বিএনপি কর্মীদের ব্যাপক হট্টগোল, মেজাজ হারান ফখরুলসহ শীর্ষ নেতারা

বক্তব্য দেওয়ার সময় মঞ্চের পাশে এসে কর্মীদের অনবরত কানাঘুষা ও কথা বলায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।এ সময় মেজাজ হারিয়ে ডায়াস থেকে চলে যান বিএনপি মহাসচিব। পরে সবাই চুপ করলে তিনি ফিরে এসে বক্তব্য শেষ করেন।তার আগে কর্মীদের এই কাণ্ডে ক্ষুব্ধ হন আরও দুই শীর্ষ নেতা।

আজ শনিবার রাজধানীর কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রয়াত সদস্য তরিকুল ইসলামের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ‘তরিকুল ইসলাম স্মৃতি সংসদ’ আয়োজিত আলোচনা সভায় এ ঘটনা ঘটে। স্মরণসভায় হাজির হয়েছিলেন হাজারো নেতাকর্মী।

এদিকে প্রয়াত নেতা তরিকুল ইসলামের স্মরণসভা উপলক্ষে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের নিচতলার মিলনায়তনে সহস্রাধিক নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে তিল পরিমাণ ঠাঁই ছিল না। নেতারা যখন বক্তব্য দেন তখন পেছনের দিকে এবং মূল মঞ্চের দুই পাশে কর্মীরা হট্টগোল শুরু করেন। এ নিয়ে দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু ও যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বক্তব্য দিতে এসে কর্মীদের কানাঘুষা ও কথা বলা বন্ধ করতে বলেন। কিন্তু তারপরও কিছু কর্মী সেদিকে কর্ণপাত করছিলেন না। একপর্যায়ে তারা বলেন, কথা শুনতে না চাইলে এই কক্ষের বাইরে চলে যান। অথবা আপনারা মাইকে এসে কথা বলেন। আমরা মঞ্চে বসে শুনি।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সভাপতির বক্তব্য দেওয়ার সময়েও একই অবস্থার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে ক্ষুব্ধ হয়ে ডায়াস থেকে তিনি নিজের আসনে বসে পড়েন। হট্টগোল দেখে মহাসচিব বলেন, সমস্যা হচ্ছে আমরা কেন এরকম সভায় আসি সেটা বোধহয় আমরা নিজেরাও জানি না। এটা এমন একজন নেতার স্মরণ সভা, যিনি আমাদের অতীতে নেতৃত্ব দিয়েছেন, পথ দেখিয়েছেন এবং সারাটা জীবন সংগ্রাম করেছেন, লড়াই করেছেন। তার স্মরণসভায় এসে আমাদেরকে এই সব সমস্যা সমাধান করতে হয়।  ডানদিকে হট্টগোলকারীদের দিকে তাকিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, সমস্যাটা কী? এভাবে আমি কথা বলব না।

এ সময় সঞ্চালক শামীমুর রহমান মাইকে এসে কর্মীদের চুপ থাকার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, কেউ কথা বলবেন না। পরে ডায়াসে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দয়া করে শান্ত হয়ে থাকেন। তা না হলে আমাদের এখানে থাকার দরকার নাই, কোনো প্রয়োজন নাই। এভাবে কিছু হয় না। ছাত্রদল-যুবদলের প্রতি আহ্বান জানাতে চাই, আপনারা নিজেরা কিছু জানুন। নিজেদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে শিখুন। তা না হলে কোনো কিছু অর্জন করা সম্ভব হবে না।

অনুষ্ঠান শেষ হলে নেতাকর্মীরা একসঙ্গে বের হতে গিয়ে ইনস্টিটিউটের মূল গেইটের একটা গ্লাস ভেঙে ফেলেন। এতে কর্তব্যরত একজন নিরাপত্তাকর্মী আহত হন।

বিএনপি মহাসচিবের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান, কেন্দ্রীয় নেতা নিতাই রায় চৌধুরী, আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, জয়ন্তু কুমার কুন্ড, যুবদলের সাইফুল আলম নিরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, কৃষক দলের শহিদুল ইসলাম বাবুল, ছাত্রদলের ফজলুর রহমান খোকন প্রমুখ।

সভা সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রীয় নেতা আজিজুল বারী হেলাল, শামীমুর রহমান শামীম ও আমিরুজ্জামান শিমুল। অনুষ্ঠানে প্রয়াত তরিকুল ইসলামের ছোট ছেলে বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ যশোর-খুলনার নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

 

সূত্রঃ যুগান্তর