শুক্রবার , ৮ এপ্রিল ২০২২ | ২৬শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

বাংলাদেশের সঙ্গে নিরাপত্তা সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র

Paris
এপ্রিল ৮, ২০২২ ১১:৫৮ পূর্বাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্কঃ

বাংলাদেশের সঙ্গে নিরাপত্তা সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। গত বুধবার রাতে ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র অষ্টম নিরাপত্তা সংলাপ শেষে বাংলাদেশ দূতাবাস এ তথ্য জানিয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশের সঙ্গে স্বাক্ষরের জন্য যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবিত চুক্তি ‘অ্যাকিউজিশন অ্যান্ড ক্রস সার্ভিসেস অ্যাগ্রিমেন্ট’ (আকসা) এবং ‘জেনারেল সিকিউরিটি অব মিলিটারি ইনফরমেশন অ্যাগ্রিমেন্ট’ (জিসোমিয়া) নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

আকসা চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে খাদ্য, জ্বালানি, পরিবহনসহ অন্যান্য রসদ বিনিময়ের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

অন্যদিকে জিসোমিয়া চুক্তিতে নিরাপত্তা সম্পর্কিত স্পর্শকাতর তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। এ চুক্তি দুটিকে যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা খাতে সহযোগিতার কাঠামো চুক্তি হিসেবে বিবেচনা করে। চুক্তি দুটি স্বাক্ষরের জন্য যুক্তরাষ্ট্র বেশ কয়েক বছর ধরেই আহ্বান জানিয়ে আসছে।

এর আগে দুই দেশের মধ্যে সাতবার নিরাপত্তা সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে মহাপরিচালক পর্যায়ে। এবারই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহে সচিব পর্যায়ে নিরাপত্তা সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে নেতৃত্ব দেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তাবিষয়ক আন্ডারসেক্রেটারি বনি ডেনিস জেনকিনস।

সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, জননিরাপত্তা বিভাগ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা সংলাপে অংশ নেন। পররাষ্ট্রসচিব মোমেন ও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার ওয়াকার-উজ-জামান মার্কিন আন্ডারসেক্রেটারির সঙ্গে আলাদা বৈঠক করেন।

অংশীদারি সংলাপের পর পররাষ্ট্রসচিব মোমেন এক টুইট বার্তায় লিখেছেন, ‘নিরাপত্তা সহযোগিতা, বৈশ্বিক শান্তি রক্ষা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতা, আরো সমৃদ্ধ ও নিরাপদ অঞ্চলের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক ইন্দো-প্যাসিফিক সহযোগিতা, সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধ এবং আরো অনেক বিষয়ে বিস্তৃত ও ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। ’

সংলাপে উদ্বোধনী বক্তব্যে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অংশীদারিকে বাংলাদেশ অত্যন্ত মূল্য দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্কের প্রশংসা করেছে। দিনব্যাপী সংলাপে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রম, বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা সহযোগিতাসহ সামরিক প্রশিক্ষণ, সমুদ্র নিরাপত্তা, প্রস্তাবিত প্রতিরক্ষা চুক্তি, প্রতিরক্ষা ক্রয় ও সক্ষমতা উন্নয়ন ছাড়াও রোহিঙ্গা সংকট, ইন্দো-প্যাসিফিক এবং সন্ত্রাস দমন ও বেসামরিক নিরাপত্তা সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের সাফল্য ও নেতৃত্বের প্রশংসা করেছে। তারা বাংলাদেশকে এর সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়ন ও প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়নে সহযোগিতা করতে আগ্রহী।

মোমেন বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেছে এবং ধন্যবাদ জানিয়েছে। বাংলাদেশ রোহিঙ্গা নিপীড়নকে ‘জেনোসাইড’ হিসেবে ঘোষণা করায় যুক্তরাষ্ট্রের সংকল্পের প্রশংসা করেছে। এ বিষয়ে আরো উদ্যোগ নিতে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রকে আহ্বান জানিয়েছে।

বাংলাদেশ দূতাবাস জানায়, সংলাপে ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে অন্তর্ভুক্তিমূলক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নকে সমর্থন করার কথা জানিয়েছে।

র‌্যাব এবং এর সাবেক ও বর্তমান কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে সংলাপে বাংলাদেশ গভীর উদ্বেগ জানায়। যুক্তরাষ্ট্রকে ওই নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিবেচনা করতে বাংলাদেশ আহ্বান জানিয়েছে। র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞাকে অযৌক্তিক হিসেবে তুলে ধরে বাংলাদেশ তার যুক্তি ব্যাখ্যা করেছে সংলাপে। বলেছে—সন্ত্রাস, সহিংস চরমপন্থা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের লড়াইয়ে র‌্যাব অগ্রণী ভূমিকা রাখছে। বাংলাদেশ এটাও জানিয়েছে, র‌্যাব সদস্যরা দায়মুক্তি পান না। সংলাপে উভয় পক্ষ এ বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যেতে সম্মত হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের ভূমিকা আমলে নিয়েছে। উভয় পক্ষ সন্ত্রাস ও আন্তর্জাতিক অপরাধ দমনে শক্তিশালী সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে সম্মত হয়েছে। আইন প্রয়োগ ও ‘প্রসিকিউটরিয়াল’ সক্ষমতা গড়ে তোলার পাশাপাশি সহিংস চরমপন্থা মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে অব্যাহত সহযোগিতার বিষয়েও আশ্বাস দিয়েছে।

নিরাপত্তা সংলাপে ঢাকা-নিউ ইয়র্ক সরাসরি ফ্লাইট দ্রুত চালু করার লক্ষ্যে ফ্লাইট নিরাপত্তায় সহযোগিতার বিষয়েও আলোচনা হয়। বাংলাদেশ কভিড-১৯ টিকার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার প্রশংসা করেছে।

সংলাপে দুই পক্ষ নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা ও বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা অব্যাহত রাখতে সম্মত হয়েছে। পরবর্তী সময়ে নিরাপত্তা সংলাপ আগামী বছর ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ

সর্বশেষ - জাতীয়