ভারতে করোনায় মৃত্যু ছাড়াল ৯৫ হাজার, সংক্রমণ ৬০ লাখ

করোনাভাইরাস মহামারিতে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে বিপর্যয়ের মুখে থাকা ভারতে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা ৬০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। একই সঙ্গে এই ভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যাও দেশটিতে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।

সোমবার দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৮২ হাজার ১৭০ জন; এ নিয়ে মোট আক্রান্ত ৬০ লাখ ৭৪ হাজার ছাড়িয়েছে। এছাড়া ভাইরাসটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন এক হাজার ৩৯ জন। মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ভারতে মারা গেছেন ৯৫ হাজার ৫৪২ জন। দেশটিতে করোনায় মৃত্যুর হার প্রায় ১ দশমিক ৬ শতাংশ।

ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলছে, বিশ্বজুড়ে করোনা সংক্রমণের শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৭৩ লাখের বেশি মানুষ। যুক্তরাষ্ট্রের পর বিশ্বে সংক্রমণে দ্বিতীয় স্থানে আছে ভারত।

১৩০ কোটিরও বেশি মানুষের এই দেশটিতে করোনা মহামারি আরও ভয়াবহ হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। দারিদ্র-পীড়িত বিভিন্ন প্রদেশের অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ কিছু শহর ও গ্রামে ভাইরাস শনাক্তের সক্ষমতা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতূল হওয়ায় এই শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

গত মাসের শেষের দিক থেকে একদিনে বিশ্বে সর্বোচ্চ সংক্রমণ শনাক্ত হতে শুরু করে ভারতে। চলতি মাসের প্রায় প্রত্যেকদিনই দেশটিতে ৮০ থেকে ৯০ হাজার মানুষের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।

রোববার দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাড়ি থেকে বের হলেই জনগণকে মাস্ক পরার আহ্বান জানিয়েছেন। মাসিক রেডিও অনুষ্ঠান মান কি বাতে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অস্ত্র এসব বিধি-নিষেধ। প্রত্যেক নাগরিকের জীবন বাঁচানোর জন্য এসবই গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র।

দেশটির বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত মুম্বাই, রাজধানী নয়াদিল্লি-সহ প্রধান প্রধান শহরগুলোতে করোনার প্রাদুর্ভাব ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। শহরের গণ্ডি পেরিয়ে করোনার প্রকোপ শুরু হয়েছে প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলেও। করোনা বিস্তারের চলমান ধারা অব্যাহত থাকলে প্রত্যন্ত অঞ্চল ও ঘনবসতিপূর্ণ শহরগুলোর স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন দেশটির স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

গত মার্চে দেশটিতে করোনার বিস্তার ঠেকাতে কঠোর লকডাউন জারি করা হয়। প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পেলেও ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সরকার পুনরায় লকডাউন আরোপের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছে। এর পরিবর্তে ধীরে ধীরে সবকিছু স্বাভাবিক করার পথে হাঁটছে সরকার।

ইতোমধ্যে দেশটির কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হয়েছে। চালু করা হয়েছে ট্রেন, মেট্রো, অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচল, বাজার ও রেস্টুরেন্ট। তবে মহামারির লাগাম টানতে নতুন করে কিছু বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেসের (এআইআইএমএস) মেডিসিনের অধ্যাপক আনন্দ কৃষ্ণ ফরাসী বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেন, যারা ভাইরাসে সংক্রমিত হচ্ছনে তাদের চিকিৎসার দিকে এখন নজর দেয়া উচিত। কমিউনিটি পর্যায়ে সংক্রমণ বেশ জোরালভাবে ছড়িয়েছে।

 

সূত্রঃ জাগো নিউজ