ভবানীগঞ্জ পৌর সড়কে সীমাহীন জনদূর্ভোগ

বাগমারা প্রতিনিধি
পৌরসভা প্রতিষ্ঠার দুই যুগ পেরিয়ে গেলেও রাস্তা ঘাটের বেহলা দশায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ভবানীগঞ্জ পৌরসভায়। এই পৌরসভা উপজেলা হেডকোয়ার্টার হওয়া সত্বেও এখানকার রাস্তাঘাটসহ ড্রেনজ ব্যবস্থায় আধুনিকতার ছোয়া নেই। সামান্য বৃষ্টিতেই দেখা দেয় তীব্র জ্বলাবন্ধতা। রাস্তায় অসংখ্য খানাখন্দকে ভরা। তীব্র যানজটসহ নানাবিধ সমস্যায় অতিষ্ঠ পৌরবাসী।

এই পৌরসভার ভবানীগঞ্জ কলেজ মোড় থেকে গোডাউন মোড় পর্যন্ত রাস্তাটিতে একাধিক স্থানে রয়েছে বিশাল গর্ত। ব্যাপক ঝুঁকি নিয়ে এই রাস্তা দিয়ে চলে যানবাহন। প্রায় যানবাহন উল্টে দুর্ঘটনা ঘটছে। আসন্ন নির্বাচন ঘনিয়ে আসলেও এসব জনদুর্ভোগ নিয়ে পৌরকর্তৃপক্ষের বিন্দুমাত্র মাথাব্যাথা নেই বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পৌরবাসীরা।

সরেজমিন শুক্রবার ভবানীগঞ্জ কলেজ রোড থেকে গোডাউন মোড় পর্যন্ত রাস্তাটি ঘুরে দেখা দেছে সেখানে বিশাল বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, এটি ভবানীগঞ্জ বাজারের বাইপাছ রাস্তা হওয়ায় মোহনপুর, বিহানালী ও ঝিকরা এলাকার যানবাহন গুলো এই রাস্তা দিয়ে যাতাযাত করে থাকে। কিন্তু বর্তমানে এই রাস্তাটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ফলে ভবানীগঞ্জ বাজারের উপর দিয়ে এখন ওইসব এলাকার যানবাহন গুলো চলাচল করছে। এতে বাজারে তীব্র যানযটের সৃষ্টি হচ্ছে।

মাছ পরিবহনের ট্রাকের ড্রাইভার আক্কাস জানান, তারা আগে মোহনপুর থেকে মাছ নিয়ে কলেজ মোড় হয়ে গোডাউন মোড় হয়ে তাহেরপুরে যেত। এখন ওই রাস্তা চলাচলের একেবারের অযোগ্য হওয়ায় তারা বাধ্য হয়ে ভবানীগঞ্জ বাজারের মধ্যে দিয়ে ট্রাক নিয়ে তাহেরপুর যাচ্ছেন। একই কষ্টের কথা জানালেন কয়েকজন অটো, ভ্যান ও পিকআপ চালকরা।

তারা জানান, কলেজ মোড় থেকে গোড়াউন মোড় পর্যন্ত রাস্তাটি দীর্ঘদিন সংস্কারহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই এখানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। তখন এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করা কঠিন হয়ে পড়ে।এছাড়া এ রাস্তায় ওভারলোড ট্রাক চলার কারণে অল্পতেই রাস্তা ভেঙ্গে যায়। ভবানীগঞ্জ বাজার বনিক সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম হেলাল জানান, রাস্তাটি নিয়ে মানুষের দূর্ভোগের শেষ নেই। এর আগে একাধিকবার আমি নিজে উদ্যোগ নিয়ে রাস্তাটিতে রাবিস(ভাংগা ইট খোয়া) ফেলেছি। সেখানে যানবাহনের অতিরিক্ত চাপের কারণে তা বেশিদিন টিকছে না।

তিনি দাবী করে বলেন, এই বাইপাছ রাস্তাটি খুবই গুরুত্বপূর্ন। রাস্তটিকে আর সংস্কার না করে পুরোটা ভেঙ্গে নতুন করে তৈরি করা দরকার। এতে ভবানীগঞ্জ বাজারের যানযট অনেকটাই কমে যাবে। ভবানীগঞ্জ বাজারের অন্যন্যা ব্যবসায়ীরা একই অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, কলেজ মোড় থেকে গোডাউন মোড় পর্যন্ত রাস্তাটি অবিলম্বে মেরামত করার পাশাপশি ভবানীগঞ্জ বাজারের যে রাস্তাটি প্রশস্থকরন করার জন্য যেখানে ইটের খোয়া বিছিয়ে রাখা হয়েছে সেখানে অভিলম্বে কার্পেটিং করা প্রয়োজন। এছাড়া এই রাস্তার পাশ দিয়ে পানি নিষ্কাষনের জন্য ড্রেন নির্মাণ করা অতীব জরুরী বলে তারা দাবী জানান।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ভবানীগঞ্জ পৌরসভার সহকারি প্রকৌশলী লিটন মিয়া জানান, আপাতত যানবাহন চলাচলের উপযুক্ত করার জন্য কলেজ মোড় থেকে গোড়াইন মোড় পর্যন্ত রাস্তা অতিদ্রুত সংস্কার করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই রাস্তাটি নতুন করে তৈরি করার জন্য আমরা মন্ত্রনালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছে। মন্ত্রনালয়ে থেকে সেটি পাশ হয়ে আসলে আশা করি আগামী অর্থবছরে রাস্তাটির কাজ করা সম্ভব হবে। এছাড়া তিনি আবহাওয়া জনিত কারণে ভবানীগঞ্জ বাজারের রাস্তাটিতে কার্পেটিংয়ের কাজ করা কিছুটা বিলম্বিত হচ্ছে উল্লেখ করে বলেন, আবহাওয়া ভালো হলে আমরা অতি দ্রুত বাজারের রাস্তায় কার্পেটিং শুরু করব।

এ বিষয়ে পৌর মেয়র আব্দুল মালেক মন্ডল একই অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, ওই রাস্তায়(কলেজ মোড় টু গোডাউন মোড়) আপাতত যান চলাচলের উপযোগি করার জন্য দ্রুত কাজ শুরু করা হবে। রাস্তাটি নতুন ভাবে করার জন্য মন্ত্রণালয়ে জোর তদবির করছি। আশা করি হবে। এখনও মাঝে মাঝে বৃষ্টি হচ্ছে তাই বাজারের রাস্তায় কার্পেটিং করা যাচ্ছে না।