বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের মুখ ঢেকে ক্লাসে আসার নির্দেশ দিল তালেবান

আফগানিস্তানে বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীদের মুখ ঢাকা নেকাব পরে ক্লাসে আসতে হবে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে তালেবান।

আফগানিস্তানের নারীরা শুধু হিজাব পরে মুখ খোলা রেখেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে অংশ নিতে পারবে বলে এর আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতি থেকে সরে এসে নতুন নির্দেশনা জারি করল তালেবান।

তালেবানের উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয় স্থানীয় সময় শনিবার রাতে এই নির্দেশনা জারি করে বলে একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

ওই নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, পুরুষদের সঙ্গে একই ক্লাসে নারীরা বসতে পারবে না। আর নারীদের যদি একান্তই পুরুষদের সঙ্গে ক্লাস করতে হয় তাহলে ক্লাসরুমের মাঝামাঝি পর্দা দিয়ে ভাগ করে দিতে হবে।

নারী শিক্ষার্থীদের ক্লাস অবশ্যই নারী শিক্ষকরা নেবেন বলে নির্দেশনায় জানানো হয়েছে। নারী শিক্ষক না থাকলে সচ্চরিত্রের বয়স্ক পুরুষ শিক্ষকরাও পড়াতে পারেন।

এমনকি নারী ও পুরুষ শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকা ও বের হওয়ার পথও আলাদা হতে হবে ওই নির্দেশনায় জানানো হয়েছে।

আগামী সোমবার আফগানিস্তানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় খুলবে বলে জানা গেছে। এর আগেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এসব বিধিনিষেধ দিল তালেবান।

অনেক দশক ধরে ঐতিহ্যবাহী আফগানি বোরকা বিশ্বে আফগান নারীদের পরিচয় বহন করে আসছে। ঐতিহ্যবাহী এই বোরকা অধিকাংশ সময় নীল রঙের হয়ে থাকে। ভারী কাপড়ে বানানো এই বোরকা এমন ভাবে নকশা করা হয় যেন পরিধানকারীর পা থেকে মাথা পর্যন্ত ঢাকা থাকে।

বোরকার চোখের কাছে থাকে পাতলা জালের মতো কাপড়, যা দিয়ে পরিধানকারীরা বাইরের দৃশ্য দেখতে পান, কিন্তু বাইরের কেউ পরিধানকারীকে দেখতে পাবেন না।

১৯৯০-এর দশকে তালেবান সরকার যখন ক্ষমতায় আসে তখন কড়াকড়ি ভাবে এ ধরনের বোরকা পরে মেয়েদের বাইরে বের হওয়ার নির্দেশনা জারি করা হয়। কেউ এই নির্দেশ না মানলে তালেবানের নৈতিক পুলিশের হাতে জনসম্মুখে বেত্রাঘাতের মতো নির্মম শাস্তি পেতে হতো।

২০০১ সালে তালেবানের পতনের পর ধর্মীয় ও ঐতিহ্যগত কারণে অনেকে অনেকেই বোরকা পরা অব্যাহত রাখলেও লাখ লাখ আফগান নারী দেশটির নবযুগের সূচনার প্রতীক হিসেবে বোরকাকে প্রত্যাখ্যান করেছিল।

তবে তালেবান এবার পা থেকে মাথা পর্যন্ত ঢাকা বোরকার বদলে চোখ বের করে রাখা নেকাব পরার নির্দেশ দিয়েছে।

সূত্রঃ যুগান্তর