‘বাবার মাঠে’ যমজপুত্র!

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্কঃ 

জাদুমন্ত্রের মতো ফুটবল আর ফুটবলপ্রেমী দর্শকদের হৃদয় জয় করেছিলেন ফুটবলার মোয়াজ্জেম হোসেন। খেলতেন মাঠের রাইট-ব্যাকে। সেই মাঠে এবার দর্শকদের মাতিয়ে তুলছেন তার যমজপুত্র মো. সাব্বির আহমেদ অপূর্ব ও মো. শাহরিয়ার আহমেদ শুভ।

বঙ্গবন্ধু জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে (অনূর্ধ্ব-১৭) বোকাইনগর ইউনিয়ন পরিষদ একাদশের হয়ে তারা এবার মাঠে নেমেছেন।

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে দর্শক চোখ খোঁজে ওদের। বাবা রাইটব্যাকে খেলেছেন। তবে বড় ছেলে অপূর্ব খেলছে রাইটআউট। আর মাত্র ১৫ মিনিটের ব্যবধানে পৃথিবীর আলোতে আসা শুভ খেলছে মধ্যমাঠ জুড়ে। ২০২১ সালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় গোল্ডকাপ টুর্নামেন্টের মধ্যদিয়ে ফুটবলে যমজ ভাইয়ের উত্থান শুরু হয়। উপজেলা, জেলা ছাড়িয়ে ঠাঁই করে নেন ময়মনসিংহ বিভাগীয় ফুটবল একাদশে।

ওদের প্রথম হাতেখড়ি শুরু হয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে। তারপরেই বাবার সঙ্গে পায়েপায়ে ফুটবল মাড়িয়ে গ্রাম থেকে শহর দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ওরা দুই ভাই। জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে এম দেলোয়ার হোসেন মুকুলের ব্যবস্থাপনায় ময়মনসিংহে আয়োজিত অনূর্ধ্ব-১৮ ফুটবল ক্যাম্পে ওরা জেনে নেয় ফুটবলের কলাকৌশল।

এরপরেই শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের হয়ে ময়মনসিংহ ফুটবল লীগে দর্শকদের দৃষ্টি কাড়ে দু’ভাইয়ের দু’জোড়া যাদুকরী ‘পা’। এ যেন বাবা’র ছন্দময় ফুটবলের নতুন দিগন্তের উন্মোচন। বাবা ফুটবলার মোয়াজ্জেম হোসেনের চোখের দৃষ্টি মনের সেই বাসনা জেগেছে, সন্তানদের ঠাঁই করে দিতে চান জাতীয় ফুটবল দলে। বাবার ইচ্ছাপূরণে দুই ছেলেও মাঠের দখল আর ফুটবলের রাজত্ব করতে চালিয়ে যাচ্ছেন নিয়মিত অনুশীলন।

খেলার মাঠে ফুটবলের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষায়ও পিছিয়ে নেই ওরা দুইজন। মা মোছা. হাফিজা বেগম বড়ভাগ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। সেই বিদ্যালয় থেকে ২০২১ সালে অপূর্ব জিপিএ ৪.৬ ও শুভ জিপিএ ৪.৪ পেয়ে এসএসসি পাশ করে। গৌরীপুর সরকারি কলেজে দুই ভাই একাদশে অধ্যয়নরত। জন্ম নেন ২০০৫ সনের ১০ সেপ্টেম্বরে।

অপরদিকে মোয়াজ্জেম হোসেন ঈশ্বরগঞ্জ বিশ্বেশ্বরী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সনে এসএসসি, ১৯৮৬ ঈশ্বরগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি ও ১৯৯৩ সালে গৌরীপুর সরকারি কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। ১৯৮১ সালে প্রথম অগ্নিবীণার হয়ে ময়মনসিংহ মাঠে নামেন। তিনি সর্বশেষ ঢাকায় সিনিয়র ডিভিশন প্রথম বিভাগ ফুটবল লীগে খেলেছেন ১৯৮৪-৮৭ সালে।

এছাড়াও মোয়াজ্জেম হোসেন ঢাকা ও ময়মনসিংহের বিভিন্ন ক্লাবে খেলেছেন ২০০২ সন পর্যন্ত। গৌরীপুর ব্রাদার্স ইউনিয়নের ছিলেন নিয়মিত খেলোয়াড়। ফুটবলার মোয়াজ্জেম হোসেন যুগান্তরের পাঠক সংগঠন গৌরীপুর যুগান্তর স্বজন সমাবেশ আয়োজিত মিনি ম্যারাথনে চার বার চ্যাম্পিয়ন হন। তিনি এ সংগঠনের উপজেলা শাখার ক্রীড়া সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, আমি চাই ক্রীড়াঙ্গনে যারা আছেন তাদের সহযোগিতা পেলে আমার দুই পুত্র জাতীয় ফুটবল দলের হয়ে লাল-সবুজের পতাকা নিয়ে বিশ্বময় ছুটে যেতে পারবে।

 

সূত্রঃ যুগান্তর