বাঘায় মসজিদে নামাজরত অবস্থায় ব্যাংক কর্মচারীকে ছুরিকাঘাতকারী আটক

বাঘা প্রতিনিধি:

রাজশাহীর বাঘায় মসজিদে নামাজরত অবস্থায় ব্যাংক কর্মচারী আবু ফজল সিদ্দিক তাপসকে ছুরিকাঘাতকারী যুবক মনিরুল ইসলামকেআটক করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাঘা পৌরসভার উত্তর কলিকগ্রামে জামে মসজিদে মাগরিবের নামাজ পড়া অবস্থায় এই ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, উপজেলার উত্তর কলিকগ্রামের মনিরুল ইসলাম তার নিজ পিতা আয়েজ উদ্দিনকে ২০১৪ সালে হত্যা করে। এ হত্যার প্রত্যক্ষ সাক্ষী হন একই গ্রামের মরহুম মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেনের ছেলে আবু বাশার মোহম্মদ সিদ্দিক শাওন। এ হত্যাটি পারিবারিকভাবে সমঝোতা করে নেওয়া হয়। কিন্তু এ হত্যার স্বাক্ষী ছিলেন বাজুবাঘা শাখার অগ্রণী ব্যাংকের ঋণ শাখার কর্মচারী আবু ফজল সিদ্দিক তাপসের ছোট ভাই আবু বাশার মোহম্মদ সিদ্দিক শাওন।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কলিকগ্রামের জামে মসজিদে মাগরিবের নামাজ আদায় করতে যায় আবু ফজল সিদ্দিক তাপস। ইমামের পেছনে ফরজ নামাজ পড়া শুরু করে। এ সময় মনিরুল ইসলাম মসজিদের ভেতরে প্রবেশ করে ধারালো চাকু দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে জখম করে।

চাকুর আঘাতে আবু ফজল সিদ্দিক তাপসের বাম হাতের কনুইয়ের নিচে ও উপরে এবং ডান হাতের কবজি কেটে যায়। মুসল্লিরা নামাজ বন্ধ করে তাকে আটক করার চেষ্টা করলে সে পালিয়ে যায়। পরে মুসল্লিরা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে নিয়ে আসে। সেখানে অবস্থা বেগতিক দেখে দায়িত্বপপ্রাপ্ত ডা. রাকেস পান্ডে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

এ ঘটনায় আহত ব্যাংক কর্মচারী আবু ফজল সিদ্দিক তাপসের বড় ভাই আবু বক্কর সিদ্দিক বাবুল বাদি হয়ে বাঘা থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে মনিরুল ইসলামের কলিগ্রামের বাড়ির পেছনে আম বাগান থেকে রাতে আটক করা হয়।

আহত ব্যাংক কর্মচারী আবু ফজল সিদ্দিক তাপসের বড় ভাই আবু বক্কর সিদ্দিক বাবুল বলেন, ৮ বছর আগে নিজ পিতাকে হত্যা করে মনিরুল ইসলাম। এ হত্যার সক্ষী হয়েছিল আমার ছোট ভাই আবু বাশার মোহম্মদ সিদ্দিক শাওন, কিন্তু তাকে না মেরে আমার আরেক ভাই ব্যাংক কর্মচারী আবু ফজল সিদ্দিক তাপসকে নামাজরত অবস্থায় ছুরিকাঘাত করা হয়েছে।

কলিগ্রামের জামে মসজিদের ইমাম আবদুল খালেক বলেন, জামাতে ফরজ নামাজের দ্বিতীয় রাকাতের রুকুতে যাওয়ার সময় ঘটনা ঘটে। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তাকে ছুরি মেরে আহত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্যা কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের ডা. রাকেস পান্ডে বলেন, আবু ফজল সিদ্দিক তাপসের অবস্থা বেগতিক দেখে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে।

বাঘা থানার ওসি সাজ্জাদ হোসেন বলেন, এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। মনিরুল ইসলামকে রাতে আটক করে শুক্রবার সকালে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

জি/আর