বিক্রেতাকে শিক্ষার্থী বললো ‘দুই টা বই কিনলে একটা ফ্রি দেব’

শাহিনুল আশিক:


স্নাতকের তিনটি বই বিক্রি করতে এসেছেন রবিন (ছদ্মনাম) নামের এক ছাত্র। নগরীর সোনাদিঘির মোড়ে পুরানো বই ক্রেতা সুজনের কাছে। তিনটি বইয়ের মধ্যে সুজন দুটি বইয়ে দাম ২০০ টাকা বললো। আর একটি বই কিনবে না বলে ছাত্র রবিনকে জানিয়ে দেয় সুজন। এসময় শিক্ষার্থী বই ক্রেতা সুজনকে বললো ‘দুই টা বই কিনলে একটা ফ্রি দেব।’ দাম কত দিবা বলো? তখন সুজন শিক্ষার্থীকে জানালো ২০০ টাকাই দেব মামা। ছাত্র-ছাত্রী নাই- কার কাছে বই বিক্রি করবো?

এসময় রেগে গিয়ে ওই শিক্ষার্থী পাশের আরেকটি দোকেন কিছু টাকা বেশিতে তিনটি বই বিক্রি করলেন। বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল পৌঁনে পাঁচটার দিকে নগরীর সোনাদিঘি মোড়ের পুরোনো বই বিক্রির দোকানে এমন ঘটনা ঘটে।

মোনালিসা বুকস হাউসের বিক্রেতা সুজন জানায়, ২০০ টাকার বই বিক্রি করতে পারিনি সারা দিনে। স্কুল-কলেজ বন্ধ হওয়ার পরে মামারা (শিক্ষার্থী) তেমন আসে না। তাদের (শিক্ষার্থী) নিয়ে তো আমাদের ব্যবসা। তারা নাকি অনলাইনে বই পড়ে। তাই তাদের আপাতত বই লাগে না।

তিনি আরও বলেন, কোনো দিন দুই থেকে তিনটা বই বিক্রি হয়। কোনো দিন আবার হয় না। দোকান ভাড়া, কর্মচারীর বেতন দিতে হিমসিম খাচ্ছে মালিকরা। কেউ কেউ ঠিক মত দোকানও খুুলছেন না।

সুজন জানায়, পুরো লকডাউনের সময় দোকান বন্ধ ছিলো। দোকান খোলার পরে ব্যবসা নেই। বিগত বছরগুলোতে ইন্টারে (একাদশ শ্রেণি) ভর্তির পরপরে বই কেনার হিড়িক পড়ে যায়। তখন রাত-দিন সমান তালে বই বেচা-কেনা হতো। আর এবছর কোনো ক্রেতা নেই।

অন্যদিকে, বই তেমন বিক্রি নেই বলে জানায় বিক্রেতা মুন্না ও আলাউদ্দিন। তারা বলছেন, একাদশ শ্রেণির ভর্তির সময় থেকে বই বিক্রি হিড়িক পড়ে। শিক্ষার্থীরা ভর্তির পরেই আগে বই কিনতে আসতো এই মার্কেটে। কিন্তু এবছর বইক্রেতা শিক্ষার্থী নেই। শিক্ষার্থীরা কলেজ ভর্তি হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। বই কিনতে আসছে না।

এবছর (২০২০) একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া শারমিন ও সুকতারা জানায়, পড়াশোনার তেমন চাহিদা নেই। আর কবে কলেজ খুলবে তারও ঠিক-ঠিকানা নেই। কলেজ খুললে বই কিনবো। পুরোনো ইংরেজি গ্রামার বই কিনতে এসেছিলাম, পেলাম না। বেশিরভাগ পুরানো বইয়ের দোকানগুলো বন্ধ রয়েছে।