বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীতে তরুণ প্রজন্মের ভাবনা

জেসমিন আরা ফেরদৌস:

আজ ১৬ ডিসেম্বর। বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবস।বাঙালি জাতির হাজার বছরের শৌর্যবীর্য এবং বীরত্বের এক অবিস্মরণীয় গৌরবময় দিন আজ। এই বছর পালন করা হচ্ছে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী। ৫০ বছর আগে এই দিনে পৃথিবীর মানচিত্রে জন্ম নেয় বাংলাদেশ নামের এক স্বাধীন ভূখণ্ড। ১৯৭১ সালের এই দিনে দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ শেষে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে(বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) আত্মসমর্পণ করেছিল পাক হানাদার বাহিনী।

হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি ও স্বাধীন বাংলাদেশের রুপকার শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ৩০ লাখ শহীদ ও দু’লাখ মা-বোনের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয় এই স্বাধীনতা। আজ সেই বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তির দিন। দিবসটির প্রাসঙ্গিকতায় যুক্ত হয়েছে নানা মাত্রা, নানা তাৎপর্য। দিবসটি ঘিরে নানা রকম আকাঙ্খা ও প্রত্যাশা রয়েছে সকল বয়সের মানুষের। বিজয়ের এই ৫০ বছর পূর্তিতে কী ভাবছেন বর্তমান তরুণ প্রজন্ম?

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া কয়েকজন তরুণ-তরুণীর সাথে কথা বলে তাদের ভাবনা জানা যায়।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী তুলি খাতুন। তিনি বলেন, আমরা আজ যে স্বাধীন দেশে বসবাস করাছি তা পেয়েছি মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে। আজ আমরা যে স্বাধীন দেশে বসবাস করতে পারছি তা সম্ভব হয়েছে কিছু মানুষের ত্যাগের কারণে। তাদের এই ত্যাগের কারণেই আজ শ্রদ্ধা জানাতে এখানে উপস্থিত হয়েছি। তাদেরকে শ্রদ্ধা জানানো আমাদের নৈতিক দ্বায়িত্ব বলে আমি মনে করি। যতদিন বাংলাদেশ আছে তাদের এই ত্যাগকে আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবো। একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে আমিও ভবিষ্যতে দেশের জন্য কিছু কাজ করে যেতে পারি-আজকের এই দিনে এমনটাই প্রত্যাশা আমার।

বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম,কমিউনিকেশন অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মো.মুত্তাকিন আলম বলেন, আজ বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী। আজকের দিন আমাদের বাঙালি জাতির জন্য একটি গৌরবময় মহিমান্বিত দিন। কেননা আজ থেকে ৫০ বছর পূর্বে আমাদের পূর্ব পুরুষেরা স্বাধীনতার জন্য যে সংগ্রাম করেছিলো তার ফলেই আজ আমরা আজকের এই দিনটি উদযাপন করতে পারছি। স্বাধীনতার এই ৫০ বছরে আমরা যে উন্নয়ন করতে পেরেছি এই ধারা যদি অব্যাহত রাখতে পারি তাহলে আমরা একদিন বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর একটি হবো বলে আমি মনে করি।

আরেক শিক্ষার্থী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের জিহান খন্দকার। তিনি সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের ফলে বাংলাদেশ যখন স্বাধীনতা অর্জন করেছে তখন আমাদরে এই তরুণ প্রজন্ম ছিলোনা। সে সময় আমাদের বাবা-দাদারা যুদ্ধ করেন এবং স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনেন। আমরা সেই মুক্তিযুদ্ধ নিজের চোখে না দেখলেও লোকমুখে বা বিভিন্ন সময় পাঠ্যপুস্তকের মাধ্যমে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের কথা জেনেছি। অনেক ত্যাগ ও রক্তের মহিমায় আমাদের এই কষ্টোর্জিত স্বাধীনতা পেয়েছি।

তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতা অর্জন করার চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন। আমাদের তরুণ প্রজন্মের উচিত কিভাবে আমাদের দেশকে আরও উন্নতির দিকে নিয়ে যাওয়া যায় সে কাজ করা এবং একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তোলা। বিজয়কে অক্ষুন্ন রেখে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে লালন করে কীভাবে দেশকে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করা যায় সে চেষ্টায় আমাদের তরুণ প্রজন্মকে করতে হবে। আমাদের তরুণ প্রজন্মের উচিত একটি অসাম্প্রদায়িক ও শান্তিপূর্ণ সোনার বাংলোদেশ গড়ে তুলতে কাজ করা

জেএ/এফ