সোমবার , ২৪ জুন ২০২৪ | ১৪ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

বিদেশি ঋণের অর্থছাড়ে গতি কম

Paris
জুন ২৪, ২০২৪ ১০:২২ পূর্বাহ্ণ

 

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক

দেশের উন্নয়ন প্রকল্পে বৈদেশিক ঋণ সহায়তার অর্থছাড়ে ধীরগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) বিভিন্ন দেশ ও দাতা সংস্থা থেকে নিট প্রায় ৪৫৮ কোটি ডলারের ঋণসহায়তা পেয়েছে বাংলাদেশ। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ সাড়ে ৫৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি (প্রতি ডলার ১১৭ টাকা হিসাবে)। অর্থছাড়ের এই অঙ্ক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে মাত্র ১ দশমিক ৩৮ শতাংশ বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ চিত্র পাওয়া গেছে। বৈদেশিক ঋণের অর্থছাড়ে গতি না আসার পেছনে দেশের চলমান উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতিকে দায়ী করছেন অর্থনীতিবিদরা। তারা বলছেন, বিদেশি ঋণ সহায়তার বড় অংশই আসে উন্নয়ন প্রকল্প ঘিরে। ফলে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প যথাসময়ে বাস্তবায়নের ওপর অনেকটাই নির্ভর করে ঋণছাড়ের বিষয়টি। তাই প্রকল্প বাস্তবায়নে সক্ষমতা বাড়াতে কাঠামোগত সংস্কার প্রয়োজন।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) হালনাগাদ প্রতিবেদন বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) সংশোধিত এডিপি বরাদ্দের ৪৯ দশমিক ২৬ শতাংশ ব্যয় করতে সক্ষম হয়েছে সরকার। এই ব্যয়ের হার গত তিন অর্থবছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ে সংশোধিত এডিপি বাস্তবায়নের হার ছিল ৫০ দশমিক ৩৩ এবং তার আগের অর্থবছরে এ হার ছিল ৫৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক ও অর্থনীতিবিদ ড. মোস্তফা কে মুজেরি বলেন, বৈদেশিক ঋণ প্রকল্পে কিছু কঠোর শর্ত থাকে, এসব শর্ত মেনে প্রকল্প বাস্তবায়ন সক্ষমতার অভাব রয়েছে সরকারি সংস্থাগুলোর। গতানুগতিক এই ধারার সঙ্গে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকালীন রাজনৈতিক পরিস্থিতিও উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রভাব ফেলে। এ ছাড়া আমাদের অর্থনৈতিক সংকট বিশেষত উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও রিজার্ভ সংকটের কারণে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার গতি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। এর প্রভাবও পড়েছে বৈদেশিক ঋণের অর্থছাড়ে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে মোট বৈদেশিক ঋণ সহায়তার অর্থছাড় হয়েছে ৬২৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার। এটি গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৬ দশমিক ২২ শতাংশ বেশি। তবে দাতা সংস্থাগুলো যে অর্থছাড় করেছে তার উল্লেখযোগ্য অংশ আগের ঋণ পরিশোধেই চলে গেছে। এ সময়ে আগের ঋণ পরিশোধে চলে গেছে প্রায় ১৭০ কোটি ডলার। ফলে চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে নিট বৈদেশিক সহায়তা হিসেবে বাংলাদেশ পেয়েছে ৪৫৮ কোটি ৫০ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে নিট বৈদেশিক ঋণ সহায়তা ছাড়ের পরিমাণ ছিল ৪৫২ কোটি ২৭ লাখ ডলার।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ সময়ে প্রকল্পে মোট বিদেশি ঋণ সহায়তা এসেছে ৬২৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার। এটি গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৬ দশমিক ৫৮ শতাংশ বেশি। আর খাদ্য সহায়তা হিসেবে এসেছে মাত্র ১ কোটি ৯০ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে প্রকল্পে ঋণ সহায়তা এসেছিল প্রায় ৫৮৮ কোটি ডলার। আর খাদ্য সহায়তা বাবদ এসেছিল ৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৭৮ কোটি ২৬ লাখ ডলারের ঋণ সহায়তা পাওয়া গেছে গত ডিসেম্বর মাসে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৬৫ কোটি ২৪ লাখ ডলার ছাড় হয়েছে সর্বশেষ এপ্রিল মাসে। আর তৃতীয় সর্বোচ্চ ৫৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার ছাড় হয় গত ফেব্রুয়ারি মাসে।

দেশে ২০২১-২২ অর্থবছরে রেকর্ড পরিমাণ বৈদেশিক ঋণের অর্থছাড় হয়েছিল। ওই অর্থবছরে সব মিলিয়ে প্রায় ১ হাজার কোটি ডলারের বেশি বিদেশি সহায়তা ছাড় করেছিল উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও দেশগুলো। এটি তার আগের অর্থবছরের চেয়ে সাড়ে ৪৩ শতাংশ বেশি ছিল। তবে আগের ঋণ পরিশোধের পর ওই অর্থবছরে নিট বৈদেশিক ঋণছাড়ের পরিমাণ দাঁড়ায় ৮৪৮ কোটি ১৬ লাখ ডলার, এটি তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ৫১ দশমিক ৫৪ শতাংশ বেশি ছিল।

তবে গত অর্থবছরে মোট বৈদেশিক ঋণ সহায়তা কমে দাঁড়ায় ৯২৫ কোটি ডলার। আর ওই অর্থবছরে নিট বৈদেশিক ঋণ সহায়তা নেমে আসে ৭৫০ কোটি ডলারে। সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনা মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে ২০২১-২২ অর্থবছরে বিশ্বব্যাংক, এডিবিসহ উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলো অর্থের প্রবাহও বাড়িয়েছিল।

 

 

সর্বশেষ - অর্থ ও বাণিজ্য