বেঁচে থাকলে সুশান্তকেও জেলে যেতে হত

বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুতে তোলপাড় চলছে হিন্দি সিনেমার আঙিনায়। শুধু হিন্দি বললে ভুল হবে। এ মৃত্যুকে কেন্দ্র করে নানা তর্কে বিতর্কে জড়িয়েছে ভারতের প্রায় সব ইন্ডাস্ট্রির মানুষেরাই। তারমধ্যে আছেন প্রযোজক, পরিচালক ও অভিনয় তারকারা।

তবে বর্তমানে সুশান্তের মৃত্যু রহস্য উদঘাটনের চেয়ে সবার নজর বলিউডে মাদক সংশ্লিষ্টতা নিয়ে। এই অভিযোগে এরইমধ্যে সুশান্তের প্রেমিকা রিয়া চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যার জামিন দ্বিতীয় দফাতেও খারিজ করে দিয়েছে ভারতের আদালত।

এদিকে বম্বে হাইকোর্টে জামিনের আবেদনে রিয়া জানিয়েছেন, ‘সুশান্ত মাদকে আসক্ত অনেক আগে থেকে। নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য সে কায়দা করে আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যদের ব্যবহার করেছে। বাড়ির কর্মচারীদের নিজেই নির্দেশ দিত ওর জন্য গাঁজা বানিয়ে রাখতে। এমনকী সুশান্তের মানসিক সমস্যার কথা ওর পরিবারও জানত। আমাকে ও আমার পরিবারকে একেবারেই অকারণে ফাঁসানো হয়েছে।

সুশান্ত নিজেই যে শুধু ড্রাগ নিত এমন নয়। বাড়ির বাকি সদস্যদেরও মাদক সংগ্রহ কার জন্য নির্দেশ দিত সে। সুশান্ত বেঁচে থাকলে যদি ওর বিরুদ্ধে ড্রাগ নেওয়ার এই অভিযোগ উঠত তাহলে ওকেও জেলে যেতে হত। হয়তো ওর সাজা হত জামিনযোগ্য এবং খুব বেশি হলে এক বছরের কারাদন্ড হত। সুশান্ত আমার ভাইকেও সুযোগ পেয়ে ব্যবহার করেছে। নীরজকে প্রায়ই সুশান্ত অর্ডার করত ওর জন্য গাঁজা বানিয়ে রাখার জন্য। মৃত্যুর তিনদিন আগেও সুশান্তের নির্দেশে একটি বাক্সে গাঁজা ভরে রেখেছিল নীরজ। ওর মৃত্যুর পর বেডরুম থেকেই সেই খালি বাক্স পাওয়া যায়। এর থেকেই বোঝা যায়, নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য কীভাবে ও সবাইকে ব্যবহার করত।’

রিয়া তার জামিনের আর্জিতে আরও বলেন, ‘সুশান্তের বাড়ির লোকেরা তার ডিপ্রেশনের কথা জানত। তাও ওর বোনরা আদরের ভাইকে ফেলে চলে গিয়েছিল। লোকে এখন আমাকেই ডাইনি বলছে। আমার অওকাত নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। কিন্তু সুশান্ত তার নিজের ড্রাগের অভ্যেস বজায় রাখতে আমাদের দিয়ে ফায়দা তোলার চেষ্টা করেছে’।

রিয়া ও তার ভাই শৌভিকের অইনজীবী সতীশ মানশিন্দে বম্বে হাইকোর্টে দুই ভাইবোনের জামিনের আবেদন করেন। কিন্তু বুধবার খুব বেশি বৃষ্টি থাকায় সেই শুনানি হয়নি। জামিনের আবেদনপত্রে রিয়া আরও লিখেছেন, ‘তদন্তের স্বার্থে সুশান্ত বাদে বাকি সবার ফোনের কললিস্ট চেক করা হল। সুশান্তকে মাদক সরবরাহের জন্য তাদের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। অথচ সুশান্তের ফোন একবারও ঘেঁটে দেখা হল না। সুশান্তের কথামতো আমি মাদক কিনেছি। নিজে কোনোদিন নিইনি। আমি তো কোনো অন্যায় করিনি। বড় দাদার মতো শৌভিকের সঙ্গে মিশত সুশান্ত। ওদের দুজনের পছন্দ একই রকম ছিল। বুদ্ধি করে আমার ভাইকেও ব্যবহার করে নিল ও। নিজে মরে গিয়ে আমার সর্বনাশ করে গেল।’

প্রসঙ্গত, গত ৮ সেপ্টেম্বর এনসিবি গ্রেফতার করে রিয়া চক্রবর্তীকে। সুশান্তের মৃত্যুতে ড্রাগ যোগের হদিশ পেয়েই আলাদা করে তদন্ত শুরু করে এনসিবি। এরপরই রিয়া-সহ মাদক যোগে গ্রেফতার করা হয় ১৮ জনকে। তারপর থেকে বাইকুলা সংশোধনাগারেই রয়েছেন রিয়া চক্রবর্তী। আপাতত ৬ অক্টোপর পর্যন্ত তার জেল-হাজত চলবে।

 

সূত্রঃ জাগো নিউজ