সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
আইসিসির নতুন পরিচালনা কাঠামো ও আর্থিক সংস্কার প্রস্তাব পাস হওয়ায় বেশ বিপাকে পড়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। আগামী জুনে আইসিসির বার্ষিক সভায় নতুন সংস্কার প্রস্তাব চূড়ান্ত হবে।
নতুন সংস্কার প্রস্তাব পাস হলেও আইসিসি থেকে সবথেকে বেশি অর্থ পাবে ভারতই। তবে আগের চেয়ে ১৫০ মিলিয়ন ডলার কম পাবে ভারত। আগের প্রস্তাব অনুযায়ী, ভারতের পাওয়ার কথা ছিল ৪৪০ মিলিয়ন ডলার। কিন্তু নতুন প্রস্তাবে তারা পাবে ২৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। পূর্বের ‘তিন মোড়ল তত্ত্ব’ যদি থাকত তাহলে আইসিসির রাজস্ব থেকে ৫৭০ ডলার বিসিসিআইয়ের অ্যাকাউন্টে যেত। ‘তিন মোড়ল তত্ত্ব’ও এখন বাতিলের খাতায়। সব মিলিয়ে আইসিসি থেকে মোটা অঙ্কের আয় হারাচ্ছে ভারত।
বড় অঙ্কের অর্থ হারানোয় ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় আসন্ন চ্যাম্পিয়নস ট্রফি বর্জন করতে পারে বিসিসিআই। ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো এখন পর্যন্ত ইতিবাচক কোনো খবর প্রকাশ করেনি। যদি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ভারত বর্জন করে তাহলে কী হবে? ভারতীয় গণমাধ্যম বলছে, ভারতকে ছাড়াই চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজন করবে আইসিসি। বড় আর্থিক ক্ষতি হবে তা জেনেও চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজন করবে তারা।
ভারত যদি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অংশ না নেয় তাহলে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আমেজ হারাবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আইসিসির ইভেন্টগুলোতে ভারতের সফলতার ওপর আইসিসি আয় নির্ভর করে। ২০০৭ বিশ্বকাপ যার সেরা প্রমাণ। সেবার বাংলাদেশের কাছে হেরে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেয় ভারত। আয়ের দিক থেকে ২০০৭ বিশ্বকাপ ছিল তলানিতে। ২০১১ বিশ্বকাপে ভারত ফাইনাল পর্যন্ত যাওয়ায় ২০০৭ সালের ক্ষতি পুষিয়ে নেয় আইসিসি। পাশাপাশি ভারত চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় আইসিসির কোষাগারে জমা হয় কাড়ি কাড়ি অর্থ।
২০১৫ বিশ্বকাপেও আইসিসি বিরাট অর্থের লাভবান হয়। ভারত সেমিফাইনাল পর্যন্ত খেলায় আইসিসি প্রত্যাশিত আয় করে। ধারণা করা হচ্ছিল, ২০১৩ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি হবে শেষ আসর। কিন্তু ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ভারত চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় আইসিসি টুর্নামেন্ট চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
এ আসরের উত্তেজনা শুরু থেকে ছড়িয়ে দিতে ভারত ও পাকিস্তানকে একই গ্রুপে রাখে আইসিসি। এবং প্রথম ম্যাচে দুই দলকে মাঠে নামানোর সিদ্ধান্তও হয়। যার ফলাফলও পেয়েছে আইসিসি। ভারত ও পাকিস্তানের প্রথম ম্যাচের টিকিট কয়েক মিনিটের মধ্যে বিক্রি করে দেয় আইসিসি। যদি ভারত-পাকিস্তান প্রথম ম্যাচে না খেলে তাহলে টিকিটের পুরো অর্থ আইসিসিকে ফেরত দিতে হবে।
টিভি স্বত্ব থেকে সবথেকে বড় আয় আইসিসির। টিভিতে খেলা দেখা দর্শকদের ওপরও আয় নির্ভর করে। নিঃসন্দেহে ভারতের দর্শক অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায় বেশি। ভারত যদি অংশ না নেয় তাহলে ‘ফ্লপ’ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। পাশাপাশি কোহলি, ধোনিদের খেলার সুযোগ না হয় তাহলে বড় সংখ্যক দর্শক মুখ ফিরিয়ে নেবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি থেকে। ভারতীয় গণমাধ্যম স্পোর্টসকিডা এক পরিসংখ্যানে বলছে, চ্যাম্পিয়নস ট্রফি থেকে ভারত নিজেদের নাম তুলে নিলে প্রত্যাশিত আয়ের অর্ধেকও আয় করতে পারবে না আইসিসি।
২০১৬ সালে যুব বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া নিরাপত্তা অজুহাতে অংশ না নেওয়ায় আয়ারল্যান্ডকে বিশ্বকাপে সুযোগ তৈরি করে দেয়। এবার ভারত যদি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অংশ না নেয় তাহলে সুযোগ পেতে পারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
সূত্র: রাইজিংবিডি