শুক্রবার , ৯ জুন ২০১৭ | ১৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরীর খবর
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

বুথফেরত জরিপে ৩১৪ আসন কনজারভেটিভদের, ঝুলন্ত পার্লামেন্টের আভাস

Paris
জুন ৯, ২০১৭ ৪:২৯ পূর্বাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক: সবশেষ বুথফেরত জরিপে দেখা গেছে, সম্ভাব্য সর্বোচ্চ আসন কনজারভেটিভদের কাছে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও কেউ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছে না। ফলে একটি ঝুলন্ত পার্লামেন্টের অনুমান আরও বাস্তব হয়ে উঠছে। আগের জরিপগুলোতেও সামগ্রিক বিচারে কাছাকাছি ধরনের অনুমান প্রকাশিত হয়েছিল।

এর আগে গত তিনটি নির্বাচনে বুথ ফেরত জরিপের আভাস সত্য বলে প্রমাণিত হয়।

লেবার পার্টি এই নির্বাচনে আসন হারাবে বলে মনে করা হলেও বুথ ফেরত জরিপ বলছে, দলটি অনন্ত ৩৪টি আসন বেশি পাবে। তাদের মোট আসন হবে ২৬৬। স্কটিশ জাতীয়তাবাদী দল এসএনপি ৩৪টি এবং লিবারেল ডেমোক্র্যাটস দল ১৪টি আসন পাবে বলে আভাস দিচ্ছে বুথ ফেরত জরিপ।

৬৫০ সদস্যবিশিষ্ট ব্রিটিশ হাউস অব কমন্সে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ৩২৬ আসন। ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলের দখলে ছিল ৩৩১ আসন। কিন্তু ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন প্রশ্নে নিজের ক্ষমতা আরও নিরঙ্কুশ করতে প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে মধ্যবর্তী এই নির্বাচন দেন। ধারণা ছিল অন্তত এক শ আসনের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে থেরেসা মে ক্ষমতায় ফিরবেন। এখন বুথ ফেরত জরিপ দলটির এককভাবে ক্ষমতায় ফেরা নিয়েই আশঙ্কা জাগিয়ে দিয়েছে।

২০১৫ সালের নির্বাচনে বুথ ফেরত জরিপে কনজারভেটিভ দল ৩১৬টি আসন পাবে বলে আভাস দিলেও শেষ পর্যন্ত দলটি ৩৩১টি আসন পেয়েছিল। গতবারের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যদি না ঘটে তাহলে থেরেসা মে কে জোট করে সরকার গঠন করতে হবে।

ভোট দিয়ে বুথ থেকে বের হওয়া মানুষদের মধ্যে চালানো হয় বুথ ফেরত জরিপ। বিভিন্ন আসনের ২০ হাজার ভোটারের ওপর এ জরিপ চালানো হয়।

দ্য টেলিগ্রাফের খবরে বলা হয়েছে, এবারের নির্বাচনে যুক্তরাজ্য ঝুলন্ত পার্লামেন্ট পেতে পারে। ইউগভ-এর জরিপের ফলাফলের সূত্র ধরে পত্রিকাটি বলছে, কনজারভেটিভরা ২৭৪ থেকে ৩৪৫টি আসন পেতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, এর মধ্যে ৩১০টি আসনে জয়ী হতে পারে দলটি। যা গত নির্বাচনের চেয়ে কম। গত নির্বাচনে দলটি পেয়েছিল ৩৩০টি আসন। আর লেবার পার্টি পেতে পারে ২৫৭টি আসন। জরিপ অনুসারে, এসএনপি ৫০, এনআই ১৮, লিবারেল ডেমোক্র্যাটরা ১০টি আসনে জয়ী হতে পারে।

ব্রিটিশ পার্লামেন্ট হাউস অব কমন্সে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে হলে একটি দলকে অন্তত ৩২৬টি আসনে জয়ী হতে হবে। ফলে নির্বাচনি এই জরিপে কোনও দলেরই সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের পক্ষে যাচ্ছে না। যা দেশটিকে একটি ঝুলন্ত পার্লামেন্টের দিকেই ঠেলে দিতে পারে।

ঝুলন্ত পার্লামেন্ট ব্রিটেনের জন্য একেবারে নতুন নয়। সর্বশেষ ২০১০ সালেই কনজারভেটিভরা লিবারেল ডেমোক্র্যাটদের নিয়ে ঝুলন্ত পার্লামেন্ট গঠন করেছিল। এর আগে ১৯৭৪ সালে ঝুলন্ত পার্লামেন্ট গঠন করে লেবার পার্টিকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিয়েছিল কনজারভেটিভরা। অবশ্য, ওই পার্লামেন্ট বেশি দিন ঠেকেনি। মাত্র ৮ মাসের মাথায় নতুন নির্বাচন আয়োজন করা হয়েছিল। ১৯১০ ও ১৯২৯ সালেও ব্রিটেন ঝুলন্ত পার্লামেন্ট পেয়েছিল।

ঝুলন্ত পার্লামেন্ট মানেই জোট সরকার নয়। ব্রিটেনের সংবিধান অনুসারে ঝুলন্ত সংসদ মানে হচ্ছে হাউস অব কমন্সে কোনও একক দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকা। শুক্রবার ভোটের ফল ঘোষণার পর কোনও দল যদি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পায় তাহলে থেরেসা মে-ই প্রধানমন্ত্রী থাকবেন। নতুন সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত থেরেসা প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন। তবে সাধারণত নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানো প্রধানমন্ত্রী বা তার দল সরকার গঠনের উদ্যোগ নেন না। ফলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসনে জয়ী দল লেবার পার্টির নেতা হিসেবে জেরেমি করবিন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দিকে এগিয়ে যাবেন। এ কারণেই থেরেসা মে’র জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রয়োজনীয়তা বেশি।

ব্রিটিশ ক্যাবিনেট ম্যানুয়াল অনুসারে, নতুন পার্লামেন্ট অধিবেশন শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত দায়িত্বে থাকা প্রধানমন্ত্রী স্বপদে বহাল থাকবেন। পার্লামেন্ট বসার পর এমপিরা রাণির ভাষণের অনুমোদন দেবেন। এই হিসেবে ১৩ জুন পার্লামেন্ট অধিবেশন শুরু হবে। সেই দিন পর্যন্ত থেরেসা মে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন।

অবশ্য এটা একেবারে বাধ্যতামূলক নয়। ক্যাবিনেট ম্যানুয়াল অনুসারে দায়িত্বরত প্রধানমন্ত্রীকে এই সময়ের মধ্যে পদত্যাগের প্রত্যাশা করা হয়েছে। ফলে নির্বাচনে কনজারভেটিভরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে লেবার পার্টির পক্ষ থেকে তার পদত্যাগের দাবি তোলা হবে। পার্লামেন্টে কনজারভেটিভ বিরোধীরা লেবার পার্টির করবিনকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নিতে পারেন। আর যদি থেরেসা মে পদত্যাগ করেন তাহলে সরকার গঠনের প্রথম সুযোগ পাবেন করবিন। হাউস অব কমন্সে এমপিদের সমর্থন প্রয়োজন হবে তার।

সে হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। জোট বলতে ৩২৩ জন এমপি আছে এমন দুই বা ততোধিক পার্টির আনুষ্ঠানিক চুক্তিকে বোঝায়। চুক্তি অনুসারে সব দল থেকেই সরকারে মন্ত্রী নি য়োগ দেওয়া হয়। ২০১০-২০১৫ সাল পর্যন্ত কনজারভেটিভ-লিবারেল ডেমোক্র্যাটরা এভাবেই জোট সরকার গঠন করেছিল।

তবে এক্ষেত্রে বিকল্প ও ব্যতিক্রম রয়েছে। এমপিদের ভোটে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী অন্য কোনও দল থেকে মন্ত্রী নিয়োগ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তবে বিভিন্ন ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী ছোট দলগুলোর উপর নির্ভর করতে পারেন। সরকারের আর্থিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ড যেমন বাজেট ইত্যাদিতে ছোট দলগুলো সরকারকে সহযোগিতা করবে। অন্যথায় আস্থাভোটের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটাতে পারে। ছোট দলগুলো মন্ত্রীত্ব পাবে না কিন্তু তারা তাদের নীতির উপর দাঁড়িয়ে সরকার পরিচালনায় ভূমিকা রাখতে পারে। সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

সর্বশেষ - আন্তর্জাতিক