বাগাতিপাড়া প্রতিনিধি:
নাটোরের বাগাতিপাড়ায় আমেনা খাতুন (২৫) নামের এক গৃহবধুকে ঘরে আটকে রেখে পানির পাইপ দিয়ে পিটিয়ে গুরুত্বর আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশের সহায়তায় আহত অবস্থায় তাকে স্বামীর বাড়ি থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে পরিবারের লোকজন। উপজেলার চকতকিনগর গ্রামে গত শুক্রবার এ ঘটনা ঘটলেও রোববার রাতে নির্যাতনের শিকার গৃহবধু থানায় এ সংক্রান্ত মামলা করেছেন। আহত গৃহবধু আমেনা খাতুন উপজেলার বাটিকামারী গ্রামের খলিলুর রহমানের মেয়ে।
আমেনা খাতুন জানান, প্রায় ছয় বছর পূর্বে উপজেলার চকতকিনগর গ্রামের সেলিম ফকিরের ছেলে সাইদুর রহমানের সাথে পারিবারিকভাবে তার বিয়ে হয়। গরীব দিনমজুরের মেয়ে হওয়ায় সাইদুর তাকে পছন্দ করতো না। তাই বিয়ের পর থেকেই যৌতুক চেয়ে স্ত্রীকে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করতেন স্বামী সাইদুর। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে মাঝে মধ্যেই বাবার কাছ থেকে যৌতুক এনে সাইদুরকে দেওয়া হতো। কিন্তু এরপরও তার নির্যাতন থামেনি। শুক্রবার সকালে আবারও স্বামী সাইদুর বাবার বাড়ি থেকে যৌতুকের টাকা এনে দিতে বলায় আমেনা খাতুন তাতে অসম্মতি জানালে তাকে মারপিট শুরু করে। বাড়ির সবার সামনে মারধোরের পর ঘরের দরজা আটকে ঘরে থাকা পানির পাইপ দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে তাকে আহত করে তার স্বামী সাইদুর। তিনি চিৎকার চেঁচামেচি করলেও তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়নি।
এর আগেও তাকে টয়লেটে আটকে রেখে পেটানো হয়েছে বলে তিনি জানান। পরে তার বাবা খলিলুর রহমান খবর পেয়ে থানা পুলিশের সহায়তায় তার স্বামীর বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করে বাগাতিপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
এঘটনার পর রোববার রাতে গৃহবধু আমেনা খাতুন স্বামী সাইদুর রহমান ও শ্বাশুড়ি আকিয়া বেগমকে অভিযুক্ত করে বাগাতিপাড়া মডেল থানায় মামলা করেছেন।
আমেনার বাবা খলিলুর রহমান বলেন, ‘ঘটনার দিন পুলিশ নিয়ে না গেলে ওরা আমার মেয়েকে মেরে ফেলতো। পুলিশ আমার মেয়েকে উদ্ধার করে দিয়েছে। এর আগেও বেশ কয়েকবার এমন ঘটনা গ্রাম্য শালিশের মাধ্যমে আপোস-মিমাংসা করা হয়েছিল’।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাগাতিপাড়া মডেল থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম শেখ পিপিএম জানান, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে। অভিযুক্তরা বাড়ি-ঘর তালাবদ্ধ করে পলাতক রয়েছেন। তবে তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।
স/শা