ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের তাণ্ডব : আত্মরক্ষায় ব্যস্ত ছিল পুলিশ!

ছেলে বৌকে নিয়ে বিভৎসতা দেখতে বেরিয়েছেন রেহেনা বেগম। কাঁপা কণ্ঠে বললেন, ‘সবই তো শেষ। আর বাকি রইলো কি। মানুষ এত খারাপ হতে পারে ভাবা যায় না। সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কি দোষ করছিলো তারাই ভালো জানে।’

মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) দুপুর সোয়া একটার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ পৌর মিলনায়তন ও শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বরে দাঁড়িয়ে কথা হচ্ছিল পৌর মেড্ডার ওই নারীর সঙ্গে।

এর একটু আগে কথা হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু হোরায়রার সঙ্গে। সদর উপজেলা ভূমি অফিস দেখে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। এ প্রতিবেদককে তিনি বলেন, ‘একাত্তরের বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে নারকীয় এ তাণ্ডব। একাত্তরে পাক হানাদার বাহিনী যতটুকু না করেছে স্বাধীন বাংলার তাদের কিছু দোসর এর চেয়ে বেশি ঘটিয়েছে। আমরা এর বিচার চাই।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নারকীয় তাণ্ডবের পর এখনো পোড়া গন্ধ চারদিকে। ধ্বংসযজ্ঞের চিহ্ন সর্বত্র। সুরের রাজধানীতে অসুরের তাণ্ডব দেখতে আসা অনেকের চোখ গড়িয়ে পড়ছে পানি। তবুও ভীতি কাটিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার চেষ্টা করছে মানুষ।

সরজমিনে ঘুরে তাণ্ডবে অন্তত কয়েকশ’ কোটি টাকার ক্ষতি হওয়ার ধারণা পাওয়া যায়। এছাড়া পুড়ে ছাই হয়েছে অনেক অমূল্য সম্পদ। ২৮ মার্চ হেফাজতের ডাকা হরতালের দিন তান্ডব চালানো হয়েছে অন্তত শতাধিক সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, মন্দির, আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বাড়িতে। আগুনে পোড়া থেকে বাদ পড়েনি কোরআন শরীফও।

২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতাল সূত্র মতে, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন অন্তত ৯ জন। পুলিশসহ আহত হয়েছেন অন্তত দুই শত। এর মধ্যে প্রায় একশ’র বেশি পুলিশ রয়েছে। বাকি আহতরা আন্দোলনকারী ও পথচারী। জেলা পুলিশের একটি সূত্র জানায়, নিহতের সংখ্যা ১২।

এসব ঘটনায় প্রশাসনের বিরুদ্ধে নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ আনা হয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক পুলিশের বিরুদ্ধে নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন। পুলিশ আত্মরক্ষায় ব্যস্ত ছিলেন বলেও সরজমিনে ঘুরে তথ্য পাওয়া যায়। সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের প্রত্যাহার দাবি করা হয়েছে।

এদিকে তাণ্ডবের ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে পুলিশ। তাণ্ডবের ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় পাঁচটি ও আশুগঞ্জ থানায় দু’টি মামলা দায়ের হয়েছে। সব মামলা মিলিয়ে অজ্ঞাতনামা ৮ হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে। তবে ৯ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন ও সোনার বাংলা ট্র্রেনে হামলার ঘটনায়ও মঙ্গলবার বিকেল নাগাদ মামলা হয়নি।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশের ডিআইজিসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা হামলা ও অগ্নিসংযোগের শিকার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে আশ্বাসও দিয়েছেন তাঁরা। গত দুই দিন ধরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার ভিডিও চিত্র ধারণ করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক মূল্য নির্ধারণের কাজ চলছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার পুলিশের মহা-পরিদর্শক (আইজিপি) আসার কথা রয়েছে।

kalerkantho

আত্মরক্ষায় পুলিশ

২৬, ২৭ ও ২৮ মার্চ বিক্ষোভকারিদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন নিহত হন। এর মধ্যে প্রথমদিন একজন, দ্বিতীয় দিন পাঁচজন ও তৃতীয় দিন হরতাল চলাকালে তিন জন মারা যান বলে হাসপাতাল সূত্র জানায়। হরতালের দিন হামলা হয় পুলিশ লাইন, সদর থানা, সরাইল খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানা ও টোল প্লাজায়। ওই তিনটি প্রতিষ্ঠানে হামলার সময় পুলিশ প্রতিরোধ গড়ে তুলে। ওই সময়ই হতাহতের ঘটনা ঘটে। এর বাইরে পুলিশ প্রতিরোধ গড়ে তুলেনি বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে।

একাধিক সূত্র জানায়, পুলিশ লাইন ও সদর থানায় হামলা হলে পুলিশ আত্মরক্ষার কৌশল নেয়। শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালনের আহবান জানিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘আপনারা আমাদের উপর হামলা করবেন না। আমরাও আপনাদেরকে হরতাল পালনে বাধা দিবো না।’

সুর সম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গনের সামনে দায়িত্ব পালনকালে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) এক সদস্যও হরতালের দিন পুলিশের বিরুদ্ধে নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ আনেন। অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘আমার কাছে মনে হলো পুলিশ কেনা-বেচা হয়েছে। আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করলেও আন্দোলনকারীদের দমনে পুলিশের ভূমিকা ছিলো প্রশ্নবিদ্ধ।’

তবে পুলিশের এক পরিদর্শক এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। মঙ্গলবার দুপুরে প্রেস ক্লাবের সামনে দায়িত্ব পালনরত ওই পুলিশ কর্মকর্তা হরতালের দিনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, ‘সাত-আট বছরের এক শিশু আমাকে মারতে আসে। আমি কি তাকে গুলি করবো নাকি লাঠি দিয়ে পেটাবো বলেন। আমি তাকে কিছু না করলেও সে কিন্তু বারবারই আমার দিকে তেড়ে আসে। আমাদেরকে নানা কৌশলে এ ধরণের পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হয়েছে।’

প্রশাসনের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ এনেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আল-মামুন সরকার। একাধিকবার ফোন করেও প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো ধরণের সহযোগিতা পাওয়া যায়নি বলে তিনি অভিযোগ করেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র. আ. ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীও সোমবার দুপুরে প্রেস ক্লাবে হওয়া এক সংবাদ সম্মেলনে একই অভিযোগ এনেছেন। রবিবার মাদ্রাসা ছাত্রদের উপর কোনো হামলা হয়নি বলে তিনি জানান।

সোমবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময় পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘পুলিশ সাধ্য অনুযায়ি চেষ্টা করেছে।’ চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এ বি এম আজাদও জানান, প্রশাসন কৌশল অনুযায়ি সঠিক দায়িত্ব পালন করেছেন।

পুড়ল কোরআন শরীফ

হেফাজতের তান্ডব থেকে রক্ষা পায়নি পবিত্র কোরআন শরীফও। ওই দিন জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক শাহাদৎ হোসেন শোভনের বাসভবনের একটি ঘরে আগুন দিলে সেখানে থাকা কোরআন শরীফ পুড়ে যায় বলে নিশ্চিত করেছেন ওই নেতা।

মঙ্গলবার ক্ষতিগ্রস্থ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গিয়ে দেখা যায় এখনো বাতাসে পোড়া গন্ধ। সদর উপজেলা ভূমি অফিসের একটি কাগজও রক্ষা পায়নি আগুন থেকে। সেখানকার হামলা পরিকল্পিত বলেই ধারণা পাওয়া যায় প্রত্যক্ষদর্শী ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে। তাঁরা জানান, ওই অফিসে ঢুকে প্রথমেই সিসি ক্যামেরা ভেঙ্গে ফেলা হয়। পরে পানির লাইন কেটে ফেলা হয় যেন আগুন নেভানোর কাজে ব্যবহার না করা যায়।

কথা হলে সহকারি কমিশনার (ভূমি) এবিএম মশিউজ্জামান বলেন, ‘অফিসের একটি কাগজও অক্ষত নেই। এখানে জমি সংক্রান্ত অনেক রেকর্ড থাকে। যে কারণে সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হবে।’ আপাতত ওই অফিসের সেবা বন্ধ রাখা হয়েছে বলে তিনি জানান।

ভূমি অফিসের পাশেই সুর সম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সঙ্গীতাঙ্গন। সেখানে দায়িত্বরত ছিলেন কয়েকজন বিজিবি সদস্য। ভেতরে পোড়া দৃশ্য দেখে নিজেদের হতাশার কথা বলাবলি করছিলেন দুই সাংস্কৃতিমনা মানুষ। কথা হলে সঙ্গীতাঙ্গনের সাধারন সম্পাদক মনজুরুল আলম বলেন, ‘২০১৬ সালের ১২ জানুয়ারিও এখানে অগ্নিসংযোগ করা হয়।’ ১৯৫৬ সালে প্রতিষ্ঠার পর পাকিস্তান আমলে মৌলবাদ সরকার ক্ষমতায় থাকলেও দেশ স্বাধীনের আগে এ ধরণের ঘটনা ঘটেনি বলে তিনি জানান। এবারের ধ্বংসযজ্ঞে গান পাউডার ব্যবহার করা হয় বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

পোড়া গন্ধ আসে পৌরসভা কার্যালয়ের সামনে ও ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ মিলনায়তন থেকে। একাধিক ব্যক্তি পোড়া দৃশ্য দেখে চোখের পানি ধরে রাখতে পারছিলেন না। বিনোদনের এ মিলনায়তনে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয় বলে ধারণা পাওয়া যায়। ক্ষতিগ্রস্থ পৌর ভবনেও তালা দেখা যায়।

kalerkantho

অংশ নেয় প্যান্ট শার্ট পরা লোকজনও

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিভিন্ন সময়ে হওয়া হেফাজতে ইসলামের আন্দোলন চলাকালে আন্দোলনকারীদের হাতে সাধারনত লাঠিসোটা দেখা যায়। দাঁড়ি, টুপি পরা লোকজনই সাধারণত ওই আন্দোলনে অংশ নেন। তবে রবিবার হওয়া হরতালের সময় দা, হকিস্টিকসহ দেশীয় অস্ত্র দেখা গেছে। জিন্স প্যান্ট ও টি শার্ট পরা যুবকরাও এতে অংশ নেন। এসব বিষয়সহ সার্বিক পরিস্থিতিতে ধারণা পাওয়া যায়, হেফাজতে ইসলামের পাশাপাশি একটি ‘বিশেষ চক্রও’ হরতালের সময় যোগ দেয়। লাঠিসোটা হাতে দেখা যায় শিশুদেরকেও।

শ্রী শ্রী আনন্দময়ী কালীবাড়িতে হামলা হয় তিন দফা। পূজারি জীবন ভট্টচার্য জানান, প্রথম দফায় হরতাল সমর্থনকারিরা এসে হামলা চালায়। তাদের একজনের হাতে থাকা বালতিতে পাউডার জাতীয় কিছু ছিলো। পরবর্তীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র যারা মন্দিরের ভেতরে এসে নেশা করতো তারাও হামলায় অংশ নেয়। হামলার সময় কালী মন্দির থেকে স্বর্ণলংকারও লুট হয় বলে তিনি জানান।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদকও হেফাজতের পাশাপাশি জামায়াত-শিবিরসহ একটি মহল এ তান্ডবে অংশ নেয় বলে অভিযোগ করেছেন। হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর সাজিদুর রহমানও জানিয়েছেন, আন্দোলনকারিদের বাইরে একটি পক্ষ তাণ্ডব চালায়। তিনি অভিযোগ করেন, সংসদ সদস্যের নেতৃত্বে একটি মিছিল থেকে মাদ্রাসা ছাত্রদের উপর হামলা চালানো হয়।

ডিসি, এসপি’র প্রত্যাহার দাবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তাণ্ডবের ঘটনায় আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম প্রতিবাদ করেছে জেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা। মঙ্গলবার প্রেস ক্লাবের কর্মসূচি থেকে কার্যালয় ও সাংবাদিকদের উপর হামলার নিন্দা জানিয়ে হেফাজতে ইসলামের সংবাদ বর্জনের পাশাপাশি জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারের (এসপি) প্রত্যাহার দাবি করা হয়। এছাড়াও ব্রাহ্মণবাড়িয়াজুড়ে চলা তাণ্ডবের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিকরা।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব চত্বর থেকে সাংবাদিকরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। এরপর মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক (টি. এ. রোড) প্রদক্ষিণ করে আশিক প্লাজা পর্যন্ত গিয়ে পুনরায় প্রেস ক্লাব চত্বরে এসে শেষ হয়। এরপর সেখানে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় বক্তারা প্রেস ক্লাব ভবন ও সাংবাদিকদের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘অতীতের কোনো আন্দোলন-সংগ্রামের সময় প্রেসক্লাবে হামলার ঘটনা ঘটেনি। প্রেস ক্লাবের সভাপতির ওপর পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালানো হয়। যারা প্রেস ক্লাব ও সাংবাদিকদের ওপর হামলার সাথে জড়িত, তাঁদেরকে খুঁজে বের করার দায়িত্ব হেফাজতে ইসলামের নেতৃবৃন্দকেই নিতে হবে।’ পাশাপাশি ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরজুড়ে চালানো তাণ্ডবের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানান বক্তারা।

ফিরে দেখা

হেফাজত নেতা-কর্মীরা ২৮ মার্চ হরতাল চলাকালে সকাল থেকে দুপুর নাগাদ জেলা পরিষদ কার্যালয়, পৌর সভা কার্যালয়, ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সঙ্গীতাঙ্গন, প্রেস ক্লাব, আলাউদ্দিন খাঁ পৌর মিলনায়তন, সদর উপজেলা ভূমি অফিস, পুলিশ লাইন, সদর থানা, খাঁটি হাতা বিশ্বরোড হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি, শ্রী শ্রী আনন্দময়ী কালী বাড়ি, দক্ষিণ কালী বাড়ি, রেলওয়ে স্টেশন, শিল্পকলা একাডেমি, জেলা আওয়ামী লীগ ও সংসদ সদস্যের কার্যালয়, সরকারি গণগ্রন্থাগার, গ্যাস ফিল্ড কার্যালয়, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আল-মামুন সরকারের কার্যালয়, তাঁর নিজের ও শশুর বাড়ি, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবন, প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা চৌধুরী আফজাল হোসেন নেসারের বাড়ি, আওয়ামী লীগ নেতা শেখ আনার, জামাল খানের বাড়ি, বিজয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়ার কার্যালয়, ইউনির্ভাসিটি অব ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মোকতাদির চৌধুরী মহিলা কলেজ, বিজয়নগর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নাসিমা মুকাই আলীর বাড়ি, মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়, ছাত্রলীগ সভাপতি রুবেল হোসেনের বাড়ি, সাধারন সম্পাদক শাহাদৎ হোসেন শোভনের বাড়ি, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ ভাষা চত্বরের উন্নয়ন মেলা, ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল স্কুল, চৌধুরী মঞ্জিলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে।

kalerkantho

এছাড়া জেলার আশুগঞ্জ, সরাইলের একাধিক স্থানে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। আশপাশের ড্রেন থেকে কংক্রিটের স্ল্যাব উঠিয়ে রেললাইনে এনে রাখা হলে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। স্টেশনের কাছের রেলগেটের ব্যারিয়ার বাঁকা করে ফেলা হয়। রেললাইন থেকে ক্লিপ খুলে ফেলা হয়। তালশহর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনের মাঝখানে একটি সেতুতেও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পৌর এলাকার মূল সড়কের অনেক স্থানে বিদ্যুতের খুঁটি ফেলে রাস্তা আটকে রাখা হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবেও হামলা করে কাচ ভেঙে ফেলা হয়েছে। প্রেসক্লাবের সভাপতি দৈনিক জনকণ্ঠের স্টাফ রিপোর্টার রিয়াজউদ্দিন জামি প্রেসক্লাবে ঢোকার সময় তাঁর ওপর হামলা করা হয়। তাঁর মাথায় ছয়টি সেলাই লেগেছে। এছাড়া একুশে টিভির জেলা প্রতিনিধি মীর মো. শাহীন, ডেইলি স্টারের জেলা প্রতিনিধি মাসুক হৃদয়, এটিএন নিউজের ক্যামেরাপারসন সুমন রায়, আমাদের নতুন সময়ের জেলা প্রতিনিধি আবুল হাসনাত মো. রাফি, ডেইলি ট্রাইব্যুনালের জেলা প্রতিনিধি ইফতেয়ার উদ্দিন রিফাত, লাখো কণ্ঠের মো. বাহাদুর আলম হামলার শিকার হন।

 

সুত্রঃ কালের কণ্ঠ