বাগমারায় একই সঙ্গে দুই যুবকের পরকীয়া, হাতেনাতে ধরা পড়ে গৃহবধুর আত্মহত্যা

বাগমারা প্রতিনিধি:
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার ঝিকরা ইউনিয়নের চক সেউজবাড়ি গ্রামেএকই সঙ্গে দুই যুবকের সঙ্গে পরকীয়ার জেরে জেসমিন আক্তার (৩০) নামে এক গৃহবধু লজ্জায় বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। সোমবার দিবাগত রাতে ওই গৃহবধূ আত্মহত্যা করেন।  তিনি ওই গ্রামের কৃষক এবাদুর রহমানের স্ত্রী ও এক সন্তানের জননী বলে জানা গেছে।
পরে পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশিরা গৃহবধু জেসমিনকে উদ্ধার করে বাগমারা মেডিকেলে নিয়ে ভর্তি করলে মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে ওই গৃহবধু মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এই ঘটনায় বাগমারা থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেলে প্রেরণ করেছে।
পুলিশ ও এলাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত প্রায় দশ বছর পূর্বে সেউজবাড়ি গ্রামের আব্দুল জব্বারের মেয়ে জেসমিন আক্তারের সঙ্গে চক দেউজবাড়ি গ্রামের এবাদুর রহমানের বিয়ে হয়। তাদের ঘরে ছয় বছরের একটি মেয়ে সন্তানও রয়েছে।
এদিকে এবাদুরের আগোচরে তার স্ত্রী একই গ্রামের গুল মাহমুদের ছেলে জাকিরুল ইসলাম (২৪) ও বাহার আলীর ছেলে আব্দুস সালাম (৩৫) এর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। জাকিরুল ও সালাম উভয়ে কৌশলে এবাদুরের গতিবিধি লক্ষ্য করে দিনের পর দিন গৃহবধু জেসমিনের সঙ্গে পরকীয়ায় লিপ্ত হতে থাকে।
স্থানীয়রা জানান, কৃষক এবাদুর কৃষি কাজ ও টুকিটাকি কৃষি পন্যের ব্যবসা করার কারণে প্রায় তাকে বিভিন্ন হাটে বাজারে যেতে হয়।  সুযোগ মত তারা ওই বাড়িতে যাতায়াত করে থাকে।
সোমবার রাতে জাকিরুল ও সালামকে তার স্ত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পান এবাদুর। এসময় তাদের হাতে নাতে ধরে ফেলেন। এরপর এবাদুর তার প্রতিবেশিদের ডাকাডাকি করলে ঘটনাস্থলে ছুটে আসার সময় লম্পট জাকিরুল ও সালাম এবাদুরকে কিল ঘুষি মেরে আহত করে।
এ সময় প্রতিবেশিদের বাঁধা উপেক্ষা করে তারা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। বিষয়টি রাতেই গৃহবধুর পিতা সেউজবাড়ি গ্রামের আব্দুর জব্বারকে জানানো হয়। তিনি ঘটনাস্থলে আসার আগেই লজ্জায় ও অপমানে গৃহবধু জেসমিন সবার আগোচরে বিষপান করে। পরে তার অবস্থা বেগতিক হলে মঙ্গলবার (২৬মে) তাকে বাগমারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এই ঘটনায় স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি খাইরুল আলম ও স্থানীয় আওয়ামী লীগকর্মী আব্দুর রাজ্জাক জানান, জাকিরুল ও সালাম এলাকায় লম্পট ও বখাটে হিসাবে পরিচিতি। তারা রাস্তাঘাটে প্রায় যুবতী ও কিশোরীদের উত্ত্যক্ত করে। তাদের কারণে গ্রামের মেয়েরা রাস্তাঘাটে বের হতে ভয় পায়। গৃহবধু জেসমিনকেও তারা শারিরীক সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করা হয়েছে বলে তারা জানান।
যোগাযোগ করা হলে বাগমারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আতাউর রহমান জানান, গৃহবধুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেলে প্রেরণ করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, ওই গৃহবধুকে কেউ আত্মহত্যায় প্ররোচণা দিয়েছে বা নির্যাতন করেছে কিনা সে বিষয়ে তদন্ত চলছে।
স/আর