বাবরি মসজিদের জায়গায় রামমন্দির নির্মাণের সূচনা মোদির

ভারতের অযোধ্যায় প্রায় ৫০০ বছর পুরনো বাবরি মসজিদের জায়গায় রামমন্দির নির্মাণের কাজ উদ্বোধন করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

বুধবার করোনা সংক্রমণের মধ্যেই রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনে ২৯ বছর পর উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় গিয়েছেন তিনি।

স্থানীয় সময় দুপুরে ৪০ কেজি ওজনের একটি রুপার ইটের মাধ্যমে মন্দির নির্মাণের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেন নরেন্দ্র মোদি। এ সময় সেখানে ভূমিপূজায় অংশ নেন তিনি।

এনডিটিভি জানিয়েছে, মোট নয়টি শিলগ্রাম শিলার পূজা চলবে অযোধ্যার মন্দির নির্মাণস্থলে।

মন্দিরের জন্য কয়েক বছর ধরে ভক্তদের কাছ থেকে ‘শ্রী রাম’ লেখা খোদাই করা দুই লাখ ইট সংগ্রহ করা হয়েছে, রামমন্দিরের ভিত ওই ইটগুলো দিয়েই তৈরি হবে বলে জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।

এছাড়া মন্দির নির্মাণে ভারতের বিভিন্ন অংশের লাখ লাখ ভক্ত সোনা-রুপার কয়েন, ইট ও বার পাঠিয়েছে।

আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, মন্দিরের কাজ শেষ হতে প্রায় সাড়ে তিন বছর সময় লাগবে। কেবল মন্দির নির্মাণেই খরচ পড়বে প্রায় তিনশ কোটি রুপি। মন্দিরের আশপাশের অন্যান্য স্থাপনা ও উন্নয়ন কাজে ব্যয় হবে আরও হাজার কোটি রুপি।

যে ভূমিতে রামমন্দির নির্মিত হচ্ছে তা নিয়ে কয়েক দশক ধরে হিন্দু ও মুসলমানদের বিরোধ চলছে। ১৯৯২ সালে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা জমিটিতে থাকা ষোড়শ শতকের বাবরি মসজিদ ভেঙেও ফেলে।

জমির মালিকানা নিয়ে কয়েক দশকের বিরোধ শেষে গত বছর ভারতের সুপ্রিম কোর্ট জমিটিতে রামমন্দির নির্মাণে সবুজ সংকেত দেয়। মসজিদ নির্মাণে মুসলমানদের অযোধ্যারই অন্য কোথাও জমি দিতে বলে তারা।

বিবিসি জানিয়েছে, করোনা মহামারীর জন্য ভারতে এখন ধর্মীয় জমায়েত নিষিদ্ধ থাকলেও প্রস্তাবিত রামমন্দিরের ভূমিপূজা অনুষ্ঠানের আশপাশে হাজার হাজার ভক্ত হাজির হয়েছিলেন।

অযোধ্যায় থাকা বিবিসির সংবাদদাতা সর্বপ্রিয়া সাঙ্গোয়ান জানিয়েছেন, তাদের বেশিরভাগই সামাজিক দূরত্ব বিধি বা মাস্ক পরার নিয়ম মানেননি।

রামমন্দির নির্মাণ উপলক্ষে ভারতজুড়ে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা উৎসব করলেও ভারতের মুসলমানদের অনেকেই দিনটিকে কালোদিবস হিসেবে পালন করছেন।

অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড এক টুইটে জানিয়েছে, বাবরি মসজিদ একটা মসজিদ ছিল আর থাকবে। অন্যায্য, লজ্জাজনক এবং সংখ্যাগরিষ্ঠকে খুশি করার মতো একটি রায়ের সুযোগ নিয়ে জমির দখল নেয়া হলেও তার অবস্থান বদলাতে পারবে না কেউ। ভেঙ্গে পড়বেন না। অবস্থা চিরকাল একরকম থাকবে না।