বাগমারার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনিয়মের সত্যতা মিলেছে


বাগমারা প্রতিনিধি:
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার দ্বীপপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মকলেছুর রহমান দুলালের বিরুদ্ধে গর্ভবতী ছাড়াই তালাক প্রাপ্ত এক নারীর নামে মাতৃকালীন ভাতার কার্ড বিতরণের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে তদন্তকারী কর্মকর্তা। ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য গত রোববার (৪ এপ্রিল) ওই সংক্রান্ত একটি তদন্ত প্রতিবেদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর প্রেরন করেছেন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা খন্দকার মাক্বামাম মাহমুদা।

জানা যায়, গত ২৪ মার্চ দ্বীপপুর ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত আসনের সদস্য হাসিনা বানু বাদী হয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মাতৃকালীন ভাতা বিতরণসহ ইউনিয়নের বিভিন্ন কাজে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও সেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগের বিষয়টি ইউএনও’র দপ্তর থেকে তদন্তের জন্য উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মাক্বামাম মাহমুদা তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়ে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান মোকলেছুর রহমান দুলালের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।

তদন্ত প্রতিবেদনে সূত্রে জানা যায়, দ্বীপপুরের ইউপি চেয়ারম্যান মোকলেছুর রহমান দুলাল জালিয়াতির মাধ্যমে তার ইউপি’র নানসোর গ্রামের এছের আলীর মেয়ে (তালাকপ্রাপ্ত) সুমি আক্তারের নামে মাতৃত্বকালীন ভাতা ভোগির তালিকার নাম অন্তর্ভুক্ত করেন । ওই নারীর নামে ভাতার টাকা উত্তোলনের জন্য জনতা ব্যাংক ভবানীগঞ্জ শাখায় একটি সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর ০১০০২২১৪১১১৬৮৮ খোলা হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে একই ইউপি’র মহিলা সদস্যা হাসিনা বানু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগ দাখিলের পর থেকেই ইউপি চেয়ারম্যান মোকলেছুর রহমান দুলাল হাসিনা বানুকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানীসহ নানা ভাবে নাজেহাল শুরু করেন। এমনকি হাসিনাকে তিনি ইউনিয়নের সকল কর্মকান্ড থেকে বিরত রেখে এক পর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তাকে লাঞ্চিত করে বের করে দেন। এভাবে তিনি হাসিনা বানুকে কোনঠাসা করে একের পর এক অনিয়ম দূর্নীতি চালাতে থাকেন।

মোকলেছুর রহমান দুলাল চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির সাথেও জড়িয়ে পড়েন। ওই সকল ঘটনায় ইউপি সদস্যা হাসিনা বানু প্রতিবাদ করলে ইউনিয়ন পরিষদের সকল সুবিধা থেকে তাকে বঞ্চিত করে। তার এমন কর্মকান্ডে ফুঁসে উঠে ইউপি সদস্যা হাসিনা বানু সহ কয়েকজন ইউপি সদস্য। তারা একের পর এক চেয়ারম্যানের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সরকারের বিভিন্ন মহলে লিখিত অভিযোগও দাখিল করেন। কিন্তু এসব অভিযোগের সত্যতা থাকলেও মোকলেছুর রহমান দুলাল অদৃশ্য কারনে পার পেয়ে যায়।

যোগাযোগ করা হলে চেয়ারম্যান মোকলেছুর রহমান দুলাল তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ উদ্দেশ্যমূলক দাবী করে বলেন, ওই কার্ডটির বিপরীতে কোন ভাতা উত্তোলন করা হয়নি। বিষয়টি আমি জানতে পেয়ে কার্ডটি মহিলা বিষয়ক দপ্তরে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

যোগাযোগ করা হলে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা খন্দকার মাক্বামাম মাহমুদা জানান, কার্ডটি কি ভাবে হয়েছে তা আমার জানা নেই। তবে ওই ঘটনায় আনীত অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে তার সত্যতা পাওয়ায় একটি প্রতিবেদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরিফ আহম্মেদ প্রতিবেদন পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন , এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

স/রি