধি হয়ে সেই ভাঙ্গা স্থান গুলো দিয়ে প্রবল বেগে গ্রামে পানি ঢুকে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে।

গ্রামবাসী  ক্ষোভের সাথে জানান বন্যা ও ঘুর্নীঝড়ে তাদের ঘর বাড়ি,গাছ পালা, জমির ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা জানা সত্বেও অদ্য পর্যন্ত সরকারী কোন কর্মকর্তা ,এলাকার চেয়ারম্যান মেম্বার গণ তাদের গ্রামে এসে কোন খোঁজ খবর নেয়নি তাদের ভাগ্যে জোটেনি সরকারী ত্রান সহায়তা।

গ্রাম গুলো থেকে বন্যার পানি নেমে গেলেও রাস্তা ঘাট গুলো চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। রাস্তার উপর ঝড়ে উপড়ে পড়া গাছ পালা না সরানোর ফলে গ্রামবাসীর চলা চলে সমস্যা হচ্ছে। অপর দিকে পল্লিবিদ্যুতের পোল ভেঙ্গে ও লাইন মিটার, ড্রপতার ছিড়ে যাওয়ার কারনে ওই গ্রামের অধিকাংশ বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

গ্রামের একাধিক লোকজন অভিযোগ করেন যে ক্ষতিগ্রস্থ ওই বাড়ি গুলোর বিদ্যুৎ সংযোগ সচল করতে হলে জৈনক ব্যক্তি সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছেন। এ বিষয়ে পল্লিবিদ্যুতের স্থানীয় কর্মকর্তা রুহুল আমীন এর সাথে কথা হলে তিনি জানান বিদ্যুতের সংযোগ সচল করতে জোরালো ভাবে কাজ চলছে। নিয়ম অনুযায়ি পর্যায়ক্রমে সকল সংযোগ সচল করা হবে।

পল্লিবিদ্যুৎ অফিসের কোন কর্মকর্তা ও কর্মচারী এ ধরনের অবৈধ অর্থ লেনদেনে জড়িত নাই। সীমান্ত ঘেঁসা পূর্ণভবা নদী তীরের ৪/৫টি গ্রামের প্রায় ৫/৬ হাজার মানুষ যুগযুগ ধরে এধরনের সমস্যার মধ্যে দিয়ে জীবন যাপন করছেন।

এবারে বন্যা ও ঘুর্ণী ঝড়ে গ্রাম গুলোর মানুষের বসত বাড়ির অবস্থা লন্ডভন্ড হলেও এ পর্যন্ত সরকারী ত্রান সহায়তা না পাওয়ার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড সদস্যের অবহেলা ও দায়সারা মনোভাব কে এলাকাবাসী দায়ি করছে।

এ বিষয়ে পাতাড়ী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড সদস্য ফজলুর রহমানের সাথে ফোনে কথা হলে তিনিও জানান যে বন্যা ও ঘুর্ণীঝড়ে তার নিজের বাড়িও মাঠের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তিনি অতি সত্বর গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থদের নাম তালিকা তৈরী করে উপর মহলে দাখিল করবেন।

সীমান্তবর্তী পুর্ণভবা নদীর পুর্ব তীরে অবস্থিত আদাতলা,হাঁড়িপাল,কাঁড়িয়াপাড়া, কাউয়াভাসা ও জালসুকা গ্রামের অবহেলিত জনসাধারনের চলমান সমস্যা গুলোর দ্রুত সমাধানে এলাকাবাসী সরকারের  সহযোগীতা কামনা করছেন।

স/আ.মি