বিমান ক্রুদের পোশাকে পরিবর্তন, হাইহিল-পেন্সিল স্কার্টের পরিবর্তে ট্রাউজার-স্নিকার

ইউক্রেনের বিমান সংস্থা স্কাইআপ এয়ারলাইন্স। বিমান ক্রুদের পোশাকে পরিবর্তন আনছে প্রতিষ্ঠানটি। হাইহিল, পেন্সিল স্কার্টের পরিবর্তে তাদের দেয়া হচ্ছে আরামদায়ক জুতা (স্নিকার) এবং ট্রাউজার।

ইউক্রেনের বিমান সংস্থাটি সবচেয়ে কম খরচের। ফলে ২০১৬ সালে তা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এই মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। এমনকি সবচেয়ে বড় এয়ারলাইন্সগুলোর মধ্যে অন্যতম হয়ে উঠেছে। কিন্তু এর ক্রু, বিশেষ করে নারী কর্মীদের অধিক স্বস্তির জন্য পোশাকে পরিবর্তন আনার নীতি গ্রহণ করেছে। খবর এনডিটিভির।

স্কাইআপ এয়ারলাইন্স স্টাফদের ওপর একটি জরিপ পরিচালনা করে। তাতে দেখা যায়, নারীকর্মীরা হাইহিল, পেন্সিল স্কার্ট ও টাইট ব্লাউজ পরে অস্বস্তিকর অবস্থায় পড়েন। তাদের পছন্দ ঢিলেঢালা, একটু আরামদায়ক পোশাক। এক্ষেত্রে তারা যখন ফ্লাইটে থাকেন তখন স্নিকার ও ট্রাউজারকে বেশি পছন্দ বলে রায় দেন। ফলে বিমান সংস্থাও তাদের মতের মূল্য দিচ্ছে। তারা পোশাকে পরিবর্তন আনছে।

ফ্লাইট অ্যাটেন্ডেন্ট দারিয়া সোলোমেনায়া (২৭) বিবিসিকে বলেছেন, কিয়েভ থেকে জাঞ্জিবার পর্যন্ত গিয়ে আবার ফিরে আসতে ১২ ঘন্টার জার্নি। এতটা সময় হাইহিল পরে থাকা খুব বেদনার। এমন জুতা পরে হাঁটা খুব কষ্টের। এর মধ্যে রয়েছে চার ঘন্টার নিরাপত্তা তল্লাশি ও ক্লিনিং। তিনি বলেন, স্বাস্থ্যগত সমস্যা ছাড়াও আমার অনেক স্থায়ী সহকর্মীকে ডাক্তারের কাছে ছুটে যেতে হয়। কারণ, দীর্ঘ সময় হাইহিল পরে থাকার কারণে পায়ের আঙ্গুল ও আঙ্গুলের নখে মারাত্মক ক্ষত দেখা দেয়। আঁটোসাঁটো স্কার্ট ও হিল পরার ফলে আরো অনেক সমস্যা দেখা দেয়।

তিনি আরও বলেন, যখন কোনো বিমান পানিতে জরুরি অবতরণ করে, তখন দৌড়ে গিয়ে পাখার ওপর বহির্গমন দরজা খুলে দিতে হয় ফ্লাইট অ্যাটেন্ডেন্টদের। সেটা করতে একজন ক্রুকে মানুষের ওপর দিয়ে একরকম লাফিয়ে যেতে হয়। একবার কল্পনা করুন, তখন যদি তিনি পেন্সিল স্কার্ট পরা থাকেন, তাহলে কি অবস্থা হতে পারে।

ফলে স্কাইআপ এয়ারলাইন তাদের রীতিতে পরিবর্তন এনেছে। এ বিষয়ে তারা একটি বিবৃতি দিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, শিগগিরই যাত্রীরা নতুন স্কাইআপ চ্যাম্পিয়ন্স ইউনিফরম পরা অবস্থায় দেখতে পাবেন ফ্লাইট অ্যাটেন্ডেন্টদের। এর মধ্যে হাইহিলের পরিবর্তে থাকবে নাইকি’র এয়ারম্যাক্স ৭২০ স্নিকার বা জুতা। এই জুতা পরে অ্যাটেন্ডেন্ট সারাদিন সর্বোচ্চ স্বস্তি বোধ করবেন। তারা একই সঙ্গে স্যুট ও স্কার্ট থেকে বেরিয়ে আসছেন। এর পরিবর্তে অ্যাটেন্ডেন্টদের দেয়া হবে ট্রাউজার স্যুট, সঙ্গে কোমল সেলাইয়ের নান্দনিতার কোট। এই সিদ্ধান্তে আসতে তারা ১৯৩০ সাল থেকে এ পর্যন্ত কেবিন ক্রুদের বিবর্তন নিয়ে গবেষণা করেছে।

স্কাইআপ এয়ারলাইন্সের মার্কেটিং ডিপার্টমেন্টের প্রধান মারিয়ানা গ্রিগোরাশ বলেছেন, সময় পাল্টে গেছে। নারীদের রুচিতে পরিবর্তন এসেছে। তাই ক্লাসিক হিল, লাল লিপস্টিক আর চুলের ঝুঁটির পরিবর্তে এসেছে আধুনিকতা ও স্বস্তিকর পোশাক। গবেষণা এবং ফ্লাইট অ্যাটেন্ডেন্টদের সাক্ষাতকারের ভিত্তিতে আমরা কমলা রঙের ওই নতুন পোশাকের দিকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

 

সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন