সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক :
লোকসভা নির্বাচনে যে সাত দফা বা পর্বের ভিত্তিতে ভোটগ্রহণ চলছে ভারতে, তার শেষ দফার শেষ দিন আজ শনিবার। আজকের ভোটগ্রহণের পর আগামী ৪ জুন ফলাফল ঘোষণা করবে ভারতের নির্বাচন কমিশন।
বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, পাঞ্জাব, হিমাচলসহ সাত রজ্যের ৫৭টি লোকসভা আসনে ভোটগ্রহণ চলছে। এসব রাজ্যের মোট ভোটারসংখ্যা ১০ কোটিরও বেশি।
বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ গণতন্ত্র বলে পরিচিত ভারতে এবারের লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছিল গত ১৯ এপ্রিল। প্রায় দেড় মাস ধরে চলল এই বিশাল কর্মযজ্ঞ।
এবারের নির্বাচন ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এবং ক্ষমতাসীন বিজেপির শীর্ষ নেতা নরেন্দ্র মোদির সামনে টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ এনে দিয়েছে, যা স্বাধীন ভারতের গত ৭৭ বছরের ইতিহাসে বিরল। মোদি নিজেও এ ব্যাপারে বেশ ভালোভাবেই ওয়াকিবহাল। গত প্রায় দেড় মাসে ভারতজুড়ে যত প্রচার-প্রচারণাসভা করেছেন মোদি, প্রায় প্রত্যেকটিতেই জনগণকে ভোটকেন্দ্রে এসে ভোট দেওয়ার উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ভারতে প্রতি পাঁচ বছরে একবার লোকসভা নির্বাচন হয়। ২০১৪ সালের নির্বাচন থেকে বিজেপির বিজয়রথ শুরু, পরে ২০১৯ সালের নির্বাচনেও বিশাল বিজয় পায় বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ)। অন্যদিকে টানা দুই নির্বাচনে পরাজয়ের জেরে রাজনীতিতে কার্যত বেশ খানিকটা কোনঠাসা অবস্থায় পড়ে ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস। দলের শীর্ষ নেতা রাহুল গান্ধীর ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্নও ফিকে হয়ে যায়।
তবে ভারতের অনেক রাজনীতি বিশ্লেষকের মতে, এবারের নির্বাচনে ঘুরে দাঁড়ানোর বেশ ভালো সম্ভাবনা রয়েছে কংগ্রেসের; আর এই সম্ভাবনার মূলে রয়েছে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক জোট ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স (ইনডিয়া)। ২০২৩ সালের জুলাই মাসে গঠিত এই জোটে রয়েছে বিজেপিবিরোধী ২৬টি রাজনৈতিক দল। এসব দলের মধ্যে কয়েকটি দল বিভিন্ন রাজ্যের রাজ্য সরকারে ক্ষমতাসীনও রয়েছে।
ফলে বিগত দুই নির্বাচনের তুলনায় এবারের লোকসভা নির্বাচন ছিল অনেক বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। ভারতের রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, এবারের নির্বাচনে ইনডিয়া জোটের জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে, তবে কম; আর বিজেপি যদি নির্বাচনে জেতে, সেক্ষেত্রে গত দুই নির্বাচনের তুলনায় কম সংখ্যক আসন পাবে দলটি।
ইনডিয়া জোটের শীর্ষ নেতা রাহুল গান্ধী মনেপ্রাণে নরেন্দ্র মোদির শোচনীয় পরাজয় চাইছেন। অন্যদিকে এনডিএ জোটের শীর্ষ নেতা নরেন্দ্র মোদি ব্যাপকভাবে আশা করছেন—নির্বাচনে ইনডিয়া জোটের ভরাডুবি ঘটবে এবং সেই ভরাডুবির দায় মাথায় নিয়ে রাজনীতি থেকে বিদায় নেবেন রাহুল।
নির্বাচনে কে জয়ী হবে— তা জানার জন্য অপেক্ষা করতে হবে আগামী ৪ জুন পর্যন্ত। কারণ ওই দিনই ফলাফল ঘোষণা করবে ভারতের নির্বাচন কমিশন।
তার আগে অবশ্য সংবাদমাধ্যম ও বেসরকারি পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলো আনুমানিক ফলাফল জানাবে; কিন্তু ভারতের জনগণ আনুমানিক ফলাফলের ওপর তেমন ভরসা করেন না। কারণ অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, আনুমানিক ফলাফলের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত ফলাফলের কোনো মিল নেই।