বাবার ইচ্ছে চায়ের দোকান দেওয়ার, স্বপ্ন পূরণ করলেন অভিনেত্রী

করোনাভাইরাস মহামারি শুরু হওয়ার পর গত বছর লকডাউনের শুরুতে কাজ হারান ভারতের যাদবপুরের সুখেন গুহ। কিন্তু তাকে ভেঙে পড়তে দেননি মেয়ে বিনীতা। বরং ব্যবসা শুরুর ভরসা জুগিয়েছেন।

সংসারের যাবতীয় দায়িত্ব সামলে উপার্জনক্ষম সেই মেয়ে বাবাকে খুলে দিয়েছেন চায়ের দোকান। বাবা যেন আবারো পায়ের তলায় মাটি ফিরে পান, আত্মবিশ্বাসী হয়ে উপার্জন করতে পারেন ৬৫ বছর বয়সেও, সেজন্য এ কাজ করে দিয়েছেন মেয়ে।

জানা গেছে, কলেজে পড়ার সময় থেকে চাকরি করে নিজের পড়াশোনার খরচ জোগাড় করতেন বিনীতা। এখন তিনি পেশায় অভিনেত্রী। রুপালি পর্দার চাকচিক্য আর গ্ল্যামারের সার্বজনীন উপস্থিতির মধ্যেই দিনের বেশির ভাগ সময়টা কাটে তার।

কিন্তু তার পরেও যখন বাবার চায়ের দোকান খোলার বহু দিনের স্বপ্নের কথা জানতে পেরেছেন, তখন আপত্তি করেননি। বরং মনে মনে স্থির করেন, হাতে টকা এলেই বাবার স্বপ্নপূরণ করবেন। অভিনেত্রী থেকে চা-দোকানি বাবার মেয়ে হয়ে ওঠার মধ্যে যে যাত্রাপথ— তাতে এতটুকু সামাজিক কুণ্ঠা বা গ্লানিবোধ নাই তার।

টালিগঞ্জের বন্ধু-বান্ধবের সামনে নিজেকে চা-বিক্রেতা বাবার মেয়ে হিসেবে পরিচয় দিতে কতটা স্বচ্ছন্দ? বিনীতা বলেন, আমি সময় পেলেই বাবার দোকানে কচুরি ভাজি। বিক্রিও করি মাঝে মধ্যে। বাড়িতে সময় পেলে রান্না করতাম, তেমনই দোকানে করি। মানুষ বেঁচে থাকার জন্য যা যা করে, আমি আর বাবাও তাই করছি। এতে সঙ্কোচ হবে কেন?

সদ্য এক পূজার মিউজিক ভিডিওতে মুখ দেখিয়েছেন অভিনেত্রী বিনীতা। যা প্রায় সাত লাখ মানুষ দেখেছেন। পাশাপাশি কাজ করেছেন বিজ্ঞাপন, ওয়েব সিরিজেও।

তবে নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে হিসেবে লড়াইয়ে টিকে থাকার মানসিকতাটুকু হারাননি। বিনীতা বলেন, আমরা ভাড়া বাড়িতে থাকি। তবে মা-বাবার মাথা গোঁজার জন্য এক দিন বাড়ি করতে হবে আমায়, সেটা জানি। মনে মনে স্থিরও করে রেখেছি।

ওই তরুণীর কথায়, আপাতত চায়ের স্টল ভাড়ায় নিয়ে পঞ্চমী থেকে ব্যবসা শুরু হয়েছে। বিনিয়োগ বলতে হাজার চারেক টাকা। তবে এটাও আমার পরিবারের কাছে কম টাকা নয়। তবে পূজাতে সেভাবে বিক্রি হয়নি। একটু সময় লাগবে।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ