বাঘা পৌর নির্বাচন ঘিরে ডজন বেশি মেয়রপ্রার্থী মাঠে, দৌড়ঝাঁপ আ.লীগের ৮ নেতার

নিজস্ব প্রতিবেদক:

আগামী ২৯ ডিসেম্বর বাঘা পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ নির্বাচন ঘিরে মেয়র পদে অংশ নিতে এরই মধ্যে মাঠে নেমেছেন ডজনের বেশি প্রার্থী। যাঁদের মধ্যে আওয়ামী লীগেরই রয়েছেন ৮ জন। আর বিএনপির তিনজন, জামায়াতের একজন এবং জাতীয় পার্টির একজন করে প্রার্থী প্রচারণা চালাচ্ছেন। বর্তমানে এখানে বিএনপি নেতা আব্দুর রাজ্জাক মেয়র পদে রয়েছেন। তিনি ২০১৭ সালের নির্বাচনে জয়ী হন। তাঁর বিরুদ্ধে পৌর সভার আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে তদন্ত করছে দুদক। সম্প্রতি দুদকের একটি দল সরেজমিন গিয়ে পৌরসভার ফাইলপত্র নিয়ে আসে।

এদিকে, এতোসংখ্যক প্রার্থীর প্রচারণায় অংশ নেওয়ায় এরই মধ্যে বাঘা পৌর এলাকাজুড়ে নির্বাচনী আমেজ তৈরী হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন কে? সেটা নিয়ে। এই প্রশ্নই এখন বেশি ঘুরপাক খাচ্ছে নেতাকর্মীদের মাঝে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা চাইছেন তরুণ নেতৃত্বের হাতে তুলে দেওয়া হোক নৌকা প্রতীক। যাকে সামনে রেখে বিএনপির দুর্গ বাঘা পৌর সভায় মেয়র পদটি এবার আওয়ামী লীগ দখল করতে পারে। সে ক্ষেত্রে তরুণ নেতৃত্ব ও বিএনপির আমলে নানাভাবে নির্যাতনের শিকার বাঘা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মামুন হোসেনকেই চাইছেন নেতাকর্মীরা।

বাঘা পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ করছেন মামুন হোসেনসহ বাঘা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল কুদ্দুস সরকার, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আমানুল হাসান দুদু, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক মেয়র আক্কাছ আলী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও প্যানেল মেয়র শাহিনুর রহমান পিন্টু, সাধারণ সম্পাদক মামুন হোসেন, উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফাতেমা মাসুদ লতা, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সুরুজ্জামান সুরুজ। এঁদের মধ্যে বিতর্কিতই রয়েছেণ অধিকাংশ। যাঁদের কেউ কেউ বার বার হয়েছেন গণমাধ্যমের খবরের শিরোনাম। তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত ব্যক্তি হলেন সাবেক পৌর মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা আক্কাছ আলী। তিনি আওয়াম লীগের দলীয় প্রধান শেখ হাসিনাকেও একবার কালো পতাকা পদর্শন করেছিলেন। এর বাইরে নারীকে মারপিট, সরকারি কর্মচারীকে মারপিটসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে ছিল তার নামে একাধিক মামলা। সম্প্রতি বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে হামলার অভিযোগে আক্কাছ আলীর বিরুদ্ধে মামলাসহ তাঁকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। এই অবস্থায় বাঘা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মামুন হোসেনের হাতেই নৌকা উঠতে পারে বলে মনে করছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।

এদিকে বর্তমান সরকারের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিলেও বাঘা পৌর নির্বাচনে অংশ নিতে তিনজন নেতা প্রচারণা চালাচ্ছেন। প্রচারনায় চালিয়ে যাচ্ছেন বর্তমান মেয়র ও বিএনপি নেতা আবদুর রাজ্জাক, বাঘা পৌর বিএনপির সভাপতি কামাল হোসেন ও উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন। এছাড়াও বাঘা পৌর জামায়াতের সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও উপজেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সাধারণ সম্পাদক দুলাল হোসেনও গণসংযোগ করছেন।
মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে জানতে চাইলে বাঘা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মামুন হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে আসছি। করোনাকালে আমার নিজ উদ্যোগে ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সহযোগিতায় কর্মহীন হাজার হাজার মানুষের মাঝে ত্রাণ সহায়তা দিয়েছি। কখনো দলের সঙ্গে বেইমানী করিনি। তাই আশা রাখি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে নৌকা প্রতীক তুলে দিবেন।

সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়াম লীগের সদস্য আক্কাছ আলী বলেন, আমাকে নিয়ে অনেক ষঢ়যন্ত্র হয়েছে। এখনো হচ্ছে। তার পরেও আমিই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবো বলে আশা রাখি। বাঘার তৃণমূলের নেতাকর্মীদের আমার প্রতি আস্থা আছে।’

বাঘা পৌর বিএনপির সভাপতি কামাল হোসেন বলেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করছে না। তবে এরই মধ্যে যদি আমাকে ভিতরে ভিতরে সমর্থন দেওয়া হয়, তাহলে নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী। তবে দল যে সিদ্ধান্ত নিবে সেই মোতাবেক কাজ করবো।’

স/আর