বাঘায় আমবাগান ও আবাদি জমিতে চলছে পুকুর খননের মহাযজ্ঞ

বাঘা প্রতিনিধি:

রাজশাহীর বাঘায় আম বাগান ও আবাদি জমিতে চলছে পুকুর খননের মহাযজ্ঞ। দিন রাত চলছে পুকুর খননের কাজ। এই পুকুর খননের কাজ দেখভাল করছেন সরকার দলীয় রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় উঠতি বয়সের কিছু যুবক। দলীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে পুকুর খননে মেতে উঠেছেন তারা।

এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগে অভিযোগ দিলেও প্রশাসন নীরবভূমিকা পালন করছে। কয়েক স্থানে পুকুর খনন করতে গিয়ে বিদ্যুতের খুঁটির গোড়া থেকে মাটি সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এতে মূল লাইন ঝুঁকিতে পড়েছে।

সংশ্লিষ্ট্র সূত্রে জানা গেছে, বলিহার গ্রামে সকাল সরকার, স্বপন সরকার, সুনেল সরকার মিলে তাদের সাড়ে ৯ বিঘা জমির আমবাগান কেটে পুকুর খনন করেছেন। বাঘার বিলে আবদুল মতিন নামের এক ব্যক্তি দুই বিঘা জমি লিজ দিয়েছেন। সেই জমিতে বর্তমানে পুকুর খনন চলছে। অভিযোগ রয়েছে, কৃষি জমির শ্রেণি পরিবর্তনের মাধ্যমে ভূমি আইন অপেক্ষা করে খনন করা হচ্ছে পুকুর। ফলে কমে যাচ্ছে ফসলি জমির পরিমাণ।

এ বিষয়ে নিশ্চিন্তপুর গ্রামের সিদ্দিকুর রহমান ও বাবুল ইসলাম বলেন, বর্ষা মৌসুমে একরাম হাজীর ভাগ্নের নিজ জমির উপর দিয়ে পানি বের হয়ে চলে যায়। এই জমিতে পকুর খননের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এখানে পুকুর খনন করা হলে নিশ্চিন্তপুর গ্রামের ২০টি বাড়িতে বর্ষা মৌসুমে পানি উঠে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে। এছাড়া ৪০ বিঘা জমিতে লাগানো আম গাছের গোড়ায় পানি জমে মরে যাবে।

তারা আরো বলেন, শুধু নিশ্চিন্তপুর গ্রামে না, বাঘা পৌরসভার উত্তর মিলিকবাঘা, বলিহার, চাকিপাড়া, বাজুবাঘা ইউনিয়নের বার খাদিয়া, মনিগ্রাম ইউনিয়নের তুলসীপুর, পাকুড়িয়া, আড়ানী ও বাউসা ইউনিয়নে বিভিন্ন স্থানে পুকুর খনন মহোৎসব চলছে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা।

এ বিষয়ে বাঘা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোমিনুল হক বলেন, উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে চলছে পুকুর খননের বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে তিনি জানান।

উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোকাদ্দেস আলী বলেন, উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে চলছে পুকুর খনন। এই পুকুর খননের মাটি বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছে। এই মাটি পাকা রস্তায় পড়ে কাঁদাতে পরিণত হচ্ছে। এতে ঝুঁকি নিয়ে মানুষ চলাচল করছেন।এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পাপিয়া সুলতানা বলেন, কৃষি জমির শ্রেণি পরিবর্তনের মাধ্যমে ভূমি আইন অপেক্ষা করে খনন করা হচ্ছে পুকুর। ফলে কমে যাচ্ছে ফসলি জমির পরিমাণ। এ খবর পেয়ে পুকুর খননের বিষয়ে অভিযান পরিচালনা করে ইতিমধ্যেই পুকুর খনন করা ব্যক্তির জরিমানা ও ভেকুর ব্যাটারি জব্দ করা হয়েছে।

জি/আর