ভার্চ্যুয়াল কোর্টে জালিয়াতি: ৫ আসামির জামিন বাতিল

জালিয়াতি করে জামিন নেয়ার অভিযোগে খুলনার দিঘলিয়ার টিপু শেখ হত্যা মামলার ৫ আসামির জামিন বাতিল করেছেন উচ্চ আদালত। একইসঙ্গে তারা যদি জামিনে বেরিয়ে যান তাহলে সাত দিনের মধ্যে ৫ আসামিকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়ে আইনজীবীকে শোকজ করা হয়েছে। আর তারা যদি আত্মসমর্পণ না করে তাহলে তাদের গ্রেফতারে খুলনার এসপিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও তাদের পক্ষে লড়াই করা আইনজীবী আবু হেনা মোস্তফা কামাল আর ভার্চ্যুয়াল কোর্টে আপাতত মামলা পরিচালনা করতে পারবেন না।

বিষয়টি রাষ্ট্রপক্ষ আদালতের নজরে আনার পর বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিমের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার (১০ জুন) এসব আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ। বাদী পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট বিএম সুলতান মাহমুদ।

গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার পরবিলার টিপু শেখকে অতর্কিত হামলা করে খুন করা হয়। পরে তার ছেলে আলমগীর শেখ থানায় মামলা দায়ের করেন।

আলমগীর শেখের এজাহার অনুসারে জানা যায়, ৬ সেপ্টেম্বর বিকাল সাড়ে ৫টায় খুলনার দিঘলিয়া থানার পরবিলার টিপু শেখকে গাজীরহাট বাজারের পাশে কাঠালতলা ভ্যান স্ট্যান্ডে দিনের বেলায় ৩২ আসামিসহ অজ্ঞাতপরিচয় ৮/১০ জন আসামি অতর্কিত হামলা করে। আসামিরা তার পিতার মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে উল্লাস করে চলে যান। পরে চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেলে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় এজাহারনামীয় ৩২ আসামির মধ্যে ৫ আসামি হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন।

তারা হলেন, সোহাগ শেখ, সেলিম শেখ, জুয়েল শেখ, লুৎফর শেখ ও আব্দুল্লাহ মোল্লা। গত ১৮ মে ভার্চ্যুয়াল আদালত তাদের নিয়মিত আদালত খোলা হওয়া পর্যন্ত জামিন দেন। তাদের আইনজীবী ছিলেন আবু হেনা মোস্তফা কামাল।

জালিয়াতির বিষয়টি উল্লেখ করে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ বলেন, ১৮ মে তারা জামিন পান। এরমধ্যে এ মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী বিএম সুলতান মাহমুদ জানতে পারেন তারা জালিয়াতি করেছে। তিনি বিষয়টি আমাদের অবহিত করেন। এরপর খবর নিয়ে দেখলাম ভুয়া এজাহার বানিয়ে অভিযোগ বদল করে তারা জামিন নেন। এছাড়া এ মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে ২১ ডিসেম্বর। অথচ তারা বলেছে মামলা তদন্তনাধীন।

আজ (মঙ্গলবার) বিষয়টি আবেদন আকারে আদালতের নজরে আনা হয়েছে। আদালত তাদের জামিন বাতিল করেছেন, যদি তারা কারাগার থেকে বেরিয়ে যান তাহলে ৭ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে বলেছেন। যদি আত্মসমর্পণ না করেন তাহলে তাদের গ্রেফতার করতে খুলনার এসপিকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। তাদের আইনজীবীকেও শোকজ করেছেন। এছাড়া আপাতত তাদের পক্ষের ওই আইনজীবী আর ভার্চ্যুয়াল আদালতে মামলা পরিচালনা করতে পারবেন না বলে আদালত আদেশ দিয়েছেন।