বাচতে চান রাজশাহীর সুলতান

নিজস্ব প্রতিবেদক:

এক সময় রাজশাহী অঞ্চলে বসবাস ছিল রাজা-জমিদারের। তাই কালক্রমে পদ্মা তীরবর্তী এ নগরীর নামকরণ হয় রাজশাহী। আজ রাজাও নেই, নেই তাদের শাহী দরবারি। ঠিক তেমনি এক সময় ঠিকাদারি করে ভালো টাকা পয়সা উপার্জন করলেও নিয়তির কাছে পরাজিত হয়ে জীবন-মৃত্যুর সাথে লড়াই করছেন রাজশাহীর সুলতান।

রাজশাহী নগরীর নওদাপাড়া এলাকার বাসিন্দা সুলতান উদ্দিন আহমেদ (৪০)। বাপ-দাদার আদি নিবাস এই রাজশাহী শহরেই। পনের বছরের সংসারে রয়েছে স্ত্রী ও দুই সন্তান। স্ত্রী লিপি বেগম পেশায় গৃহিনী। দুই ছেলের মধ্যে আহানাফ উদ্দিন (১৩) সপ্তম শ্রেনিতে পড়ছে টেক্সটাইল শাহমুখদুম হাইস্কুলে এবং রাজিন উদ্দিন আহমেদ (৫) থাকে মায়ের কোলে। আর তাই পরিবারের একমাত্র উপার্জনাক্ষম ব্যক্তিটি হচ্ছেন সুলতান। কিন্তু বর্তমানে তিনি নিজেই হয়েছেন পরিবারের বোঝা। এখন নিজের জীবন বাচানোর চেষ্টায় দিন কাটছে তার।

এক সময় আর্থিকভাবে সচ্ছল ছিলেন তিনি। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি কার্যালয়ের সাপ্লাই ও কন্সট্রাকশনের ছোট থেকে মাঝারি ধরনের কাজ করে বেশ ভালোই উপার্জন করতেন। কিন্তু ২০১৮ সালের দিকে হঠাৎ স্ট্রোক করেন তিনি। ভর্তি হন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে। টানা ৯ দিন অচেতনভাবে পড়েছিলেন রামেক হাসপাতালের বিছানায়। এরপর চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধপত্র চালিয়ে যান তিনি। এরই মাঝে ব্যবসায় নামে ধস। আবারো শারিরীক দুর্বলতায় অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। চিকিৎসার ব্যয়ভার ও ব্যবসায়িক ক্ষতি সাধনের কারণে শারিরীক ও মানসিকভাবে পুরোই ভেঙ্গে পড়েন সুলতান।

হঠাৎ গত ছ’মাস আগে পেটের পিড়া ও শারীরিকভাবে দুর্বলতার দেখা দেয়। এতে আবারো সরনাপন্ন হন চিকিৎসকের। তবে দিন দিন অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকার ধানমন্ডি মর্ডান হাসপাতালে গিয়ে সম্পূর্ণ শারিরীক চেক-আপ করান। চেক-আপে ধরা পড়ে দুটো কিডনিই প্রায় ৯৫ শতাংশ ক্ষতি সাধন হয়েছে।

এপর্যায়ে ডাক্তারের ভাষ্য, দুটো কিডনির মধ্যে একটি কেটে বাদ দিয়ে নতুন কিডনি টান্সপ্লান্ট করতে হবে। এতে খরচ হবে প্রায় ১৪ থেকে ১৫ লাখ টাকা। কিন্তু এতো অর্থ না থাকায় এখন জীবন-মরণ প্রশ্ন হয়ে দাড়িয়েছে সুলতানের কাছে।

আদি রাজশাহীর এই মানুষটি নিজের জন্য না হলেও বাচতে চান তার পরিবারের মুখ চেয়ে। একটি কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করার মতো অর্থ জোগাড়ে তিনি এখন মুখোমুখি সমাজের বিত্তবান মানুষের কাছে। বাচার জন্য সমাজের সামর্থ্যবানসহ দাতাব্যক্তি ও সামাজিক সেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিদের কাছে জানিয়েছেন আকুতি।

তার স্ত্রী লিপি বেগম বলেন, আমাদের দেশে হাজারো ধনাঢ্য ব্যক্তি রয়েছেন। আবার অনেক বড় বড় রাজনৈতিক নেতা, সামাজিক সংগঠন ও দাতাগোষ্ঠী রয়েছে যারা অসহায় পরিবারের পাশে দাড়ান। তাদের প্রতি আমার আকুল আবেদন আমার পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তিটির প্রতি আপনারা একটু সহানুভূতির দৃষ্টি দিবেন। তাকে বাচাতে সাহায্য করুন। কারণ তার জীবনের সাথে জড়িয়ে আছে আরও তিনটি প্রাণ।