বাঘার মোবাইল সেলসমম্যান জহুরুল হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার মোবাইলের সেলসম্যান জহুরুল ইসলাম (২৩) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। তিনজনকে গ্রেফতারের মাধ্যমে এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, নাটোর লালপুর উপজেলার বালিতিতা ইসলামপুর গ্রামের আকমল হোসেনের ছেলে মাসুদ রানা (২৬), কাজিপাড়ার মৃত সানাউল্লাহর ছেলে আমিনুল ইসলাম ওরফে শাওন (৩০) এবং বাঘার জোতকাদিরপুর গ্রামের ফারুক হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসান ওরফে রকি (২৩)।

এর মধ্যে শুক্রবার (১৫ জানুয়ারি) বিকেলে দুই আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন। এতে তারা বলেছেন, তাদের কাছে স্মার্টফোন বিক্রির পাওনা টাকা চাওয়ার জন্যই পরিকল্পিতভাবে জহুরুলকে খুন করা হয়।

আজ শনিবার বিকেলে রাজশাহী জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) ইফতে খায়ের আলম এক বিজ্ঞপ্তিতে সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে তিনি জানান, রাজশাহীর বাঘায় নিহত সেলসমম্যান জহুরুল ইসলামের গ্রামের বাড়ি উপজেলার মনিগ্রাম বাজারে। বাবার নাম রফিকুল ইসলাম। তিনি বাঘার পানিকুমড়া বাজারের মেহেদী হাসান মনির টেলিকম ও ইলেক্ট্রনিক্সের দোকানে সেলসম্যান হিসেবে চাকরি করতেন।

সে প্রতিদিন সকাল অনুমান ৯টার দিকে মনি এর দোকান হতে বিভিন্ন কোম্পানীর মোবাইল ফোন নিয়ে বিভিন্ন বাজারে মোটর সাইকেল যোগে দোকানে দোকানে গিয়ে বিক্রি করতো এবং টাকা পয়সাসহ ফিরে আসতো। কিন্তু গত ৫ জানুয়ারি জহুরুল মোবাইল বিক্রি করতে গিয়ে আর ফিরে না আসায় তার পরিবারের লোকজন মোবাইলে তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় এবং বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করতে থাকে। ৬ জানুয়ারি সকাল ৭টার দিকে জহুরুলের মৃতদেহ বাঘার তেথুলিয়া শিকদারপাড়া (কামারপাড়া) গ্রামের একটি আম বাগানের মধ্যে পাওয়া যায়।

এ ঘটনায় জহুরুলের ভাই রুহুল আমিন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে বাঘা থানার মামলা দায়ের করে। হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই থানা পুলিশ বিভিন্নভাবে ক্লু-লেস মামলাটি তদন্ত করছিল। পরে রাজশাহী জেলা পুলিশের চারঘাট সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নূরে আলম একটি টিম নিয়ে গিয়ে শুক্রবার তিনজনকে নিজ নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেন।

জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেন যে, আসামি মাসুদ রানা ও শাওন নিহত জহুরুলের কাছ থেকে ব্যবহারের জন্য বাকিতে তিনটি স্মার্টফোনসেট কিনেছিলেন। জহুরুল তাদের টাকার জন্য চাপ দিতেন। কিন্তু মাসুদ ও শাওন টাকা জোগাড় করতে পারছিলেন না। তাই তারা জহুরুলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় টাকা দেওয়ার নাম করে কৌশলে একটি আমবাগানে ডাকা হয়। জহুরুল সেখানে গেলে শাওন ও মাসুদ তাকে কুপিয়ে হত্যা করেন। এরপর জহুরুলের কাছে থাকা ২৮টি মোবাইল স্মার্টফোনসেট ও নগদ ২৫ হাজার টাকা লুট করে পালিয়ে যান। এরপর মোবাইল সেটগুলো অন্য আসামি রকির কাছে রাখেন। পুলিশ সেগুলো উদ্ধার করেছে।

গ্রেফতারের পর আসামি শাওন ও মাসুদ জহুরুল হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছেন। এরপর গতকাল শুক্রবারই বিকেলে তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।  জবানবন্দি গ্রহণ শেষ হলে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানানো হয়।

স/অ