বাঘায় তারের বেড়া তৈরির কারখানা দিয়ে স্বচ্ছল দুই বন্ধু

বাঘা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাঘায় অল্প পুঁজি নিয়ে তাদের বেড়া তৈরির কারখানা দিয়ে স্বপ্ন দেখছেন দুই যুবক নুরুল ইসলাম ও সহিদুল ইসলাম। তারা দুই মাস আগে তাদের বেড়া তৈরির মেশিন কিনে জিআই তার দিয়ে বেড়া তৈরি করছেন। স্থানীয় বাজারে চাহিদা থাকায় ও ক্রেতাদের ভালো সাড়া পাওয়ায় তারা এখন সফল।

জানা যায়, বাঘা পৌর এলাকার বানিয়াপাড়া গ্রামের দুই বন্ধু নুরুল ইসলাম ও সহিদুল ইসলাম। তারা টার্কি আর কোয়েল পাখির ফার্ম দিয়ে লোকসানে পড়ে। তারা সিদ্ধান্ত নেই ব্যবসা আর হবে না। তারা বিভিন্নস্থানে ঘুরতে থাকে চাকরির খোঁজে। কিন্তু চাকরিও পায়নি। সমাধানের পথ খুঁজে পাচ্ছিল না। এক সময় তারা চিন্তা করে এই এলাকা আমের জন্য বিখ্যাত। আম বাগানগুলো উন্মুক্ত পড়ে থাকে। বাগানের চারদিকে বেড়া দিলে কেমন সহয়! তারা সিদ্ধান্ত নেয় জিআই তার দিয়ে বেড়া বানিয়ে বিক্রি করবে। অবশেষে তারা একটি বেড়া তৈরির দুই হর্স পাওয়ারের ৩০ হাজার টাকা মূল্যের একটি ইলেকট্রনিক্স মেশিন কেনেন। বাঘা ‘নেট ঘর’ নামকরণ করে পৌরসভার বানিয়াপাড়ায় জান্নাত আলীর বাড়ি সংলগ্ন মার্কেটে একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে কারখানা চালু করেছেন। এখন বেকার জীবনে সচ্ছলতা ফিরে এসেছে তাদের।

বর্তমানে এই কারখানায় ঘণ্টা চুক্তিতে কাজ করে ৭ থেকে ১০ জন বেকার যুবক। ফুট অনুযায়ী তাদের দেয়া হয় ১ থেকে ১০ টাকা। এখানে তারা ১ থেকে ৪ ইঞ্চি দূরত্বের বেড়া তৈরি করে। বিভিন্ন সাইজের তৈরি বেড়া হয় ৮ থেকে ৩০ টাকা ফুট হিসেবে।

নুরুল ইসলাম জানান, প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ হাজার ফুট বেড়া তৈরি করা সম্ভব। যার আনুমানিক বিক্রয় মূল্য ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। খরচ বাদে লাভ হয় প্রায় দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা। পুঁজির অভাবে অটো মেশিন কিনতে পারছেন না তিনি। যার দাম প্রায় ৪ লক্ষ টাকা। সহজ কিস্তিতে সুদমুক্ত ঋণ সুবিধা পেলে কারখানাটি বড় করা সম্ভব বলে জানান তারা।

শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) তাদের কারখানা ঘুরে দেখা যায়, দুই বন্ধুর মধ্যে সহিদুল ইসলাম মেশিন চালাচ্ছেন। নুরুল ইসলাম বান্ডিল থেকে মেশিনে তার ধরিয়ে দিচ্ছে। আর নেটের কাজ করছে অন্যরা। তাদের মধ্যে একজন বাঘা পাবলিক ক্যাডেট স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র জাহিদ হাসান। অবসর সময়ে গ্রামে কাজ করার সুযোগ হয়েছে তার। করোনাকালিন ছুটিতে স্কুল বন্ধ আছে। তাই প্রাইভেট পড়ার খরচ যোগাড়ে কাজ করছেন। প্রতিদিন তার ৫০ থেকে ১০০ টাকা আয় হয়।

সহিদুল ইসলাম জানান, কাজের সন্ধানে ঝিনাইদহে যায়। সেখানে গিয়ে বেড়া তৈরির কাজটি চোখে পড়ে। তাদের এলাকায় বেড়া তৈরির কারখানা নেই। কাজটি করলে মন্দ হয় না। তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিয়ে স্থানীয় একটি সমিতি থেকে ৩০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ইলেকট্রনিক্স মর্টার মেশিন কিনে এই কাজ শুরু করেছি।

স/রি