বাঘা প্রতিনিধি:
রাজশাহীর বাঘা স্কুলের মাঠ খনন করে ঈদ মেলার সার্কাস প্যান্ডেলর জায়গা করা হচ্ছে। মাঠ খনন না করে বিকল্প ব্যবস্থায় মেলা করার আহবান জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
জানা যায়, ৫’শ বছর থেকে বাঘায় ঈদ মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর আগে মাঠ খনন না করে মেলা করা হয়েছে। কিন্তু এবার স্কুলের পুরো মাঠ মনে হচ্ছে পুকুর খনন করা হচ্ছে। এখানে সার্কাস খেলা দেখানো হবে বলে জানা গেছে। ঈদের দিন থেকে ১৫ দিন ব্যাপি এই মেলা চলবে। ১৫ দিনের জন্য ২০ লক্ষ এক হাজার টাকা মূল্যে মেলা ইজারা পেয়েছেন বাঘা পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মামুন হোসেন।
তবে মেলায় বসছে মিষ্টি, বাচ্চাদের খেলনা, মনোহারি সামগ্রী, লোহা জাত দ্রব্য, কাঠের আলনা, চেয়ার, টেবিল, খাট, ড্রেসিং টেবিল, পালঙ্ক, সুকেচ, মাটির হাড়ি পাতিল, প্রসাধনী সামগ্রী, মাংস, বেকারী দ্রব্যাদি, শামুকের মালা, কাঠের সামগ্রী, বেলুন, বাঁশি এছাড়া ছবির দোকান, খাবার হোটেল, সদর ঘাটের পান, চা স্টল, সার্কাস, যাত্রা, নাগর দোলা, মটোরসাইকেল, কারগাড়ি ঘোরান খেলা প্রভৃতি।
গতকাল বুধবার দুপুরে তধভড়ৎ ওয়নধষ নামের এক ব্যাক্তির ফেসবুকে লিখেছেন এটা কোন ধানের ক্ষেত নয়, পাটের ক্ষেত নয়, আখের ক্ষেত নয়, এটা রাজশাহী জেলার অন্তর্গত বাঘা উপজেলার ও পৌরসভার প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত বাঘা মডেল উচ্চবিদ্যালয় এর খেলার মাঠ। আমার বয়স যথন ৫ বছর তখন থেকে এই মাঠে আমার পদাচরন। আমি খেলা শিখেছি এই মাঠ থেকে।
আজকে যখন খেলার মাঠে আসি, তখন দেখছি মেলার জন্য মাঠ খনন করা হচ্ছে। আমি ৩০ বছর এই মাঠে খেলেছি। মাঠের প্রতিটি মাটি, ঘাস আমার শরীরের সাথে মিশে আছে। যখন লেবার একেকটি কোদালের কোপ দিচ্ছে, যেন আমার বুকে কোদারের কোপ লাগছে। মেলার জন্য মাঠ কেন খনন করতে হবে? এখানে কি বিকল্প পদ্ধতির ব্যবস্থা করা যায় না? যেমন কাঠ, বাঁশের তৈরী গ্যালারী দিয়ে? তাহলে মাঠটি নষ্ট হতো না। আমি জাফরের কথা কি কেউ শোনবে বা আমার দুঃখ বুঝার চেষ্টা করবে?
এই বিষয়ে মেলা ইজারাদার ও বাঘা পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মামুন হোসেন বলেন, প্রতি বছর মাঠ খনন করে সার্কাসের মাঠ করা হয়। স্কুল ছুটি শেষ হয়ে যাওয়ার সাথে সাথে সার্কাস বন্ধ করে মাঠ সংস্কার করে দেয়া হয়। কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে ও ইজারা দিয়ে এই মেলা করা হচ্ছে। তবে স্কুল পরিচালনা কমিটির কাছে থেকে অনুমতি নিয়ে এই মাঠে সার্কাস প্যান্ডেল করা হচ্ছে।
বাঘা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী দেওয়ান বলেন, স্কুল পরিচালনা কমিটির সাথে আলোচনা করে মাঠে সার্কাসের প্যান্ডের অনুমতি দেয়া হয়েছে। তবে তারা মাঠ খনন করছে। মেলা শেষে সংস্কার করে দিবে। এই শর্তে মাঠের অনুমতি দিয়েছে।
বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা বলেন, স্কুলের মাঠ খনন করে ঈদ মেলার সার্কাস প্যান্ডেলর জায়গা করা হচ্ছে এটা আমার জানা নেই। তবে মেলা বা সার্কাস করতে হলে জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিয়ে করতে হবে। এছাড়া মাঠ খননের বিষয়টি স্কুল পরিচালনা কমিটি দেখবেন।
স/আ