ভারতজুড়ে করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু

ভারত জুড়ে শুরু হল করোনার ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচি। শনিবার সকাল ১০.৩০ মিনিটে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিশ্বের বৃহত্তম ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এরপরই গোটা দেশে শুরু হয়ে যায় কর্মসূচি। দেশের প্রতিটি রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল মিলিয়ে ৩০০৬ টি কেন্দ্রে এই টিকা দেওয়া হয়। প্রায় তিন লাখের বেশি মানুষ প্রথম দিন টিকা নেন।

কেন্দ্রের নির্দেশ অনুসারে প্রথম দফায় করোনা যোদ্ধা অর্থাৎ স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ, সেনাবাহিনীর সদস্যসহ অন্য ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কারদের এই টিকা দেওয়া হয়। সমস্ত নিয়ম মেনেই তাদের নাম আগে থেকেই কো-উইন অ্যাপে নথিভুক্ত করে এই টিকা দেওয়া হয়। টিকা গ্রহণের পর কিছুক্ষণ পর্যবেক্ষণে রাখা হয় টিকা গ্রহীতাদের। এরপর বাড়ি যাওয়ার অনুমতি মেলে। টিকার প্রথম ডোজ নেওয়ার ২৮ দিনের মাথায় দ্বিতীয় ডোজ নিতে হবে। দুইটি ডোজ সম্পন্ন হওয়ার পর ১৪ দিন পর রক্তরসে অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়া শুরু হবে।
এদিকে গোটা ভারতের সাথে পশ্চিমবঙ্গেও নির্বিঘ্নে করোনার টিকাকরণ পর্ব শেষ হয়। রাজ্যটির সমস্ত জেলায় ও কলকাতায় ২১২ টি কেন্দ্রে একসাথ চলে এই টিকাকরণ। কলকাতাতে ১৯ টি সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে টিকাকরণ পর্ব চলে। এদিন কলকাতা মেডিকেল কলেজে কোভিড টিকা নেন পশ্চিমবঙ্গের শ্রম প্রতিমন্ত্রী ডা. নির্মল মাঝি।
কেন্দ্রের ঘোষণা অনুসারে সপ্তাহে ৪ দিন চলবে এই টিকাকরণ কর্মসূচি। প্রতিদিন ১০০ জনকে টিকা দেওয়া হবে। এদিন রাজ্য সরকারের সচিবালয় নবান্ন থেকে ভার্চুয়ালি ভাবে গোটা কর্মসূচির ওপর নজরদারি চালান মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যনার্জি।

মূলত ‘কো-উইন’ অ্যাপস’এর মাধ্যমেই পুরো প্রক্রিয়াটি নিয়ন্ত্রিত হয়। কোথায় কতটা ভ্যাকসিন মজুদ আছে, কত তাপমাত্রায় তা মজুদ করা হচ্ছে, যারা টিকা পাচ্ছেন তাদের ট্র্যাকিং করা, ড্রপ আউট, কত পরিমান টিকা ব্যবহার করা হল- এই সবটাই জানা যাবে এই অ্যাপের মাধ্যমে। যারা টিকা পাচ্ছেন তদের লিঙ্গ, বয়স ও কোমবির্ডিটি অনুযায়ী বিভাজনও পাওয়া যাবে এই অ্যাপের মাধ্যমে। একইসাথে ভ্যাকসিন নেওয়ার পর কোন একটি জায়গা বা কেন্দ্র থেকে যদি কোন প্রতিকূল ঘটনার খবর পাওয়া যায় সেটাও চিহ্নিত করবে এই অ্যাপ।

বিশ্বের বৃহত্তম টিকাকরণ কর্মসূচি আখ্যায়িত করে মোদি বলেন ‘গোটা বিশ্বে যে ১০০ টির বেশি দেশে জনসংখ্যা ৩ কোটিরও কম সেখানে ভরত প্রথম ধাপেই ৩ কোটি মানুষকে টিকা দেবে। তার অভিমত গোটা বিশ্বে শিশুদের যে টিকা দেওয়া হয়, তার শতকরা ৬০ ভাগ ভারতে তৈরি হয়। সেই কারণে ভারতের বিশ্বাসযোগ্যতা আছে। ভারতের এই টিকা যে বিশ্বের অন্য টিকার থেকে অনেক সস্তা সেটাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

এই কাজে বিজ্ঞানীদের প্রশংসা করে তিনি বলেন ‘যে সব বিজ্ঞানীরা ভ্যাকসিন গবেষণার সাথে যুক্ত, তারা বিশেষ প্রশংসার দাবিদার। কারণ গত কয়েক মাস ধরে তারা করোনার টিকা তৈরিতে ব্যস্ত ছিল-যেটা তৈরি করতে কয়েক বছর লাগে।