বিশ্বকাপ ফাইনালে ফিক্সিং : হঠাৎ তদন্ত সমাপ্তির ঘোষণা শ্রীলঙ্কার

‘২০১১ বিশ্বকাপের ফাইনাল ভারতের কাছে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে’- তৎকালীন শ্রীলঙ্কান ক্রীড়ামন্ত্রী মহিন্দানন্দ আলুথগামাগের এই অভিযোগ নিয়ে তোলপাড় পুরো ক্রিকেট দুনিয়ায়। শেষ পর্যন্ত অভিযোগ প্রমাণ করার জন্য তদন্ত শুরু করে শ্রীলঙ্কান পুলিশের বিশেষ গোয়েন্দা বিভাগ।

কিন্তু তদন্ত শুরু করার পর খুব বেশি সময় লাগলো না, মাত্র ৪-৫ দিনের মাথায় সেই তদন্তের সমাপ্তি টেনে দিলো লঙ্কান পুলিশের স্পেশাল ইন্টভেস্টিগেশন ইউনিট (এসআইইউ)। ২০১১ বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক কুমার সাঙ্গাকারাকে টানা ১০ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর পরই তদন্ত শেষ করার ঘোষণা দেয়া হয়।

শ্রীলঙ্কান পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত সমাপ্ত ঘোষণার কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, তারা যে টুকু তদন্ত করেছে, সেখানে কোনো প্রমাণই পাননি যে ২০১১ বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচটিতে ফিক্সিং করা হয়েছে। বরং, যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন, তাদের দেয়া বক্তব্যে সন্তুষ্ট লঙ্কান পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ।

ফিক্সিংয়ের অভিযোগ তদন্ত করতে গিয়ে ২০১১ বিশ্বকাপের আগে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের প্রধান নির্বাচক অরবিন্দ ডি সিলভা, তখনকার অধিনায়ক কুমার সাঙ্গাকারা এবং ওপেনার উপুল থারাঙ্গাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এসআইইউ। পুলিশের এক কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, ‘তারা আমাদের কাছে যে বক্তব্য এবং ব্যাখ্যা দিয়েছে, তাতে আমরা সন্তুষ্ট। সুতরাং, তদন্ত এখানেই সমাপ্ত ঘোষণা করা হলো।’

সেই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘তারা (যাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে) খুব সুন্দরভাবেই সবগুলো প্রশ্নের উত্তর এবং ব্যাখ্যা দিয়েছেন। বিশ্বকাপের ফাইনালে কেন স্কোয়াডে পরিবর্তন আনা হয়েছিল, সে ব্যাখ্যাও সুন্দরভাবে দেয়া হয়েছে। কোনো ধরনের ফিক্সিং কিংবা ভিন্ন কিছুর সঙ্গে জড়িত- এমন কোনো কিছুরই ইঙ্গিত পাইনি আমরা।’

২০১১ বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে হঠাৎ একাদশে চারটি পরিবর্তন আনে শ্রীলঙ্কা। যা নিয়ে তখনই প্রশ্ন দেখা দিয়েছিল। সে বিষয়টা নিয়েই খুঁটে খুঁটে প্রশ্ন করে উত্তর বের করার চেষ্টা করা হলো সে সময়কার অধিনায়ক সাঙ্গাকারার কাছ থেকে। যিনি বর্তমানে লন্ডনের বিখ্যাত মেরিলিবোর্ন ক্রিকেট ক্লাবের (এমসিসি) প্রেসিডেন্ট।

হঠাৎ যখন তদন্ত সমাপ্তি ঘোষণা করা হলো, ওই সময় জিজ্ঞাসাবাদে অংশ নেয়ার জন্য গোয়েন্দা দপ্তরে এসে হাজির হয়েছিলেন ২০১১ বিশ্বকাপের সহ-অধিনায়ক মাহেলা জয়াবর্ধনে। তিনি সাংবাদিকদের পরে বলেন, ‘আমরা তদন্ত কাজে সর্বোচ্চ সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি।’ তবে, বক্তব্য দিতে আসলেও তাকে আর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি।

বৃহস্পতিবার সাঙ্গাকারাকে টানা ১০ ঘণ্টা গোয়েন্দা দপ্তরে জিজ্ঞাসাবাদের পরই মাহেরা জয়াবর্ধনেকে ডেকে পাঠানো হয় তদন্ত কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে। সে কারণেই তিনি এসআইইউ অফিসে এসে হাজির হয়েছিলেন।